• Skip to primary navigation
  • Skip to main content
  • Skip to primary sidebar

রূপকথন

Healthier Lifestyljhhe Choices

  • Facebook
  • Home
  • Shop
  • Blog
    • মেকআপ
      • ব্রাইডাল মেকআপ
      • সেলিব্রিটি মেকআপ
      • চোখের সাজসজ্জা
      • মুখের রূপসজ্জা
      • লিপ মেকআপ
      • মেকআপের ধারণা
      • মেহেদী ডিজাইন
      • নখের ডিজাইন
    • চুলের যত্ন
    • ত্বকের যত্ন
    • চুল স্টাইল
    • স্বাস্থ্য ও সুখ
      • ফিটনেস
      • স্বাস্থ্যকর খাবার
      • ওজন বৃদ্ধি
      • ওজন কমানো
      • যোগ ব্যায়াম
      • ডায়েট টিপস
      • আয়ুর্বেদ
  • Contact Us

Skin Care Ideas

রমজানে যেভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন

by লামিয়া তানজিন মাহমুদ

খোশ আমদেদ মাহে রমজান। যে মাসটির তাৎপর্য রয়েছে সারা জাহানের সকল মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে। ইবাদাত,  পবিত্রতা অর্জন এবং তা রক্ষার যে তাগিদ এ মাসে দেখা যায় তা অন্যান্য মাসে কিছুটা হলেও বিরল দৃশ্যে রূপ নেয়, অর্থাৎ দেখা যায় না। ঠিক তেমনি, অন্যান্য মাসে যে অনভ্যস্ততায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে মানুষ, এ মাসে তাও হয়ে ওঠে না। তার উপর শারীরিক কিছু ধকল তো আছেই।

সব মিলিয়েই কিছু নিয়ম যোগ হওয়া, আর কিছু অভ্যেস সুযোগের অভাবে বাদ হয়ে যাওয়া এই মাসটায় কিছুটা আলসেমি, সময়ের অভাব, কাহিল কিংবা দূর্বলতার কারণেই শরীর সহ ত্বকটা কিছুটা হলেও অনাদরেই পড়ে যায়। আজকের লেখন এর বিষয় এ নিয়েই।

প্রসঙ্গ নিয়ে স্বল্প আলাপনঃ

রমজান মাস। বছরের পবিত্রতম এই মাসটিতে খাওয়ার পরিমাণ এবং সময়ে থাকে বড্ড হেরফের। প্রাত্যহিক যে নিয়মে আমাদের দেহ ঘড়ি চলে, সেই নিয়মের দুনিয়ায় চলে আসে আকাশ-পাতাল পরিবর্তন। ভোর রাতের সাহরি আর সন্ধার সময়ে ইফতার। মাঝের এই দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকাটা অতটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও পানি পান না করে থাকাটা কিন্তু আসলেই সমস্যার একটি বিষয়।

এটা আপনারা জানেন, আমরা যতই খাই, আসল কাজ কিন্তু করে পানি। আর রমজান মাসে এই পানির ঘাটতিই দেখা দেয় বেশি। যার ফলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, একই সাথে ত্বকের নানান সমস্যাও দেখা দেয়। আর এ কারণেই রমজান মাসে শরীর সুস্থ রাখার সাথে সাথে নিজের ত্বকের দিকেও একটু মনযোগী হতে হবে বইকি।

প্রয়োজন কিছু যত্নের। যে যত্ন ত্বকের নিস্তেজ এবং শুষ্কতা দূর করে দিয়ে স্বাস্থ্যকর, কোমল, উজ্জ্বল করে তুলবে। আর যেহেতু এবারের রমজান মাসটা ভরা চৈত্রে পালন করতে হচ্ছে এবং হবে, তাই দরকার সতর্কতার সাথে সচেতনতা। কারণ আপনার সুস্থতা দরকার। ইবাদাতে মনযোগী হতে গেলেও সুস্থতা আবশ্যক। হোক তা শরীরের কিংবা ত্বকের।

রমজানে করণীয়ঃ

কিছু অভ্যেসের আমদানি করতে হবে। অভ্যেসের আমদানির কারণ আপনার সুস্থতা, আপনার শরীর ও ত্বকের সুস্থতা। এ কারণে একটু জানয়ে দতে চাই চলমান এই রমজানে কী করবেন আর কী করবেন না। প্রথমেই জানিয়ে দেই, কী কী করবেন না।

এই রোজায় যা যা মোটেও করবেন না

মেইক আপ!

ইবাদাতের মাস। অযু সমেত পাক পবিত্রতা বজায় রাখার পুরো উলটো কাজ হচ্ছে মেইক আপ। বুঝিয়ে বলছি-

স্বাভাবিকভাবে ভাবুন। দীর্ঘসময় পানিহীন থাকার দরুন আপনার ত্বকে এটা স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে যে, পানির ঘাটতি আপনার শরীরে বিদ্যমান। সেখানে মেইকআপের মতো কৃত্রিম কিছু প্রসাধনীর ব্যবহার আপনার ত্বকের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য মোটেও প্রযোজ্য নয়। শীতকালে রূক্ষ হয়ে যাওয়া ত্বকের উপর পাওডার মাখালে যেমন ভেসে ভেসে থাকে, এই রমজানে মেইকআপও তেমনি ভেসে ভেসে থাকে। যে কারণে কোন ধরণের শুষ্ক প্রসাধনী ব্যবহারে যাবেন না। এগুলো ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে।

ভাজা পোড়া খাবার!

চৈত্রের রোদের বৈশিষ্ট্য কী জানেন? এর কড়া তেজ! মানে প্রখর রোদ। এই রোদে মশলাদার, তেলে ভাজা খাবার খেতে ভালো লাগে? না-কি লাগার কথা বলুন তো? আপনি যতটা তেলে ভাজা খাবার কিংবা মশলাদার খাবার খাবেন, অতটা হজম হতে প্রচুর পানির দরকার হয়। এতে চাপ পড়ে কিডনি আর পাকস্থলীর উপর কারণ এই পানি আর খাবার এর প্রক্রিয়া এরাই করে থাকে।

খেয়াল করে দেখবেন, গরমকালে উচ্চ প্রোটিন, তেলে ভাজা, মশলাদার খাবার খেয়ে আপনার মোটেও স্বস্তি হবে না। বরং এক ধরণের অজানা অস্বস্তিতে দিনভর ভুগতে থাকবেন একই সাথে ক্লান্তিতে ছেয়ে থাকবে পুরো শরীর। এছাড়াও তেলে ভাজা খাবারগুলো কিন্তু ত্বকের নানারকম সমস্যার কারণ।

আদ্রতা!

রমজান মাসে অতিরিক্ত রোদ কিংবা ঠাণ্ডা দুটোই আপনার ত্বকের জন্য ভিষণ রকমের ক্ষতিকর। অতিরিক্ত রোদে অনেকের হিটস্ট্রোক হওয়ার ঘটনা বিরল নয়। আবার অনেকক্ষণ এসির মধ্যে থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রাও অসহ্যকর হয়ে উঠতে পারে।

ঘুমত্যাগ!

অনেকের বদভ্যাস আছে রাত জাগার। রাতটা জেগে কাটিয়ে সাহরিতে কোনমতে খেয়ে, কোন রকমের একটু ঘুম দিয়েই সকালে হয় ক্লাশে ছোটা নয় কর্মস্থলে ছোটা! ফলশ্রুতিতে চোখের তলে কালি, চোখ ফোলা, চেহারায় তেলতেলে বিধ্বস্ত ভাব লক্ষ্যনীয়।

এই রোজায় যা যা করবেন!

কী কী করতে পারবেন না, সেই তালিকা তো জানা হলো। এবার একটু জেনে নেওয়া দরকার এই দাবদাহে রোজা রেখে কী কী করতে পারবেন এবং করবেন। তো চলুন জেনে নেই –

পানি!

পানির বিকল্পই নেই, বিশ্বাস করুন। সারাদিন পানি ছাড়া, ভাবা যায়? সেখানে ইফতার বলুন কিংবা সাহরি, পানি এবং পানি জাতীয় খাবারের ব্যবস্থা রাখাই হবে সবচেয়ে ভালো উপায়। চেষ্টা করবেন ইফতারের পর থেকে সাহরি পর্যন্ত ২.৫-৩ লিটার পানি খেতে।

ডাবের পানি, লেবুর শরবৎ কিংবা আপনার সাধ্য অনুযায়ী যে-কোন ফলের জুস বানিয়ে নিতে পারেন। খেতে পারেন ফল, সালাদ, সবজি, শাক। এগুলো শরীরে পানি ধরে রাখে। শরীরে পানির প্রবাহ ঠিক থাকলে ত্বক সুস্থ থাকে আর এতে করে ত্বকের নেতিয়ে পড়াটা কমে আসবে।

খাদ্যতালিকা!

রমজান মাস। ইবাদাতের এই মাসটায় ইবাদাত নিয়ে মাথা ঘামানোটাই বেশি জরুরি, তাই না পাঠক? কিন্তু আমাদের অনেকেই এই সময়টায় ভুড়িভোজে মেতে ওঠেন। এই বিষয় থেকে একটু সরে আসা প্রয়োজন আছে। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, আপনি যত ভারি খাবার খাবেন আপনার শরীরের তত পরিশ্রম হবে সেটা হজম করার জন্য।

এজন্য সহজপাচ্য কিছু খাবার বরাদ্দ রাখুন সাহরি আর ইফতারের জন্য। আঁশযুক্ত খাবার রাখুন তালিকায়। এ ধরণের খাবার শরীর, ত্বক দুইএর জন্য বিষম উপকারি। অন্ত্র তো ভালো থাকেই, সেই সাথে ত্বকেও দারুণ পুষ্টি জোগায়। ফল (হোক তা দেশি বা আপনার সাধ্য অনুযায়ী), বাদাম, খেজুর, সবুজ ও রঙিন শাক-সবজি রাখুন তালিকায়। এগুলো আপনার শরীরকে ঠিক রাখতে একদম যথেষ্ট। খেতে পারেন সেদ্ধ করা খাবার। বিশেষ করে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই যুক্ত সবজি।

আরেকটা তথ্য দেই, দুধ খাওয়ার অভ্যেস থাকলে সাহরিতে এবং ইফতারে দুধ খেতে পারেন। দুধ খাওয়াতে সমস্যা মনে হলে দই খেতে পারেন। এটা খুবই উপকারি। এই গরমে দই আপনার জন্য শান্তির পাশাপাশি স্বস্তিদায়ক একটা খাবারই হবে বটে! প্রোটিন তো পাবেন, একই সাথে সারাদিনের কর্মশক্তিও পাবেন।

পরিধেয় বস্ত্র হোক সুতির!

গরমের তেজ দেখেছেন? গোসল করে বের হলেও এই তেজে শরীর আবার ঘেমে নেয়ে ওঠে। কি তাই তো? এই অতিরিক্ত গরম, সাথে তীব্র এবং অসহনীয় জ্যাম, তার উপর সিয়াম পালন করে দীর্ঘ সময় থাকাটা ধকলের বিষয়ই বটে। এই গরম, এবং এর ফলে হওয়া অতিরিক্ত ঘাম দুটোই কিন্তু শরীর এবং ত্বকের জন্য বেশ খারাপ।

আবার শুধু ঘাম বের হয়েই ক্ষান্ত নয়, ঘামাচি সমেত কিছু ফোঁড়া, চর্মরোগও দেখা দেয় অনেকের। বিশেষ করে যারা কর্মজীবী আছেন। এই গরমে যাদের বের হতে হচ্ছে বাইরে। তারা একটু সচেতন থাকবেন। অবশ্য এই রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খোলা আছে। তাই কর্মজীবী সমেত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মূলত, বাইরে যারা বের হচ্ছেন তাদের সবার ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো খাটে। আর তাই, সমাধান আবশ্যক। সমাধান আপনার পরিধেয় বস্ত্রে। সুতি ব্যবহার করুন। শরীর সতেজ থাকবে।

ত্বক কথন!

দীর্ঘসময়ের সিয়াম পালনে শরীরের যে অংশটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দৃষ্টিগোচর হয়, তার নাম ত্বক। আমরা হয়তো হাল ছেড়েই দেই, একটা মাসের ব্যাপার বলে। কিন্তু যখন আপনি ঠিক করবেন নিজেকে যত্নে রাখবেন তখন এই যত্নের ব্যপ্তিকাল সারা বছরের জন্যই হওয়া চাই। তাই না? একটু প্রয়োজন আছে যত্নের। আর এ জন্যই ঘরোয়া কিছু বিষয় জানিয়ে দিচ্ছি-

ময়েশ্চারাইজার!

ত্বক কী পরিমাণে শুষ্ক হয়ে থাকে, এ তো এতদিনের সিয়াম পালনে আপনারা ইতোমধ্যে জেনে গিয়েছেন। মেইকআপও বেমানান এই শুষ্ক ত্বকে। তবে করণীয় কী বলুন তো? ময়েশ্চারাইজার! জি, এটাই একমাত্র জিনিস যা আপনার ত্বককে সজীব রাখবে। ত্বক ভালো করে ভিজিয়ে নিয়ে তবেই ময়েশ্চারাইজার মাখাবেন।

অথবা গোসলের পর মাখাতে পারেন। কিংবা বাইরে বের হওয়ার আগে মাখিয়ে নিতে পারেন। আবার ফিরে এসে ভালো করে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার মাখয়ে রাখতে পারেন। ত্বক উজ্জ্বল তো থাকবেই, সেই সাথে শুষ্কতাও অতটা কাবু করতে পারবে না।

এখন একটা ব্যাপার, কোন ময়েশ্চারাইজার মাখাবেন! বাজারে তো অভাব নেই। অলিভ ওয়েল মাখাতে পারেন। এটা খুবই ভালো ময়েশ্চারাইজার। ধরুন, অলিভ ওয়েল নেই আপনার। কী করবেন? নারিকেল এর খাটি তেল মাখাবেন। সবচেয়ে উৎকর্ষ ময়েশ্চারাইজার কিন্তু এই নারিকেল তেলই।

ঘুমের বিকল্প নেই!

রমজান মাস মানেই ঘুমের সেই রকমের হেরফের। এই রাত জাগা, দিনে ছোটা, এই করে ঘুমের যে দফারফা হচ্ছে তা কিন্তু আমলে নিচ্ছে না কেউই। হয়তো কেউ নিচ্ছে কিন্তু সংখ্যাটা খুব কম, নগন্য। মোট কথা, ঘুমাবেন। রাতেই ঘুমাবেন। দিনের ঘুমের চাইতে রাতের ঘুমটা ঢের ভালো।

কারণ আমাদের শরীরের যে ক্ষয়ক্ষতিগুলো হয়, সেগুলো রাতেই পূরণ হয়। আর রাত ৯ টার পর থেকে যে ঘুম হয়, সে ঘুমের এক ঘন্টা মাঝরাত কিংবা দিনের ৩ ঘন্টা ঘুমের সমান। সুতরাং বুঝতেই পারছেন! ১০ টার মধ্যে যদি আপনি ঘুমিয়ে যেতে পারেন, ৩ টার মধ্যে এমনিতেই উঠতে পারবেন। ঝরঝরে একটা অনুভূতি নিয়ে তাহাজ্জুদ পড়বেন কিংবা সাহরি যখন খাবেন, তখন যেই প্রশান্তি অনুভব করবেন সেটা কিন্তু রাতে না ঘুমিয়ে একদমই পাবেন না। সুতরাং ঘুমাতে হবে। ৮ ঘন্টা কমপক্ষে।

গোসল করুন!

শীতকালে ঠাণ্ডার ভয়ে গোসল বাদ দেওয়া জাতি আমরা, তাই না? আচ্ছা গরমে ক’বার গোসল করি? কমপক্ষে দুইবার গোসল করুন। সকালে, রাতে। বাইরে যারা বের হোন, তারা বের হওয়ার আগে গোসল করে বের হবেন।

বাসায় ফিরে এসে আবার গোসল করবেন। এতে করে এই দাবদাহে রোজার কারণে ক্লান্তিটা আপনাকে অতটা স্পর্শ করবে না। এবং ত্বকটাও পরিষ্কার থাকবে। আর একটা বিষয় মনে করিয়ে দেই, গোসল করে ময়েশ্চারাইজার মাখাতে ভুলবেন না।

যত্ন নিন ঠোঁটের!

শীতকালে ঠোঁট শুকিয়ে যায়, এ তো জানা কথা। লিপবাম, লিপস্টিক, কতকিছুই তো মাখিয়ে রাখি। আচ্ছা এই রোজায় ঠোঁট শুকালে কী করেন? রোজাভঙ্গের ভয়ে অনেকেই কিছুই মাখাতে চান না ঠোঁটে। ফলে কী হয় জানেন? ঠোঁট ফেটে চৌচির!

অনেকের তো রক্তও বের হয় ঠোঁট দিয়ে। ভয়ংকর বিষয় না এটা? একটু ভিজিয়ে নিয়ে আলতো করে তেল কিংবা ভেসলিন মাখিয়ে রাখলে ক্ষতি নেই। এটা তো আর খাওয়ার জিনিস নয় যে আপনি খেয়ে নিবেন, তাই না?

আরোও কিছু টিপস!

ত্বক সতেজ রাখার জন্যই তো আয়োজন আমাদের। আর এই সতেজতা আসবে যত্নে। যত্ন নিতে প্রয়োজন প্রাকৃতিক কিছু বিষয়ের যা টিপস আকারে দিচ্ছি। ঘরোয়া উপকরণও বলতে পারেন। একটু দেখে নিন-

★ এই ঋতুতে পাকা পেপে কিন্তু দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। ধরুন ইফতার কিংবা সাহরির জন্যই আপনি কাটছেন। একটুখানি নিয়ে একটু পিষে নিন। মুখে, গলায়, হাতে পায়ে মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। পাকা পেপে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

আপনি চাইলে আরও কিছু উপকরণ বাড়াতে পারেন। পাকা পেপের সাথে কিছুটা লেবুর রস আর চালের গুড়া মিশিয়ে একটা মিশ্রণ বানাতে পারেন। এটা মুখে মাখিয়ে ২০ মিনিট রেখে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। ত্বক উজ্জ্বল হবে। নেতিয়ে পড়া ত্বকে জৌলুশ দেখতে পাবেন।

★ ত্বকে মাখাতে পারেন দুধ। অথবা দুধ আর গোলাপজলের মিশ্রণ। ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করে এই মিশ্রণটি।

★ আপনার কাছে চন্দন কাঠের গুড়া থাকলে এই মিশ্রণটি প্রয়োগ করতে পারেন।

কিছুটা চন্দন গুড়া, হলুদ গুড়া আর গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে মাখাবেন। এটা ব্রনের জন্য খুব উপকারি। ব্রনের দাগও দূর করে এই মিশ্রণ। নিয়মিত না হলেও সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করতেই পারেন।

★ শুষ্ক ত্বক যাদের, তারা টমেটো, পাকা কলা, শশা আলাদা আলাদা ভাবে অথবা ৩ টা একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে মাখাবেন। ১৫-২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন।

★ বাসায় পেয়াজু, বেগুনি কিংবা আলুর চপ তো হয়? বা না হলেও, মশুরের ডাল আর বেসন তো থাকার কথা, তাই না? মিহি করে ডাল বেটে মুকজে মাখিয়ে রাখবেন। ত্বকের ময়লা দূর করে ডাল ও বেসন। শুষ্কভাবও দূর করে দিয়ে কোমল আর সজিব করে তোলে।

★ এই পয়েন্টটি তাদের জন্য যাদের রোজ বের হতে হচ্ছে এই গরমে। রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বকের জন্য একটা অসাধারণ তথ্য দিচ্ছি। বেকিং পাওডার কিংবা বেকিং সোডার সাথে আপনারা পরিচিত আছন। কিছুটা পানির সাথে এই পাওডার গুলিয়ে নিন। একটা পরিষ্কার কাপড় ঐ পানিতে ভিজিয়ে নিন। এখন এই কাপড় দিয়ে রোদে পোড়া জায়গাগুলো আলতো করে মুছে নিন। কয়েকদিন বাদে নিজেই পার্থক্য লক্ষ্য করুন।

★ রমজানে চোখের নিভে গর্ত হয়ে যাওয়া সহ চোখের নিচে কালি জমাটা খুবই সাধারণ একটা বিষয়। আলু এবং শসার রস মাখাবেন কালি পড়ে যাওয়া জায়গায়।

★ ত্বকের পাশাপাশি চুলও কিন্তু রুক্ষ হয়ে যায়, খেয়াল করেছেন? সপ্তাহে অন্তত ২ দিন তেল লাগান। রুক্ষতা কমবে।

★ এই গরমে অনেকের চুল কিন্তু খুব ঘামে। একই সাথে ঘেমে যায় মাথার ত্বক। এক্ষেত্রে লেবুর খোসা পেস্ট করে মাথায় মাখাবেন, চাইলে কিছুটা আদা দিতে পারেন। কিংবা লেবুর রস মাথায় মাখাতে পারেন। এই মিশ্রনটিকে মাথায়  ১ ঘন্টা  রেখে ধুয়ে নিবেন শ্যাম্পু দিয়ে। এটা চুল এবং মাথার মধ্যে থাকা ফাংগাল ইনফেকশন দূর করে।

★ অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে যাওয়া চুলে পাকা কলা মাখাতে পারেন। এটা চুলের সতেজতা ফিরিয়ে আনে।

একটা বিষয় খেয়াল করেছেন? আপনি মুখে বা চুলে যাই মাখুন না কেন, তা ধুতে নিতে ঠাণ্ডা পানির কথা বলা হয়েছে। এই ঠাণ্ডা পানি মোটেও বরফ মেশানো পানি নয়। বরং ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকা স্বাভাবিক পানি। অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা কোন পানিই কিন্তু আমাদের ত্বক কিংবা চুলের জন্য ভালো নয়। চলমান রমজান ভালো কাটুক সবার, সুস্থতায় আর সজীবতা থাকুক বিশ্ব।

 

 

 

 

 

 

Filed Under: Face Care Tips, Skin Care Ideas

ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের বলিরেখা দূর করুন

by লামিয়া তানজিন মাহমুদ

ক্ষুদ্র মানব শিশু! জগতের সবচেয়ে রহস্যময় অথচ অপূর্ব এক সৃষ্টি। গড়নে নিখুঁত। সময়ের পরিক্রমায় বয়স বাড়তে বাড়তে যখন তারুণ্য পেরিয়ে একটু আগায় তখনই যেন কিছু ‘না শুনতে চাওয়া’ শব্দেরা চারপাশ থেকে বিদ্ধ হতে থাকে কানে। অনেকটা জানান দেয় ঘরে থাকা আয়নাটাও। আর বয়স তো জানান দেয়ই! পাল্টাচ্ছে সময়, বাড়ছে বয়স! পরিবর্তন হচ্ছে শরীরে, হচ্ছে মনে। হবেও। এই-ই নিয়ম। নিয়মের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে সব পাল্টানোর দলে নাম লিখিয়েছে মানব দেহ, ত্বক, সবকিছুই। জানিয়ে দিচ্ছে, আর ছোট্টটি নেই আপনি। বড়ো হয়েছেন, বুড়িয়ে যাচ্ছেন!

বলছি হালের চিন্তার বিষয়- ‘মুখে বয়সের ছাপ বা ত্বকের বলিরেখা‘ নিয়ে। চিন্তার বিষয়ই বটে! বয়স হলেও বয়সটা লুকোতে স্বচ্ছন্দ আমরা সবাই। কে চাইবে ত্বকে মুখে বয়স বুঝাতে? কেউই না। তাই বলে বয়স বাড়লেই যে বলিরেখা কিংবা মুখে বয়সের ছাপ পড়বে, বিষয়টি কিন্তু তা না। অনেকের খুব বয়সেও অত ছাপ পড়ে না আবার অনেককেই দেখবেন কম বয়সে মুখে বয়সের ছাপ পড়েছে।

এর কারণ কী হতে পারে বলুন তো?

মুখে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা! কী এই জিনিস?

বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে কমে যায় কোষের কার্যক্ষমতা। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে যাকে বলা হয় জৈবিক ক্ষমতা হ্রাস। যাদের প্রভাব শরীরে সহজেই দৃশ্যমান হয়। বিশেষ করে মুখে। কি তাইতো? বয়স যত বাড়তে থাকে, শরীরে থাকা এনজাইম কাজ করা তত কমাতে থাকে। এক পর্যায়ে গিয়ে কাজ করা বন্ধই করে দেয়। তখন ত্বকে কিছু ছাপ পড়ে, ভাজ পড়ে, যেগুলোকে বয়সের ছাপ কিংবা বলিরেখা বলা হয়।

বলিরেখা পড়ার জায়গাগুলোও অদ্ভুত। মুখে, চোখের নিচে, ঠোঁটের চারপাশে বয়সের ছাপ গুলোকেই বলিরেখা বলে। জায়গাগুলো অদ্ভুতই বটে! বয়স বুঝিয়েই ছাড়ছে। বলিরেখা নিয়ে সবচেয়ে প্রচলিত ভুল ধারণাও কিন্তু এখানে। অবেকেই ভাবেন, বলিরেখা মানেই বয়স বৃদ্ধি। অর্থাৎ যার যত বয়স, তার মুখেই বলিরেখা থাকবে। যদি এ কথায় কেউ ভুল খুঁজে না পান তাহলে পাশ্চাত্য দেশের নায়ক নায়িকাদের বয়স ধরে রাখার সূত্রটা কী হতে পারে বলে আপনি মনে করছেন? কিংবা বাংলাদেশের চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা অথবা জয়া আহসান নিয়েই বা কেমন ভাবনা আপনাদের? বয়স কত হতে পারে তাঁদের? বলিরেখা পান তাঁদের মুখে? না পেলে কেন?

প্রশ্নোত্তর পর্ব বাদ রেখে চলুন খোলাসা করি বিষয়টা। বলিরেখার জন্য বয়স আসলেই কিছু না। বলিরেখার কারণ হিসেবে তালিকার শীর্ষে আছে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্নি। বয়স কিছুই না। বরং বয়স ধীরে ধীরে বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। বয়স কম থাকাকালীন শরীরে কোষ বিভাজন এবং কোলাজেন তৈরি দুটির হার বেশি থাকে। যাতে ত্বক টানটান থাকে আর চাকচিক্য ভাব বজায় থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে কোষ বিভাজন এবং কোলাজেন তৈরির হার কমতে থাকে ফলে ত্বক ঢিলে হতে থাকে। সেই সাথে কমে যায় ত্বকের চাকচিক্য।

সুতরাং বলিরেখার সাথে বয়স বৃদ্ধির যে অমন কোন সম্পর্ক নেই, সে ব্যাপারে ধারণা কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে না পাঠক? বয়সের ছাপ কিন্তু যে-কোন বয়সেই পড়তে পারে। কারও কিশোর বয়সেই বয়সের ছাপ পড়ে, অনেকের ৩০ পেরোলেও বয়স বোঝা যায় না। বয়সের ছাপের এই প্রক্রিয়াটা মূলত শুরু হয় শরীরের ভেতরে। পরে বাইরে এর প্রভাব পড়ে। তবে এখানে আরও একটা ব্যাপার আছে। চেহারাতে বয়সের ছাপ কতটা পড়বে আর কোন বয়সে পড়বে তা কিন্তু অনেকটাই নির্ভর করে আপনার বংশীয় কিছু বিষয়ের উপর। কেমন সেটা?

বংশে কারও ডায়াবিটিস হলে অন্যদেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এ আপনারা জানেন। ঠিক তেমনি আপনার বংশে যদি কম বয়সেই ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কিংবা সমস্যা থাকে তবে আপনি ধরে নিন আপনারও এটা হবেই। কিন্তু হ্যাঁ, এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব! কীভাবে জানেন? কোন কিছুর সমাধানে আসার আগে সমস্যাটি খুব ভালোভাবে বুঝে নিতে হয়, এ আপনারা জানেন। সে কাজটিই করবো এখন। বলিরেখা নিয়ে আদ্যপান্ত জানবো। এতে কী হবে জানেন? সমস্যার বিস্তারিত বুঝতে পারলে সমাধান বের করতে আর নতুন সমস্যা হবে না। তাই না? চলুন শুরু করা যাক-

বলিরেখা কিংবা মুখে বয়সের ছাপ! কেন?

কোন কিছুর সমাধানের জন্য সমস্যার গভীরে যাওয়া আবশ্যক। মুখে বয়সের ছাপ কিংবা বলিরেখা সংক্রান্ত সমস্যার ঘরোয়া সমাধানে যাওয়ার আগে একটু করে জানিয়ে রাখতে চাই কেন এই বলিরেখা-

পাঠক, কোলাজেন নিয়ে একটু আগে আলাপ করছিলাম। মনে আছে নিশ্চয়ই? মূলত কোলাজেনই ত্বক টানটান রাখে। বয়স বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ত্বকে কোলাজেন তৈরির যে স্বাভাবিক ক্ষমতা, তা কমে আসে। আর এতেই ত্বক বুড়িয়ে যেতে থাকে।

এ তো গেলো বলিরেখা সংক্রান্ত শরীরের ভেতরের খবর। বাইরেরও কিছু প্রভাব আছে বইকি! মানসিক যে-কোন চাপ, রোদে বেশিক্ষণ থাকা, পানি কম খাওয়া, ধুমপান, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, ঘুমের সময় বালিশের চাপের কারণে ত্বকে দাগ পড়াসহ মুখের নানান রকম ভঙ্গিমার কারণেও কিন্তু ত্বকে এবং মুখে বলিরেখা কিংবা বয়সের ছাপ দেখা দেয়।

বলিরেখা না পড়ুক!

অনেক কথার ফুলঝুড়ির পর এবার আসি সমাধানে। যেন-তেন সমাধান নয়, একদম ঘরোয়া। বর্তমানে সয়লাব হয়ে যাওয়া নকলের ভিড়ে প্রয়োজনীয় কিছু খুঁজে পেয়ে ব্যবহার করা দুষ্করই বটে! আবার এক সমস্যা দূর করতে গিয়ে অন্য সমস্যার উদ্ভব হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই না পাঠক? সে কারণে কৃত্রিমতা বাদ দিয়ে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাচ্ছি আপনাদের। কারণ একমাত্র প্রাকৃতিক কিছুই সম্পূর্ণ ভরসাযোগ্য, এ কিন্তু নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। অতএব….

বয়স বাড়ার সাথে মুখে বয়সের ছাপ পড়বেই, এটা যেন চিরন্তন সত্য। তবে বয়সের ছাপ পড়ার এই গতিকে কিন্তু ঘরোয়াভাবেই ধীর করতে পারবেন আপনি। চাই কিছু প্রচেষ্টা। তো চলুন ঘরোয়াভাবে কীভাবে বলিরেখা দূর করবেন সে সম্পর্কে জেনে নেই-

জীবনধারা পালটে ফেলুন!

আচ্ছা পাঠক, একটু ভেবে বলুন তো! আপনারা কে কীভাবে জীবন চালাচ্ছেন? প্রশ্ন দেখে কপাল কুঁচকে এলো কি? আচ্ছা সহজ করে দিচ্ছি- আপনার দৈনন্দিন খাবার গুলো কী? খাদ্যাভাস সম্পর্কে একটু ভাবুন। না! এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। এরপরের ভাবনা শারীরিক ব্যায়াম নিয়ে। করেন তো প্রত্যেহ? ঘুম ঠিকঠাক হয় তো? প্রাপ্তবয়স্কদের জব্য ঘুম মানেই কিন্তু ৮ ঘন্টা। বয়সের সাথে সাথে বুড়িয়ে যাওয়া এড়াতে কিংবা বুড়িয়ে যাওয়ার গতি ধীর করতে এই তিন বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কোন ৩ টি?

  • খাদ্যাভ্যাস।
  • শারীরিক ব্যায়াম।
  • পর্যাপ্ত ঘুম অর্থাৎ ৮ ঘন্টা ঘুম।

কি মনে থাকবে তো? এই তিনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু খাদ্যাভ্যাস। যে অভ্যাসের সূচনা করতে হয় বয়সের ছাপ পড়ার আগেই। কিছু খাবার আছে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে বেশ সহায়ক। সুতরাং খাদ্যতালিকায় সে খাবারগুলোর অগ্রাধিকার অবশ্যই বেশি থাকবে। কি তাইতো?

খাদ্যাভ্যাস এর পাশাপাশি একটা বিষয় মনে করিয়ে দেই, পানি পান করবেন। অনেকেই পানির পিপাসা পায় না, জানেন? এর মধ্যে শীতকাল আসন্ন। শীতকালে ঠাণ্ডার ভয়েও অনেকে পানি পান করেন না। কিন্তু ভয়ংকর তথ্য কী জানেন? ত্বকে পানির পরিমাণ কমে গেলেই কিন্তু মুখে বয়সের ছাপ আরও স্পষ্ট আকারে বসে যায়। পানির অভাবে যদি আদ্রতা হারিয়ে ত্বক শুকিয়ে যায়, তাহলে যত দামি ক্রিম বা লোশনই হোক না কেন, কাজে দেবে ন। এ আপনারা মিলিয়ে নিন। শুধু পানি পানে সমস্যা হয় অনেকের। বমি বমি ভাবও হয়। সেক্ষেত্রে পরামর্শ দিচ্ছি পানি আছে এমন কিছু খাওয়ার। যেমন- শাক, সবজি, ফল, সালাদ,  শরবৎ, স্যুপ ইত্যাদি।

মোট কথা শরীরে লিকুইড প্রবেশ হতে দেবেন। এটা আপনার ত্বক ভালো রাখবে, সতেজ করবে ভেতর থেকে। অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাবেন। খাদ্যতালিকায় রাখবেন সহজপাচ্য সব খাবার যা সহজে হজম হয়। ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই যুক্ত খাবার অবশ্যই রাখবেন খাদ্যতালিকায়। এই দুই জাতীয় ভিটামিন ত্বক সতেজ রাখতে বেশ কার্যকর। আর হ্যাঁ, সাপ্লিমেন্ট কিছু খাবেন না। এমন কিছুই খাবেন যাতে শরীরে সরাসরি পুষ্টি যায়।

এড়িয়ে চলুন কৃত্রিম সব প্রসাধনী!

সাজগোজ পছন্দ করেন এমন মানুষের সংখ্যাটা কেমন হতে পারে বলে আপনাদের ধারণা?

অবশ্যই কম নয়, তাই না? আচ্ছা এবার বলুন তো, সাজগোজ করা ক’টা মানুষের মুখ ত্রুটিহীন দেখেছেন? ত্রুটিহীন বলতে বুঝাচ্ছি বয়সের ছাপ, ব্রন জাতীয় বিষয়াদি। অনেকে এগুলো ঢেকে রাখতেই ব্যবহার করেন নানান ধরণের কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী। সাময়িক উপকার পেলেও এর খেসারত হয় মারাত্মক ধরণের। ফেইসবুক এবং পত্রিকাগুলোতে অনেকের ত্বক পুড়ে যাওয়ার ঘটনা আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন। পুড়ে যাওয়ার কারণ এই কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী। মোটকথা হলো, কৃত্রিম কোন কিছুই ভালো নয়।  হোক সেটা সাধারণ বা প্রাকৃতিক বলে বিক্রি করা সাবান কিংবা ফেইসওয়াশ।

এখন প্রশ্ন আসা খুব স্বাভাবিক যে, “যদি সাবান কিংবা ফেইসওয়াশ বাদ দিতেই হয় তবে মুখ ধুবো কী দিয়ে?”

উত্তর- দুধের সর, কাঁচা হলুদ, ময়দা, গোলাপজল, অ্যালোভেরা, ডিম, খুব ভালো মানের তেল, ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন। বাস! হয়ে এলো! একটা ব্যাপার জানিয়ে রাখি, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন না। এবং সানস্ক্রিন কেনার আগে অবশ্যই রঙহীন ও গন্ধহীন দেখেই কিনুন।

সানস্ক্রিন ব্যবহারের একটা নিয়ম জানিয়ে দিচ্ছি

দিনের আলোতে যদি বাড়িতে কিংবা অফিসে থাকেন তাহলে কমপক্ষে ২ বার সানস্ক্রিন লাগাবেন। আর বাইরে থাকলে প্রতি ২ ঘন্টা পরপর ১ বার করে সানস্ক্রিন লাগাবেন। খেয়াল রাখবেন, ত্বক যেন কোনভাবেই শুষ্ক হয়ে না যায়।

ডুব দিন প্রকৃতিতে

কেবল প্রাকৃতিক ছাড়া আর কিছুতেই স্বয়ংসম্পূর্ণ কিছু পাওয়া কিন্তু নিতান্তই অসম্ভব। এককালে রূপচর্চা বলতে প্রাকৃতিক বিষয়ই বুঝানো হতো। কিন্তু এখন দিনকাল বড্ড পাল্টেছে। যতই বলি, মেইক আপে সব সম্ভব কিন্তু প্রাকৃতিক আর কৃত্রিমতার মধ্যে বিস্তর একটা ফারাক আছে। আর সে কারণেই কিছু প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে জানাবো আপনাদের। যার কিছু না কিছু ঘরেই থাকে। চলুন শুরু করা যাক-

অ্যালোভেরা

বাংলায় ঘৃতকুমারী, ইংরেজিতে অ্যালোভেরা। মোটামুটি পরিচিতি একটা সবুজ উদ্ভিদ। গন্ধ এবং স্বাদের কারণে অনেকে নাক ছিটকালেও এর উপকার কিন্তু অনবদ্য। বিশেষ করে ত্বকের জন্য। ত্বকের অসংখ্য সমস্যার অসাধারণ একটি সমাধান এই অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবেই ঝুলে ও কুঁচকে যাওয়া বলিরেখাযুক্ত ত্বককে করে তোলে টানটান।

শরীরের যে জায়গাগুলো কুঁচকে যায়, ঝুলে যায় কিংবা বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে সে জায়গাগুলোতে অ্যালোভেরা জেল মাখিয়ে আলতো হাতে ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন। ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট রেখেই ধুয়ে নেবেন জায়গাগুলো।

অ্যালোভেরার জেল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে ভালো হয় সরাসরি গাছেরটা ব্যবহার করতে পারলে। রোজ ব্যবহারেই ফল পাবেন। তবে হ্যাঁ, ধৈর্য ধরেই রোজ ব্যবহার করতে হবে। একদিন করলেন, দু’দিন বাদ দিলেন, এভাবে হবে না। যাই করবেন, করতে হবে নিয়মিত। এই হলো কথা।

গোলাপজল

গোলাপজল যারা ব্যবহার করেন বা ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন তারা কিন্তু এই পানির গুরুত্ব বেশ অনুধাবন করতে পারেন। কি তাইতো?

সৌন্দর্যের বন্ধু গোলাপজল বলিরেখা দূর করব ত্বককে করে তোলে টানটান এবং লাবণ্যময়। রাতে ঘুমোনোর আগে শরীরের যে জায়গাগুলোতে বলিরেখা পড়েছে সে জায়গাগুলোতে গোলাপজল লাগান তুলোতে মিশিয়ে। অর্থাৎ গোলাপজলে তুলো ভিজিয়ে নিয়ে সে ভেজানো তুলো বলিরেখা হয়েছে এমন জায়গায় আলতো করে লাগান। সারারাত রাখুন। সকালে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করুন কাজটি। ফলাফল নিজেই দেখুন।

একটা বিষয় জানিয়ে রাখি, আসল গোলাপজল না হলে কাজ হবে না৷ আর আসল গোলাপজল পাওয়াটাও কঠিন, তাই না? সেক্ষেত্রে ঘরেই বানিয়ে ফেলতে পারেন গোলাপজল। কী করে? জানাচ্ছি-

গোলাপ জলের জন্য প্রথমেই লাগবে গোলাপ ফুল। নিজের গাছের হলে তো খুবই ভালো। বাইরে থেকে কিনে আনা হলে খেয়াল রাখবেন এই ফুলে যাতে কোন কেমিক্যাল মেশানো না থাকে। অর্থাৎ পুরো টাটকা ফুলই লাগবে গোলাপজল বানাতে।

১ কাপ পরিমাণ গোলাপের পাপড়ি আলাদা করে একটা কাঁচের পাত্রে রাখুন। ২ কাপ পরিমাণ পানি সেদ্ধ করে সেই কাঁচের জারে রাখুন। ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। এরপর পানিটা ছেঁকে নিন। ছেঁকে নেওয়া পানি ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করুন। যেহেতু ঘরোয়া এবং প্রিজারভেটিভ নেই তাই ১ সপ্তাহের মতো ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর শেষ হয়ে এলে আবার একই নিয়মে বানিয়ে নেবেন। খুব সহজ না?

ডিম

ব্যাচেলর্স ফুড নামে খ্যাত এই ডিমকে চুলের যত্নে ব্যবহৃত হতে দেখলেও ত্বকের যত্নে অনেকেই হয়তো সেভাবে দেখেননি। এবার জানবেন এবং ঘরে তৈরি করে দেখবেনও। জানাচ্ছি ব্যবহারবিধি-

ডিম থেকে সাদা অংশ আলাদা করে বিট করে ফোম বানান। এই ফোম বলিরেখা যুক্ত স্থানে মাখিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। নিয়মিত ব্যবহার করুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ থেকে ৪ বার। ত্বক টানটান হয়ে উঠবে।

মধু

মধুকে অনেক রোগের ঔষুধ বলা হয়। মহৌষধ খ্যাত এই মধুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদানের কারণে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি সহ শরীরের ভেতর থেকে অনেক রোগ সারিয়ে তোলে। এমনকি মধু ত্বকের অ্যাকনে দূর করতেও সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে মন্থর করে দেয় মধু। শুষ্কতা, রুক্ষতা দূর করতেও মধুর বিকল্প নেই।

মধুর ব্যবহার

মধুর ব্যবহার মোটেও কঠিন কিছু না। নিয়ম করে রোজ ব্যবহার করবেন। শুধু পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে আলতো হাতে মধু মাখাবেন মুখে। কিছুক্ষণ রেখে আবার শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। এভাবে রোজ করবেন। পার্থক্যটা ক’দিন বাদেই টের পাবেন।

আমন্ড অয়েল

তেলের নাম শুনে যারা অ্যালার্জির ভয় পাচ্ছেন তাদের জন্য বলছি- অ্যামন্ড অয়েলে অ্যালার্জির কোন সম্ভাবনা নেই। এই তেলটিকে ত্বক খুব দ্রুতই শুষে নেয় ফলে মুখ চটচটে হয় না। বরং ঝকঝকে, দাগহীন এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠে ত্বক। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে তেলটিতে ফলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্নি থেকে ত্বকে সুরক্ষা করে৷ এতে কী হয় জানেন? মুখে বয়সের ছাপ পড়ে না। এছাড়া অ্যামন্ড অয়েলে থাকা কোলাজেনই মূলত ত্বকে বয়সের ছাপ এড়াতে সহায়তা করে।

শুধু ত্বক নয় বরং চোখের ডার্ক সার্কেল এর দাগ দূর করতেও কিন্তু অ্যামন্ড অয়েল বেশ কার্যকর।

  • ব্যবহারের নিয়ম

রাতে ঘুমোনোর আগে ভালো করে মুখ ধুয়ে আলতো করে অ্যামন্ড অয়েল মুখে মাখিয়ে নিন। সারারাত রাখুন। সকালে ঘুম থেকে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন। নিয়ম করে রোজ ব্যবহার করুন এবং ফলাফল দেখুন।

অলিভ অয়েল

ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ও আদ্রতা বাড়ানোর জন্য অলিভ অয়েলের বিকল্প নেই বললেই চলে। তুলোর সাহায্যে অলিভ অয়েল মুখে মাখিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন। নিয়মিত করুন। উপকার পাবেন।

লেবুর রস!

হালকা করে লেবুর রস মুখে মাখিয়ে ১০ মিনিট পরেই ধুয়ে ফেলুন। অনেকের মুখে লেবুর রস সরাসরি সহ্য হয় না। সেক্ষেত্রে পানি দিয়ে প্রথমে মুখটা ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন। এরপর লেবু কেটে মুখে আলতো করে ঘষে ঘষে লাগাবেন। উপকার পাবেন। বেশি লাগাবেন না। অনেকের র‍্যাশের সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে খুব সংবেদনশীল ত্বক হলে লেবু পুরোপুরি বাদ দেবেন।

কলা

বলতে গেলে প্রায় বারোমাসি এই ফল বাসার আশেপাশেই পাওয়া যায়। ভীষণ সহজলভ্য এবং দামেও সস্তা আর পুষ্টিতে অনবদ্য এই কলার ব্যবহার শুধু খাওয়াতেই নয় বরং ত্বকের জন্যও প্রযোজ্য। সেক্ষেত্রে ত্বকের জন্য পাকা কলা ব্যবহার করবেন। পেকে যাওয়া কলা চটকে নিয়ে পেস্ট করুন বা ব্লেন্ড করেও নিতে পারেন। মুখে মাখিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলবেন। নিয়মিত ত্বকে কলার ব্যবহার আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলবে।

আনারস

ফল হিসেবেই  বেশ সুস্বাদু ও উপকারি হিসেবে খ্যাত এই আনারসের ব্যবহার যে ত্বকেও হতে পারে, সেটা হয়তো অনেকের ভাবনার বাইরে। মুখের বলিরেখা দূরীকরণে আনারসের ভূমিকাও কিন্তু কম না। কয়েক টুকরো আনারসের পেস্ট বানান অথবা শুধু রসটা নিন। মুখে মাখিয়ে শুকিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে এলেই ধুয়ে নিন। নিয়মিত ব্যবহার করুন। উপকার পাবেন বইকি।

ঘরোয়া টোটকা

এত-শত কথার ভিড়ে অনেক কিছু নিয়েই মোটামুটি একটা ধারণা হলো, তাই না? এবার তবে আলোচ্য বিষয় যা নিয়ে সেদিকে সরাসরি চলে এলে মন্দ হয় না। বলছিলাম, ঘরোয়াভাবে বলিরেখা দূর করার উপায় নিয়ে। চলুন কিছু টোটকা জেনে আসা যাক-

ওটমিলের ঘরোয়া স্ক্রাব

যা লাগছে-

  • ১ টেবিল চামচ ওটমিল।
  • ১ টেবিল চামচ জলপাই তেল।
  • ১ চা চামচ মধু।

এই তিন জিনিস একত্রে মেশান, পেস্ট তৈরি করুন। পেস্ট তৈরি হয়ে এলে মুখে ঘষুন। ২ মিনিটের মতো রাখুন। ধুয়ে ফেলুন।

মিল্ক স্ক্রাব

পরিমাণ মতো গমের ভুসি ও ক্লেঞ্জিং মিল্ক একত্রে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। ধুয়ে ফেলুন।

শুধুই নারিকেল তেল

ঘরে একদম প্রাকৃতিক নারিকেল তেল আছে? তাহলে নির্ভয়ে এবং নিশ্চিন্তে থাকুন। ঘুমোবার আগে পুরো মুখে, ঘাড়ে নারিকেল তেল ম্যাসাজ করুন। পুরো রাত রাখুন। ত্বকের বার্ধক্য দূর করতে নারিকেল তেলের তুলনা হয় না। এই তেল ত্বকের গভীরে পৌছে ত্বকে ভেতর থেকে পুষ্টি দেয়। ত্বকের স্বাভাবিক বার্ধক্য প্রক্রিয়াকেও নষ্ট করতে সাহায্য করে নারিকেল তেল। তবে তেলটা খাটি হতে হবে।

নারিকেল তেলের ব্যবহার এখানেই শেষ নয়। আরেকটা ব্যবহার আছে। যেটাতে লাগবে শুধু হলুদ আর খাটি নারিকেল তেল। দুটো একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। বলিরেখা আছে এমন স্থানে মাখিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলেই ধুয়ে নিন। এই পেস্ট এর ব্যবহার আপনার ত্বককে নরম করবে। বলিরেখা দূর করে আরও উজ্জ্বলতা বাড়াবে। মূলত ত্বকের জন্য হলুদ কিন্তু খুবই কার্যকরী। কতটা কার্যকরী সে প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয়-

হলুদে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে কোলাজেন এর উৎপাদন এর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। এতে ত্বক টানটান হয়।

গাজর মধুর পেস্ট

বাসায় গাজর থাকে? অন্তত বাসার আশেপাশে বাজারে তো কিনতে পাওয়া যায়, তাই না? ভালো করে ধুয়ে মনমতো টুকরো করে সেদ্ধ দিন। সেদ্ধ হয়ে এলে মধুর সাথে মিশিয়ে সেদ্ধ গাজর ব্লেন্ড করে নিন। পেস্টের মতো হয়ে এলে সেটা বলিরেখা আছে এমন জায়গায় মাখান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন।

গোলাপ জল ও দুধ

খুবই চেনা এবং নাগালের মধ্যে থাকা দুটো উপাদান নিয়ে এবারের ঘরোয়া টোটকা জানাচ্ছি-

দুধ এবং গোলাপ জল একই পরিমানে নিয়ে মেশান। মিশ্রণটিতে তুলো ডুবিয়ে আলতো করে বলিরেখায় মাখুন। শুকিয়ে আসা অবধি মুখে মিশ্রণটি রাখুন। এরপর শুধু পানি দিয়ে ভালো করে মুখটি ধুয়ে নিন। ত্বক টানটান করতে এই মিশ্রণটি খুব কাজের। এতে বলিরেখা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায়।

অ্যালোভেরা ও কাঠবাদাম

টোটকায় যাওয়ার আগে আলাদাভাবে অ্যালোভেরা আর কাঠবাদাম নিয়ে কিছু বিষয় জানিয়ে রাখি-

অ্যালোভেরার কাজ ত্বকের বলিরেখা কমিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল, মজবুত আর নরম করে তোলা। কাঠবাদাম প্রচুর তেল সম্বলিত একটি সহজলভ্য ড্রাই ফ্রুট। বয়সের ছাপ এড়াতে কাঠবাদাম খুবই কার্যকর। এবার টোটকায় চলে আসি।

  • যা লাগছে

সারারাত ভেজানো কয়েকটা কাঠবাদাম।

একটা টাটকা অ্যালোভেরার পাতার জেল।

  • জেল সংগ্রহের নিয়ম

পাতার উপর নিচ আলাদা করে ভেতরে স্বচ্ছ নরম অংশটি ব্লেন্ড করে নিন। হয়ে গেলো অ্যালোভেরা জেল।

  • যা করা লাগবে

ভেজানো কাঠবাদাম শিল পাটায় মিহি করে বেটে নিন। ব্লেন্ডারের কথা বললাম না কারণ কয়েকটা কাঠবাদামের জন্য অনেকক্ষেত্রে ব্লেন্ড হয় না। অনেকক্ষেত্রে মিহিও খুব হয় না যদি খুব অল্প পরিমাণে কেউ ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে ভরসা করার মতো শিল পাটাই শ্রেয়।

তো শিল পাটায় বেটে নেওয়া এই কাঠবাদামগুলোকে রেখে দিয়ে এর ভেতর অ্যালোভেরা পাতা থেকে সংগ্রহ করা জেলটি দিন। ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটা মুখে মাখিয়ে নিন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন।

লেবুর রস ও পুদিনা পাতা

কিছুটা পুদিনা পাতার রস আর লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এতে তুলো ডুবিয়ে সেই তুলো বলিরেখা যুক্ত স্থানে মাখান। চোখের নিচে থাকা ডার্ক সার্কেলেও মাখান। শুকানো পর্যন্ত রেখে দিন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান হবে।

পেপে ও টকদই

ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে পেপে কিন্তু দারুণ কার্যকরী। সমপরিমাণ টকদই আর পেপের পেস্ট একসাথে মিশিয়ে আলাদা পেস্ট তৈরি করুন। মুখে মাখুন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। বাস!

কফি প্যাক

কফিপ্রেমি মানুষদের জন্য একটা সংবাদ, খাওয়ার পাশাপাশি এই কফি আপনি চাইলে মুখেও দিতে পারবেন। এ জন্য সামান্য কিছু কাজ করতে হবে-

নারিকেল তেল, চিনি, দারুচিনি, সহনীয় মাত্রার গরম পানি আর কফি- সবটা মিলিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে মাখুন। মুখের অতিরিক্ত তেল দূর করবে এটা। ত্বককে টানটান করে তুলবে।

ভাতের মাড়ের প্যাক

শিরোনাম দেখে আঁৎকে উঠেছেন যারা, তাদের জন্য বলছি, ভাতের মাড় কিন্তু ত্বকের জন্য বেশ কাজের। ইউটিউবে ঘাটাঘাটি করলে তথ্যটা পেয়ে যাবেন, জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ান, চিনের মেয়েদের বয়স ধরে রাখার পেছনে ভাতের মাড়ের অবদান কিন্তু আসলেই গুরুতর। তেমনই একটি টোটকা জানাচ্ছি আজ-

ভাত হয়ে আসার আগে মাড় কিছুটা মাড় ছেঁকে নিবেন। ঠাণ্ডা করে ওতে মেশাবেন দুধ আর মধু। এখন এই মিশ্রণ মুখে মাখিয়ে শুকিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। এরপর সেদ্ধ চালের পানি মানে ভাতের পাতলা মাড় দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন। এরপর এই অবস্থায় আরও কিছুক্ষণ থেকে মুখ শুকিয়ে এলে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নেবেন। ৭ দিন পর পার্থক্য দেখুন।

বয়সের ছাপ কমিয়ে এনে বলিরেখা দূর করে এই প্যাক। তাছাড়া ত্বকের লাবণ্য বাড়াতেও বেশ কার্যকরী প্যাকটি।

দুধ ও কোকো পাউডার

মুখের জন্য কতটাই আর লাগবে? আন্দাজমতো কোকো পাউডার আর দুধ মিশিয়ে পেস্ট করে নিন। যতটা কোকো পাউডার আর অর্ধেকটা দুধ নেবেন এক্ষেত্রে। মুখে মাখিয়ে অপেক্ষা করুন শুকানোর। ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন মুখটা। ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহার করুন।

ডিম এর প্যাক

একটা তথ্য জানিয়ে রাখি, মুখের যে-কোন কিছুতে ডিমের সাদা অংশটা ব্যবহার করবেন। কেন করবেন, এই প্রশ্নের উত্তরে আগাম জানিয়ে রাখি, প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে টানটান করার ক্ষমতা আছে ডিমের সাদা অংশের।

টক দই আর ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। বলিরেখা এবং রোদে পোড়া জায়গায় মাখান পেস্টটা। শুকিয়ে এলেই ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ন্যূনতম ২ দিন করুন এই কাজটা।

ডিমের আরেকটা কাজ আছে। মধুর সাথে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। মেশানো হয়ে এলে মুখে মাখান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নেবেন উষ্ণ গরম পানি দিয়ে। গরম পানি বলতে ধোয়া ওঠা টগবগে পানি না কিন্তু। ত্বকে সহ্য করতে  পারবেন, এমন মাত্রার পানি। নিয়মিত এটাও করতে পারেন।

আলু ও আপেল

ভিন্নধর্মী দুই জিনিসকে এক করতে যাচ্ছি। ত্বকের বলিরেখা যুক্ত স্থানেই তো মাখাবেন, কতটা আর লাগতে পারে? সমপরিমাণ আলু ও আপেল বেটে নিন। মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে মাখান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। ত্বক দারুণভাবে উজ্জ্বল হবে।

কলার প্যাক

পাকা কলা আর মধু একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। মুখ, ঘাড়, হাত, পা সহ যেখানে যেখানে রোদে পোড়ে সেখানে মাখান। রোদে পোড়া দাগ, বলিরেখা কমাতে এই প্যাক বেশ কার্যকর।

মোটামুটি অনেকগুলো কিন্তু সহজলভ্য কিছু ঘরোয়া টোটকা নিয়ে আলাপ হলো আজ। আশা করছি কোন না কোন উপায় অবশ্যই অবলম্বন করবেন। এবং অবশ্যই নিয়ম মেনে চলবেন।

Filed Under: Anti Ageing, Skin Care Ideas

হায়ালুরোনিক এসিডঃ কি এবং ত্বকের যত্নে এর গুরুত্ব ও উপকারীতা

by Mohona

হায়ালুরোনিক এসিড হালের সৌন্দর্য শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সিরাম থেকে শুরু করে নাইট ক্রিম, এই জাদুকরী উপাদানটি বর্তমানে প্রায় সকল ত্বকের যত্নের পণ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। এবং এটি এমন একটি উপাদান যা বিউটি ব্লগার এবং ত্বকের যত্নকারী প্রতিটি মানুষ অতি উৎসাহের সাথে ব্যবহার করে।

এতক্ষনে আপনার নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছেন যে এটি আসলে কি? এবং এটি আপনার ত্বকের উপর আসলেই কি করে?

ত্বকের যত্নে “এসিড” কি আসলে খারাপ না? এতদিন যা জানতেন তা কি ভুল?

– আমি জানি এরকম অনেক প্রশ্ন আপনার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। আমি জানি যে এই বিষয়ে আপনাদের মাঝে আরও স্পষ্টতা প্রয়োজন, আর এই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর করতে আমাদের আজকের এই নিবন্ধটি লিখা। এখানে আপনি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর এক নিমিষেই পেয়ে যাবেন।

হায়ালুরোনিক এসিড কি?

হায়ালুরোনিক এসিড এমন একটি পদার্থ যা আপনার দেহ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদন করতে সক্ষম। এই এসিড হায়ালুরনান নামেও পরিচিত এবং এটির বেশিরভাগ মানুষের হাড়ের জয়েন্টগুলিতে এবং আপনার চোখের তরল পদার্থে পাওয়া যায়। এটি আপনার দেহে লুব্রিকেটিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া, এই এসিড আপনার ত্বকে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

বর্তমানে এই এসিড অসংখ্য অ্যান্টি-এজিং ক্রিম এবং ত্বকের যত্নের পণ্যের প্রধান উপাদান। এটি আপনার ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, এবং আপনি সিরাম, ক্রিম এবং লোশনে প্রধান উপাদান হিসেবে হায়ালুরোনিক এসিড খুঁজে পাবেন।

সুতরাং, বুঝতেই পারছেন যে ত্বকের যত্নে এর উপকারীতা অনেক বেশি। আর এই উপকারীতাগুলো আসলে কি কি চলুন তা জেনে নেই।

হায়ালুরোনিক এসিড এবং ত্বকে এর উপকারীতা

১. এটি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে

হায়ালুরোনিক এসিড আপনার ত্বককে হাইড্রেটেড এবং ময়েশ্চারাইজড রাখে। এর কারণ হলো এটি আপনার ত্বকে পানির অণুগুলোকে ধরে রাখে। ত্বকের আদ্রতার হ্রাস এজিং এর একটি মূল কারণ। ত্বকের কোষ এবং টিস্যুগুলো যখন আদ্রতা হারায়, তখন ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং চামড়া ঝুলে পরে। হায়ালুরোনিক এসিড ত্বকে পানির হ্রাস হওয়া প্রতিরোধ করে এবং এজিং এর লক্ষণগুলি হ্রাস করে।

২. বলিরেখার উপস্থিতি হ্রাস করে

জার্নাল অফ কসমেটিক ডার্মাটোলজিতে ২০১৪ সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, যে সকল কসমেটিক পণ্যে হায়ালুরোনিক এসিড রয়েছে সেগুলো ত্বকে বলিরেখার উপস্থিতি হ্রাস করে এবং চামড়ার ঝুলে পরা কমিয়ে আনে।

৩. হায়ালুরোনিক এসিড ত্বকের নমনীয়তা উন্নত করে

জার্নাল অফ ক্লিনিকাল অ্যান্ড এ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণাতে ত্বকের নমনীয়তা এবং ত্বকের হাইড্রেশন স্তর বজায় রাখতে ন্যানো-হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের কার্যকারিতা নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। এই অনুসন্ধানে পাওয়া যায় ন্যানো-হায়ালুরোনিক এসিড ত্বকের হাইড্রেশন স্তরকে ৯৬% বাড়িয়েছে এবং ত্বকের দৃঢ়তা ও নমনীয়তা ৫৫% বাড়িয়েছে।

সাধারণত বিউটি পণ্যগুলি ব্যবহার বা লাগানোর সময়, এর লাগানোর প্রক্রিয়াটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি অন্যান্য পণ্যগুলির সাথে স্তরে বা মিশিয়ে লাগাবেন নাকি শুধু ঐ পণ্যটি একা লাগাবেন তা আপনাকে বিবেচনা করে দেখতে হবে। এছাড়াও, দিনের কোন সময়ে আপনি এটি ব্যবহার করছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এই এসিডটি ব্যবহারের সঠিক কোনো নিয়ম নেই, তারপরও কিছু উপায় রয়েছে যেভাবে ব্যবহার করলে এই এসিড খুব ভালো কাজ করে।

কিভাবে আপনি আপনার রূপচর্চার রুটিনে এই এসিডটি ব্যবহার করতে পারেন তার একটি বিস্তারিত আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।

আপনার ত্বকের যত্নের রুটিনে হায়ালুরোনিক এসিড অন্তর্ভুক্ত করার কিছু উপায়

আপনার প্রতিদিনের ময়েশ্চারাইজারের সাথে মিশিয়ে নিনঃ আপনার ময়েশ্চারাইজারে হায়ালুরোনিক এসিড মিশিয়ে নিন, এতে আপনি ময়েশ্চারাইজার এবং এসিড এই দুইটিরই উপকারীতা একসাথে পাবেন।

গোসল করার পর পরেই এটি ব্যবহার করুনঃ গোসল করার পর বা আপনার মুখ ধোয়ার পর সাথে সাথেই হায়ালুরোনিক এসিড আপনার মুখে লাগান। আপনার ভিজা ত্বকে সরাসরি এটি ব্যবহার করুন। এই এসিড আপনি আপনার মেকাপের বেইস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি আপনি আপনি আপনার ত্বকে আর এক স্তর সুরক্ষা চান, তাহলে মেকাপ করার আগে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

আপনার প্রতিদিনের সিরাম হিসেবেঃ আপনি চাইলে হায়ালুরোনিক এসিডকে প্রতিদিনের নাইট সিরাম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন রাতে এটি মুখে লাগান, সারারাত মুখে রেখে ঘুমিয়ে পড়ুন এবং সকালে জেগে উঠুন শিশুর ত্বকের মত নরম ও কোমল ত্বক নিয়ে।

সুতরাং, ত্বক তৈলাক্ত অথবা শুষ্ক যেমনই হোক না কেনো, প্রাণোচ্ছল এবং উজ্জ্বল দেখার জন্য এর সঠিক হাইড্রেশন দরকার। আর ত্বকের যত্নের এই শিল্পে সবসময়ই অভিনব নামের সাথে নতুন নতুন পণ্য যোগ হচ্ছে। ফলে দেখা যায়, একটি পণ্যের স্থান আরেকটি পণ্য খুব দ্রুতই দখল করে নিচ্ছে। অনেক সফল সৌন্দর্য বৃদ্ধির পন্যই বর্তমান যুগে হারিয়ে গেছে। কিন্তু হায়ালুরোনিক এসিড এই ধরণের কোনো পণ্য নয় যা খুব তাড়াতাড়ি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এই যাদুকরী উপাদানটি বিজ্ঞানের দ্বারা সমর্থিত এবং আপনার ত্বককে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই ত্বক নরম, কোমল, প্রাণোচ্ছল, উজ্জ্বল এবং ত্বকের প্রাকৃতিক আদ্রতার স্তর ধরে রাখার জন্য হায়ালুরোনিক এসিড ব্যবহার করুন।

Filed Under: Skin Care Ideas

সানস্পট থেকে মুক্তির ১২ টি সহজ উপায়

by Mohona

সানস্পট কি আপনাকে রোদে বের হতে বাঁধা দিচ্ছে?

এগুলো (চেহারার কালো কালো দাগ ) ঢেকে রাখা অনেক কঠিন, এবং যদি আপনি মেকাপ করতে পছন্দ না করেন তাহলে এই স্পটগুলো খুব সহজে আপনার ফেইস নষ্ট করতে পারে। চিন্তার কোনো কারণ নেই, আমরা অনেকগুলো ঘরে তৈরি প্যাক নিয়ে এসেছি যা সানস্পট দূর করতে সাহায্য করবে।

সানস্পট কি? এর হওয়ার কারণ কি?

সানস্পট তখনই হয় যখন আপনার ত্বক দীর্ঘক্ষন ধরে সূর্যের ক্ষতিকারক রঞ্জকরশ্মি দ্বারা আক্রান্ত হয়। এগুলোকে সোলার লেন্টিনও বলা হয়। এই স্পটের কোনো নির্দিষ্ট আকার বা রঙ নেই এবং যা আপনার শরীরের যে অংশে সূর্যের তাপ লেগেছে সেই অংশেই দেখা দিতে পারে। আর তা হতে পারে আপনার গাল, নাক, ঠোঁটের উপরের অংশ, কান, কনুই, হাত ইত্যাদি। মাঝে মাঝে, এগুলো অনেক খসখসে থাকে, আবার মাঝে মাঝে এগুলো মসৃণ।

ত্বকের সমস্যা যেমন সানস্পটের সাথে যুদ্ধ করতে ঘরে তৈরি প্যাকগুলো সবচেয়ে স্মার্ট এবং সস্তা পদ্ধতি। এগুলোর মাধ্যমে আপনি সানস্পট থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।

কিভাবে সানস্পট থেকে মুক্তি পাবেন

১. লেবু

২. ক্যাস্টর অয়েল

৩. অ্যালোভেরা

৪. আপেল সিডার ভিনেগার

৫. গ্রিন টি

৬. বাটার মিল্ক

৭. মুলতানি মাটি

৮. বেসন

৯. শসার প্যাক

১০. নারিকেলের পানি

১১. পেঁপের রস

১২. চন্দন কাঠ

সানস্পট দূর করতে ঘরোয়া পদ্ধতি

১. লেবু

উপকরণ

  • ১ টি লেবু
  • তুলা

প্রক্রিয়া

  • লেবুর রস চিপে বের করে নিন এবং তুলার সাহায্য আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন।
  • ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • শুকিয়ে নিন এবং একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

বিকল্প প্রক্রিয়া

১ টেবিল চামচ লেবুর রসের সাথে ১ টেবিল চামচ চিনি মিশিয়ে নিন। সানস্পটে স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করুন.১ বা ২ মিনিট স্ক্রাব করার পর, মিশ্রনটি ১০ মিনিট রেখে দিন। পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

শুধুমাত্র লেবুর রস প্রতিদিন লাগাতে পারেন। লেবু এবং চিনির স্ক্রাব সপ্তাহে ২-৩ বার লাগাতে পারেন।

কিভাবে কাজ করে

লেবুতে ব্লিচিং এর বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সানস্পট দূর করতে সাহায্য করে। এটি আপনাকে দাগ্মুক্ত উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করে।

২. ক্যাস্টর অয়েল

উপকরণ

  • কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল

প্রক্রিয়া

  • তেলটি আক্রান্ত স্থানে লাগান এবং কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন।
  • কমপক্ষে ১ ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন এবং এরপর ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

প্রতিদিন এক বা দুইবার লাগাবেন।

কিভাবে কাজ করে

ক্যাস্টর অয়েল আপনার ত্বকে পুষ্টি জোগায় কারণ এতে ফ্যাটি এসিড রয়েছে। এটি দাগ হালকা করতে সাহায্য করে এবং প্রতিদিন ব্যবহারে এটি ত্বকের রঙ সমান করে।

৩. অ্যালোভেরা

উপকরণ

  • অ্যালোভেরা জেল অথবা অ্যালো জুস।

প্রক্রিয়া

  • অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করে নিন এবং আক্রান্ত স্থানে লাগান
  • আধা ঘন্টা রেখে দিন এবং এরপর ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

প্রতিদিন করবেন।

কিভাবে কাজ করে

অ্যালভেরাতে প্রাকৃতিকভাবে নিরাময় করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কালো দাগ এবং রোদে আক্রান্ত স্থান হালকা করে। এটা ত্বকের পুনরূদ্ধার করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের গুনমান ঠিক করে।

৪. আপেল সিডার ভিনেগার

উপকরণ

  • ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার
  • ১ টেবিল চামচ পানি
  • ১ চা চচমচ মধু

প্রক্রিয়া

  • উপকরণগুলো মিশান এবং আপনার ত্বকে মিশ্রন্টি লাগান।
  • ১০ মিনিট রেখে দিন এবং ধুয়ে ফেলুন।
  • কমলার রস মিশিয়ে আরো দ্রুত এবং ভালো ফল পেতে পারেন।

কতবার করবেন

প্রতিদিন একবার করবেন।

কিভাবে কাজ করে

বিভিন্ন রকম ত্বকের সমস্যার জন্য আপেল সিডার ভিনেগার খুবই উপকারী, আর এটি সানস্পট ও দূর করে। এতে এসিড রয়েছে যা ক্ষতিগ্রস্থ এবং কালো ত্বকের কোষ দূর করে দেয় এবং সব রকম দাগ, স্কার এবং সানস্পট দূর করে দেয়।

৫. গ্রিন টি

উপকরন

  • একটি গ্রিন টি ব্যাগ
  • এক কাপ গরম পানি

প্রক্রিয়া

  • ১০ মিনিট টি ব্যাগটি এক কাপ গরম পানিতে রেখে দিন।
  • টি ব্যাগটি সরিয়ে ফেলুন, ঠান্ডা করে নিন এবং আক্রান্ত স্থানে লাগান।

কতবার করবেন

প্রতিদিন একবার অথবা দুইবার লাগাবেন।

কিভাবে কাজ করে

যদি আপনি ভেবে থাকেন যে গ্রিন টি শুধু মেটাবোলিজম এবং মেদ হ্রাস করতে সাহায্য করে, তাহলে আবার ভাবুন। আপনি জেনে অবাক হবেন গ্রিন টি ত্বকে ব্যবহারের কত অসাধারন উপকারিতা রয়েছে। এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউজ হিসেবে পরিচিত যা ত্বকের সমস্যা যেমন ট্যান এবং দাগ দূর করে।

৬. বাটার মিল্ক

উপকরণ

  • ১-২ টেবিল চামচ বাটার মিল্ক
  • তুলা

প্রক্রিয়া

  • পাত্রে রাখা বাটার মিল্কে তুলা ডুবিয়ে নিন এবং আক্রান্ত স্থানে ম্যাসাজ করুন।
  • ১০ মিনিট রেখে দিন এবং এরপর ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রতিদিন দুই বার করুন।

কিভাবে কাজ করে

এটা ত্বকে প্রশান্তি আনে এবং কালো সানস্পট ব্লিচ করে।

৭. মুলতানি মাটি

উপকরণ

  • ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
  • ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল
  • গোলাপ জল

প্রক্রিয়া

  • মুলতানি মাটির সাথে পরিমানমত গোলাপজল এবং অ্যালোভেরা জেল  মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন।
  • আক্রান্ত স্থানে এটি লাগান এবং ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

সপ্তাহে ২-৩ বার লাগাবেন।

কিভাবে কাজ করে

মুলতানি মাটি প্রতিটি মেয়েরই সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য খুব পছন্দের একটি উপাদান। এটি ত্বকে জাদুর মত কাজ করে। যদিও এটি ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে, এটি আপনার ত্বকের সানস্পট দূর করতেও সাহায্য করে। এটি ত্বকের ভেতরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, লোমকূপের ময়লা দূর করে, এবং আপনার ত্বকের নিস্তেজ কোষ দূর করে, আপনার ত্বকের রঙ কালো হওয়া থেকে রক্ষা করে। এটি আপনার সানস্পট গুলোকে হালকা করে দূর করে ফেলে।

৮. বেসন

উপকরণ

  • ২ টেবিল চামচ বেসন
  • ১ চিমটি হলুদের গুঁড়ো
  • ১ চা চামচ লেবুর রস
  • ১ চা চামচ দুধ

প্রক্রিয়া

  • সব উপকরণগুলো মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
  • প্যাকটি মুখে লাগান এবং ১৫ মিনিট রেখে দিন।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

দুধ ব্যবহারে যদি আপনার এ্যালার্জি হয় তাহলে দুধের পরিবর্তে গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন।

কতবার করবেন

সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

কিভাবে কাজ করে

ইংরেজিতে ছোলার আটা হিসেবে পরিচিত এই বেসন আপনার রান্না ঘরের অন্যান্য উপকরণের মত সাধারন কোন উপদান নয়। এটা বেশিরভাগ সময় ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে ব্যবহৃত হয় এবং ত্বকের সঠিক রঙ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে এবং কালো স্পট এবং সানস্পট কমিয়ে ফেলে।

৯. শসার প্যাক

উপকরণ

  • ১/২ শসা
  • ১ টেবিল চামচ টক দই

প্রক্রিয়া

  • শসাগুলো পেস্ট করে নিন এবং দইয়ের সাথে মিশিয়ে নিন।
  • আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন এবং কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন।
  • ভালোভাবে স্ক্রাব করুন। ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

প্রতিদিন একবার করুন এবং সপ্তাহ শেষে দেখবেন আপনার সানস্পটগুলো আস্তে আস্তে হালকা হওয়া শুরু করবে।

কিভাবে কাজ করে

যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয় তাহলে শসার প্যাক আপনার জন্য সেরা প্যাক। এটা আপনার খাদ্যের একটি অংশ হতে পারে কারণ ত্বককে শীতল রাখার চমৎকার বৈশিষ্ট্য শসার রয়েছে। শসা আপনাকে নিশ্চিন্ত এবং সতেজ অনুভব করতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে যা সানস্পট দূর করতে সাহায্য করে।

১০. নারিকেলের পানি

উপকরণ

  • সতেজ নারিকেলের পানি

প্রক্রিয়া

  • সানস্পটে সরাসরি লাগান এবং শুকাতে দিন।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

প্রতিদিন ১-২ বার এটি করবেন।

কিভাবে কাজ করে

গ্রীষ্মকালের তপ্ত গরমে ঠান্ডা নারিকেলের পানি পান করার ব্যাপারটা অনেক সতেজতাপূর্ণ। এটি আপনার ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরন করে এবং আপনার দেহ থেকে বিষাক্ত টক্সিন বের করে দেয়। যখন সানস্পট দূর করার কথা আসে তখন নারিকেলের পানি সমানভাবে কাজ করে কারণ এর মধ্যে ব্লিচিং এর বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

১১. পেঁপের পেস্ট

উপকরণ

  • ২-৩ টুকরো পাঁকা পেঁপে

প্রক্রিয়া

  • পেঁপেটি পেস্ট করে নিন এবনফ আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিন।
  • ১০-১২ মিনিট রেখে দিন
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

কতবার করবেন

সপ্তাহে ২ বার পেঁপের রস লাগাতে পারেন।

কিভাবে কাজ করে

যদি আপনার ঘরে পেঁপে থাকে তাহলে সানস্পট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি পেঁপের পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। এতে এনজাইম এবং পেপেইন রয়েছে যা ত্বককে এক্সফলিয়েট করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। বয়সের ছাপ, সানস্পট, কালো হয়ে যাওয়া, স্কার ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে।

১২. চন্দন কাঠ

উপকরণ

  • ২ টেবিল চামচ চন্দন পাউডার
  • ১ টেবিল চামচ লেবুর রস
  • গোলাপ জল

প্রক্রিয়া

  • চন্দন কাঠের পাউডারের সাথে গোলাপ জল এবং লেবুর রস মিশিয়ে ফেইস প্যাক তৈরি করুন।
  • সানস্পটে প্যাকটি লাগান এবং ১০-১৫ মিনিট শুকাতে দিন।
  • পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

সানস্পট দূর করতে চন্দন কাঠ ব্যবহার করার আরেকটি উপায় হলো ১ঃ২ অনুপাতে চন্দন কাঠের তেল এবং জলপাই তেল মিশিয়ে নিন এবং প্রতিদিন রাতে সানস্পটে লাগান।

কতবার করবেন

প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার লাগাবেন।

কিভাবে কাজ করে?

অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্যের জন্য চন্দন কাঠ বিশেষভাবে পরিচিত। এটি ত্বকের নিস্তেজভাব দূর করে এবং হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করে।

সানস্পট দূর করতে আরো কিছু টিপস

১. কেমিক্যাল পিল অথবা অ্যান্টি-ট্যান ফেসিয়াল

একটি ভালো অ্যান্টি-ট্যান ফেসিয়াল আপনাকে সানস্পট এবং পিগমেন্টেশন থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। কেমিক্যাল পিল ফেসিয়ালও উপকারী। আর এগুলো পেশাদার বা অভিজ্ঞ ডার্মাটোলোজিস্ট দ্বারা করা সম্ভব। আর এটির একমাত্র পার্শ্বপতিক্রিয়া হলো এই প্রক্রিয়াটি আপনার ত্বককে কয়েকদিনের জন্য লাল করে রাখে। যদি আপনি এটি সহ্য করতে পারেন তাহলে করতে পারেন।

২. সূর্য থেকে দূরে থাকুন

যতটা সম্ভব রোদ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। তাই বাহিরে বের হতে হলে সবসময় ছাতা সাথে রাখুন। ঢিলা-ঢালা জামা পরিধান করুন। খুব গাঢ়ো অথবা খুব হালকা রঙের কাপড় পরা থেকে দূরে থাকুন। আপনার কাপড় যত সাদামাটা ও হালকা হবে তত আপনার ত্বকের জন্য ভালো। চোখকে সূর্যের তাপ থেকে বাঁচাতে রোদচশমা ব্যবহার করুন।

৩. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

পুরো গ্রীষ্মকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার কাছে না থাকে তাহলে এখনি সময় এটি কিনে ফেলার। সানস্ক্রিন আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রঞ্জকরশ্মি থেকে রক্ষা করে। এমন সানস্ক্রিন কিনবেন যার এসপিএফ ৩০ বা তার উপরে। এবং আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী আপনার সানস্ক্রিনের এসপিএফ ৪০ অথবা ৫০ হওয়া ভালো।

এখন আপনি জানেন কিভাবে রোদের তাপ থেকে এবং সানস্পট থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়। তাহলে আর দেরি কেনো? এই রিমেডিগুলো আপনার ত্বককে দাগ্মুক্ত এবং উজ্জ্বল করে তুলবে। এই ঘরে তৈরি ফেইস প্যাকগুলো থেকে চন্দন কাঠের ফেইস প্যাক এবং মুলতানি মাটির ফেইস প্যাক আপনি আপনার সাপ্তাহিক ত্বকের যত্নের রুটিনে যোগ করতে পারেন, যা সানস্পট দূর করে আপনার ত্বককে আরো নিখুঁত করে তুলবে।

Filed Under: Skin Care Ideas

শীতে ঠোঁট ফাটা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়ার ১০টি ঘরোয়া উপায়

by রূপকথন ডেস্ক Leave a Comment

শুকনো এবং ফাঁটা ঠোঁট নিয়ে কি সারা বছর বিড়ম্বনা মধ্যে থাকতে হয়? এই লেখাটি আপনার জন্য।

এটি খুবই বিরক্তিকর একটি সমস্যা যদি আপনার ঠোঁট  হয় শুকনো এবং খোসার ছাড়ানো ত্বক। এবং এই সমস্যা নিয়ে আমরা যখন আমাদের প্রিয় মায়ের কাছে অভিযোগ করি, তখন তারা আমাদের বলে আমারা যেন বারবার ঠোঁট চাটা বন্ধ। এই সমস্যা প্রতিরোধ করার সেরা উপায় হল আমাদের ঠোঁটে হাইড্রেশন এবং পুষ্টির প্রদানের মাধ্যমে।

প্রথমে বলে রাখি। পানি সৌন্দর্যের একটি অপরিহার্য নিয়ামক। এটি শরীর এবং ত্বকে ভালভাবে হাইড্রিয়ট রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান না করেন তবে আপনি যত প্রতিকার ঠোঁটের ব্যবহার করে না কেন এগুলো কোন কাজে আসবেনা।

ঠোঁট ফাটার কারণ গুলো কি?

ঠোঁট ফাটার প্রধান কারণগুলো হলঃ

  • অত্যাধিক ঠোঁট চাটা (Excessive licking of lips)
  • সূর্যের কারনে ক্ষতি (Sun damage)
  • ধূমপান এবং পানীয় (Smoking and drinking)
  • ত্বকের ক্ষতিকর এমন টুথপেস্টে (Skin irritants in toothpaste)
  • এলার্জি (Allergies)
  • নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ, যেমন রেটিনোয়েড এবং কেমোথেরাপি ড্রাগ (Certain medications, such as retinoids and chemotherapy drugs)

একটি কমন সমাধান হল, মানুষ ঠোঁট ফাটা বন্ধ করার জন্য ঠোঁটে চ্যাপস্টিক (chapstick ) বা সুগন্ধি লিপজেল ব্যবহার করে থাকে। এটি তাত্ক্ষণিক পরিত্রান পেতে সাহায্য করে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে, এটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান প্রদান করে না।

নীচের প্রতিকারগুলো এই সমস্যা সমাধান করতে এবং দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল দিতে সাহায্য করবে।

এখানে শুষ্ক এবং ঠোঁট ফাঁটা বন্ধ করার ঘরোয়া প্রতিকারগুলো দেয়া হল।

কিভাবে ঠোঁট ফাঁটার হাত থেকে মুক্তির পাবেন

১. নারকেল তেল (Coconut Oil)

২. মধু এবং ভ্যাসলিন (Honey And Vaseline)

৩. গোলাপের পাপড়ি (Rose Petals)

৪. শসা (Cucumber)

৫. অ্যালোভেরা (Aloe Vera)

৬. গ্রীন টি ব্যাগ (Green Tea Bags)

৭. কোকো বাটার (Cocoa Butter)

৮. লেবুর রস (Lemon Juice)

৯. চিনি পদ্ধতি (Sugar Method)

১০. ভ্যানিলা নির্যাস (Vanilla Extract)

ঠোঁট ফাঁটার হাত থেকে রক্ষা পাবার ঘরোয়া উপাদানসমূহঃ

১. ঠোঁটের জন্য নারকেল তেল (Coconut Oil For Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • ভার্জিন নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল বা ক্যাসটল তেল বা আমন্ড তেল বা জোজোবা তেল।
  • ১-২ ড্রাপ টি ট্রি তেল বা গ্রাফিজেড তেল বা নিম তেল।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. এটা নির্ভর করবে আপনার কাছে কোন ক্যারিয়ার ওয়েল এবং অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল আছে, ক্যারিয়ার অয়েল মাঝে ১-২ ড্রপ অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল দিয়ে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন।

২. আপনার ঠোঁটে এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন এবং কিছুক্ষণের জন্য ঠোঁটে রেখে দিন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

দিনের মধ্যে ২/৩ বার মিশ্রিত তেল ব্যবহার করুন। এটি বিছানায় যাওয়ার আগে ব্যবহার করা যেতে পারে।

কেন কাজটি করবেন?

ক্যারিয়ার ওয়েল , যেমন অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, এবং ক্যাসটল ওয়েল সেরা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার এবং তেল জাতীয় পদার্থ রয়েছে। এগুলি সুস্থ ফ্যাটি অ্যাসিড ধারণ করে, যা ঠোঁটের প্রয়োজনীয় তৈলাক্ততা প্রদান করে ঠোঁটকে করে তুলে নরম ও নমনীয়। অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল – যেমন টি ট্রি তেল বা গ্রাফিজেড তেল শুষ্ক ঠোঁটের জন্য কার্যকরী কাজ করে। এটি আপনার ঠোঁটের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, বিশেষ করে শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

২. মধু এবং ভ্যাসলিন (Honey And Vaseline)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • কাচাঁ মধু (Raw honey)
  • ভ্যাসলিন (Vaseline)

আপনাকে যা করতে হবেঃ

  • আপনার ঠোঁটে মধুর প্রলেপ দিন।
  • মধুর প্রলেপের উপর এবার ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন।
  • এটি ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিন।
  • এবার একটি ভেজা টিস্যু বা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

স্থায়ী ফলাফল পেতে এক সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন ১বার করে লাগান।

কেন কাজটি করবেন?

মধুতে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট রয়েছে এবং প্রকৃতির সেরা নিরাময়ের মধ্যে একটি। ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয় ত্বকে কোমল এবং পুষ্টি প্রদান ও শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা জন্য। এটি ত্বকের কোষে আর্দ্রতা রক্ষা করে। এই দুটি উপাদানের মিশ্রন দ্বারা, আমরা ফাটা ঠোঁটের জন্য একটি খুব কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার পেতে পারি।

৩. গোলাপের পাপড়ি (Rose Petals)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • ৫-৬ টি গোলাপের পাপড়ি
  • 1/4 কাপ কাঁচা দুধ

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১.  ২-৩ ঘন্টার জন্য দুধের মধ্যে পাপড়ি ভিজিয়ে রাখুন।

২. পেস্টের মত সামঞ্জস্যতা পেতে গোলাপের পাপড়িগুলো দুধের সাথে আলতো করে মিশিয়ে নিন।

৩. এবার আপনার ঠোঁটে এই পেস্ট ব্যবহার করুন। এটি প্রায় ২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।

৪. ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

এক সাপ্তাহের জন্য প্রতিদিন ১ বার করে।

কেন কাজটি করবেন?

গোলাপের পাপড়িতে ত্বকের পুষ্টিকর বৈশিষ্ট্য রয়েছে- যেমন ভিটামিন ই (E)। তা আপনার ঠোঁটের প্রকৃত রং ধরে রাখতে সাহায্য করে। দুধে ল্যাকটিক এসিড রয়েছে যা ঠোঁটের পৃষ্ঠ থেকে আলতো করে মৃত চামড়া তুলে আনে। দুধে অপরিহার্য ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শুষ্ক ঠোঁটকে হাইড্রেট রাখে।

৪. ঠোঁট ফাঁটা রোধে শসা (Cucumber For Chapped Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • কয়েক পিস শসার টুকরো।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. ১/২ মিনিট ধরে আপনার ঠোঁটে শসার টুকরোটি আলতো করে ঘষুন।

২. ঠোঁটে লেগে থাকা শসার রস ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

অথবা আপনি চাইলে, আপনি ১/২ টুকরো শসা পেস্ট করে আপনার ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

এই প্যাকটি প্রতিদিন ১/২ বার ব্যবহার করুন।

কেন কাজটি করবেন?

শসা আপনার ঠোঁটের জন্য সেরা বন্ধু হতে পারে, কারণ এটি আপনার ঠোঁট ফাটা এবং শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে। শসা ত্বকের হাইড্রেট বজায় রাখে। শসা ব্যবহারের ফলে কিছুদিনের মধ্যে আপনার সকল ফ্যাকাশে ভাব (flakiness) এবং শুষ্কতা চলে যাবে।

৫. ঠোঁট ফাঁটা রোধে অ্যালোভেরা  (Aloe Vera for Chapped Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • একটি অ্যালোভেরা পাতা।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. অ্যালোভেরার পাতা টুকরো করে কাটুন এবং ভিতর থেকে জেল বের করে আনুন। একটি পাত্রে অ্যালোভেরার জেলগুলো নিয়ে রাখুন। লক্ষ রাখতে হবে ঐ পাত্রে যাতে বাতাস ডুকতে না পারে।

২. আপনার ঠোঁটের উপর জেল প্রয়োগ করুন।

৩. জেলের পাত্র বা কৌটাটি ভালভাবে মুখ লাগিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

নিয়মিত ঘুমানোর আগে অ্যালোভেরা জেল ঠোঁটে প্রয়োগ করুন।

কেন কাজটি করবেন?

অ্যালোভেরাতে প্রাকৃতিক উপাদানে পরিপূর্ণ যা ঠোঁট ফাঁটা থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের মৃত চামড়া তুলে আনে খুব সহজেই। এটি ঠোঁটের উপরের নরম চামড়াকে মজবুত করতে সাহায্য করে এবং ঠোঁটকে ঠান্ডা রাখে।

৬. ঠোঁট ফাঁটা রোধে গ্রীন টি ব্যাগ (Green Tea Bags For Chapped Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • ১টি গ্রীন টি ব্যাগ।
  • ১টি গরম পানির কাপ।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. কয়েক মিনিটের জন্য গরম পানিতে গ্রীন টি ব্যাগ ডুবিয়ে রাখুন।

২. ঠোঁটের উপর এই টি ব্যাগটি ধরে রাখুন।

৩. কয়েক মিনিট এভাবে রাখুন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

প্রতিদিন ১ বার করে।

কেন কাজটি করবেন?

গ্রীন টি তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ট্যানিন’স রয়েছে যা আপনার ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে এবং ঠোঁটকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।

৭. ঠোঁট ফাঁটা রোধে কোকো বাটার (Cocoa Butter For Chapped Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

অরগানিক কোকো বাটার বা শা বাটার বা পিনাট বাটার বা দই বা ঘি (clarified butter) বা বাটারমিল্ক।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. আপনার ঠোঁটে কোকো বাটার অল্প পরিমাণে ব্যবহার করুন এবং ঐ অবস্থায় রাতে রেখে দিন।

২. বিকল্পভাবে, আপনি শা বাটার বা ঘি ব্যবহার করতে পারেন এবং ঐ অবস্থায় রাতে রেখে দিন।

৩. আপনি যদি পিনাট বাটার, দই বা বাটারমিল্ক ব্যবহার করতে চান, তবে ৫-১০ মিনিটের জন্য আপনার ঠোঁটে রেখে দিন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন ১ বার করে করুন।

কেন কাজটি করবেন?

যখন কোকো বাটার, শা বাটার এবং ঘি এই বিভিন্ন ধরনের মাখন নিষ্কাশিত হয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে বিভিন্ন ধরনের মাখন প্রধানত অপরিপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিড ধারণ করে যা গভীর অবস্থা এবং নিঃশেষিত ত্বক নিরুদ করে। দই এবং বাটারমিল্কে ত্বকের পুষ্টিকর ফ্যাট রয়েছে। একই সময়ে, তা ত্বকে হালকা আবরন হিসাবে কাজ করে।

৮. ঠোঁট ফাঁটা রোধে লেবুর রস (Lemon Juice For Chapped Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • ১ চা চামচ লেবুর রস।
  • ১ চা চামচ মধু।
  • ১/২ চা চামচ কাস্টর ওয়েল।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. সব উপাদান মিশ্রিত করুন এবং আপনার ঠোঁটে এটি মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করুন।

২. প্রায় ১০ মিনিটের জন্য এটি রেখে দিন এবং তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

৭-১০ দিনের জন্য প্রতিদিন একবার করে করুন।

কেন কাজটি করবেন?

লেবুর রস কালো দাগ এবং ঠোঁট ফাঁটা বন্ধ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। লেবু একটি প্রাকৃতিক ব্লিচ এবং এক্সফোলিয়েট (exfoliant) হিসাবে কাজ করে। মধু ত্বকের যত্ন নেয় এবং ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করে।

৯. ঠোঁট ফাঁটা রোধে চিনি পদ্ধতি (Sugar Method For Chapped Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • ১ চা চামচ চিনি।
  • কয়েক ড্রপ অলিভ অয়েল।
  • ১/২ চা চামচ মধু।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. মধু, চিনি এবং অলিভ অয়েল ভালভাবে মিশিয়ে ফেলুন যাতে করে কোন দানা দানা না থাকে।

২. আপনার ঠোঁটে এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন এবং বৃত্তাকার গতিতে আলতো করে ঘষা দিন।

৩. কোমল ঠান্ডা পানি দিয়ে হালকা ভাবে ঘষে ধোয়ে ফেলুন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

প্রাথমিকভাবে এই প্যাকটি এক দিন পর পর ব্যবহার করুন। তারপর, নরম এবং মসৃণ ঠোঁট বজায় রাখতে সাপ্তাহে ১/২ বার প্যাকটি ব্যবহার করুন।

কেন কাজটি করবেন?

আপনার ঠোঁটের স্ক্রাবিং করে আলগা চামড়া তুলে ফেলা এবং শুষ্ক ঠোঁট থেকে মুক্তিরপেতে সাহায্য করে। যার ফলে, আপনার ঠোঁট নরম এবং মসৃণ হয়। আপনার ঠোঁটের প্রকৃত রং প্রকাশ পায়। চিনি একটি চমৎকার উপাদান যা ত্বকের চামড়া উঠা বন্ধ করে, এটি সবার রান্নাঘরে পাওয়া যায় এবং ঠোঁট ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

১০. ঠোঁট ফাঁটা রোধে ভ্যানিলা নির্যাস (Vanilla Extract For Chapped Lips)

আপনার যা প্রয়োজনঃ

  • ২ চা চামচ চিনি।
  • ১ চা চামচ বেকিং সোডা।
  • ২ চা চামচ জোজোবা তেল বা অলিভ অয়েল।
  • 1/4 চা চামচ ভ্যানিলা নির্যাস।

আপনাকে যা করতে হবেঃ

১. উপরের উল্লিখিত সমস্ত উপাদানগুলি ভালভাবে মিশ্রিত করুন।

২. আপনার আঙ্গুলের পাতায় এই মিশ্রণটি অল্প পরিমাণে নিন এবং আলতো করে আপনার ঠোঁটে এটি ব্যবহার করুন।

৩. এই মিশ্রণটি আপনার ঠোঁটে ১/২ মিনিট ধরে আলতো করে আঙ্গুলের পাতা দিয়ে ঘষুন এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

* একটি বায়ুরোধী ধারক এ সংরক্ষণ করে আপনি ৭দিন ব্যবহার করতে পারেন।

কতবার কাজটি করা উচিতঃ

কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন ১বার করে এবং পরে ৩-৪ দিন পর পর ১ বার এই প্যকিটি ব্যবহার করুন।

কেন কাজটি করবেন?

চিনি এবং বেকিং সোডা উভয়ের মিশ্রণে ত্বকের চামড়া উঠা বন্ধ করতে সাহায্য করে। ঠোঁটকে ঠান্ডা এবং বেগুনী করে তুলে। ভ্যানিলা নির্যাস অন্যরকম একটা ফ্লেভার যোগ করে যা আপনার ঠোঁট ফাঁটা বন্ধ করে।

এখন আপনি জানেন, কিভাবে এই শীতে আপনার ঠোঁটকে রক্ষা করবেন, আপনি কি জন্য অপেক্ষা করছেন? এই প্রতিকারের প্রধান লক্ষ্য হল আপনার ঠোঁটকে ফাঁটা থেকে রক্ষা করা এবং মৃত চামড়া দূর করতে সাহায্য করে এবং এটি নীচের নরম চামড়া স্থাপন করে। এই উপাদানগুলো আপনার ঠোঁটকে নরম, মসৃণ করে তুলে এবং স্নিগ্ধতা বজায় রাখে।

Filed Under: Skin Care Ideas

গ্লিসারিন ব্যবহার করার ৪ টি সহজ উপায়

by রূপকথন ডেস্ক Leave a Comment

আপনি কি সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য কোন প্রাকৃতিক উপায় খুঁজছেন? ভাবছেন যদি এমন কিছু থাকতো যা দিয়ে আপনি আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং দীপ্তিময় রাখতে পারতেন? তাহলে আপনি গ্লিসারিনের সাথে গোলাপ জল এবং লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন।

ভাবছেন, কিভাবে এটি আপনার কাঙ্ক্ষিত নিখুঁত ত্বক পেতে সাহায্য করে? জানার জন্য পড়তে থাকুন।

কিভাবে আপনি আপনার ত্বকে গ্লিসারিন, গোলাপ জল এবং লেবুর রস ব্যবহার করবেন?

আপনার ত্বকের জন্য গোলাপজল এবং লেবুর রস দিয়ে গ্লিসারিন ব্যবহার করার বিভিন্ন রকম কার্যকর উপায় রয়েছে।

এখানে কতগুলো কৌশল দেয়া হল যা আপনাকে চমৎকার মিশ্রণ তৈরী করতে সাহায্য করবে।

১.  মেকআপ সেটিং স্প্রে  (Makeup Setting Spray):

আমরা দোকান থেকে যে মেকআপ সেটিং স্প্রে ক্রয় করি সেটি সাধারণত কেমিক্যাল দিয়ে পূর্ণ থাকে। তাই  গ্লিসারিন, গোলাপজল এবং লেবুর রসের মিশ্রণের ব্যবহার করা সবচেয়ে ভাল একটি উপায়, কারণ এটি আপনার ত্বকের জন্য নিরাপদ।

এই স্প্রে তৈরী করার জন্য আপনার যা যা দরকার হবে তা হল :

  • ২০ মি.লি. গোলাপ জল।
  • ২ ফোটা গ্লিসারিন।
  • ১ চা চামচ লেবুর রস।

এবার সবগুলো উপকরণ একসাথে মিশিয়ে নিন এবং একটি স্প্রে বোতলে ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। আপনি এই স্প্রে ৪ সাপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন।

যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয় তাহেল একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল যোগ করুন যাতে আপনার ত্বক পর্যাপ্ত পরিমান পুষ্টি পায়। মেকআপ লাগানোর পরে এই স্প্রেটি ব্যবহার করলে এটি আপনার ফাউন্ডেশন ভেসে উঠা প্রতিরোধ করবে এবং আপনার মেকআপ দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী করবে।

২. ফেশিয়াল ক্লিনজার অথবা স্ক্রাব  (Facial Cleanser/Scrub):

আপনি গ্লিসারিন, গোলাপজল এবং লেবুর রস দিয়ে একটি চমৎকার ফেসিয়াল স্ক্রাব করতে পারেন।

আপনাকে যা করতে হবে তা হল:

  • ১ চা চামচ গ্লিসারিন।
  • ১ চা চামচ লেবুর রস।
  • ১ টেবিল চামচ গোলাপ জল।
  • ১ চা চামচ চিনি।

সবগুলো উপাদান একসাথে মিশিয়ে ভালোভাবে ততক্ষন নাড়তে থাকুন যতক্ষন না পর্যন্ত চিনি পুরোপুরি মিশে যায়। এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে আলতোভাবে ঘষে মুখের মৃত চামড়া তুলে ফেলুন। ঘরে তৈরি এই স্ক্রাব দিয়ে আপনি আপনার মুখের মৃত চামড়া, ধুলো-বালি এবং অন্যান্য দূষিত কণা তুলে ফেলতে পারেন। এই প্যাকটি আপনি আপনার ঘাড়, হাত, বাহু এবং হাঁটুতেও ব্যবহার করতে পারেন।

যখন এটি আপনি নিয়মিত ব্যবহার করবেন, আপনি লক্ষ্য করবেন আপনার শরীরের কালো অংশগুলো আস্তে আস্তে উজ্জ্বল হচ্ছে। আপনি মিশ্রণে একটি তুলা ভিজিয়ে এই তুলা মুখের মেকআপ পরিষ্কার করার জন্য, অতিরিক্ত তেল, ধূলোবালি ইত্যাদি দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

৩. ফেশিয়াল মাস্ক  (Facial Mask):

গ্লিসারিন, গোলাপ জল এবং লেবুর রসের মিশ্রণ একটি চমৎকার মাস্ক তৈরী করে, কারণ এই উপাদানগুলো আপনার ত্বককে যথেষ্ট পরিমান আদ্রতা সরবরাহ করে। এটি মৃত চামড়া তুলে ফেলতে খুব চমৎকারভাবে কাজ করে এবং আপনার ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। মুখের দাগ, বলেরেখা এবং বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। এটি আপনার ত্বকের পিএইচ ব্যালেন্সের (pH balance) ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।

এটি ব্রণ দূর করে এবং ব্রণ-সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে আপনাকে ভবিষ্যতে ব্রণ উঠা থেকে মুক্তি দেয়।

৪. ময়েশ্চারাইজার (Moisturizer):

আপনি ইতিমধ্যে জেনেছেন যে, গ্লিসারিনের ব্যবহার শুষ্ক ত্বককে নমনীয় করার জন্য একটি দুর্দান্ত উপায়, বিশেষ করে শীতকালে জন্য। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে গ্লিসারিনের সাথে গোলাপ জল এবং লেবুর রসের ব্যবহার আপনার ত্বকের অনেক জন্য উপকার আসে এবং এটির সব চেয়ে ভাল দিক হল এটি যেকোন ত্বকের জন্য মানানসই।

এছাড়াও গোলাপজলে ফিনিলেথানল (phenylethanol) রয়েছে, যা সংকোচন সৃষ্টিকারী এবং একটি কার্যকর রোগ প্রতিরোধকারী হিসেবে কাজ করে যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক দাউদ, ব্রণ এবং অন্যান্য চর্মরোগ প্রতিরোধ করে।

আপনি দেখতে পাবেন, আপনার ত্বকে গ্লিসারিন, গোলাপ জল এবং লেবুর রস ব্যবহার করার অনেক উপায় রয়েছে। যখন এটাকে আপনি আপনার প্রতিদিনের রুপচর্চার অংশ হিসেবে ব্যবহার করবেন, তখন আপনি  নমনীয়, উজ্জ্বল এবং দাগহীন ত্বক পাবেন।

গ্লিসারিন, গোলাপ জল এবং লেবুর রস এই উপাদানগুলোর মধ্যে অনেক আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক গুণাবলী রয়েছে যা আপনার ত্বকে বিস্ময়কর প্রভাব ফেলে। যার ফলে বেশিরভাগ সময়ই এগুলো রুপচর্চা করার বিভিন্ন পণ্যে ব্যবহার করা হয়।

সবসময় উজ্জ্বল এবং দীপ্তিময় ত্বক পাওয়ার জন্য গ্লিসারিন, গোলাপ জল এবং লেবুর রসের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

Filed Under: Skin Care Ideas

Primary Sidebar

সাম্প্রতিক লেখা

১৬টি সেরা খাবার সকালবেলার দৌড়ের পর খাওয়ার জন্য – পোস্ট-রান রিকভারি পুষ্টি

ওজন কমাতে সেরা ২০টি ডিটক্স স্মুদি: উপাদান, প্রস্তুতি ও উপকারিতা

সহজে হজম হয় এমন ১৬টি হালকা খাবারের রেসিপি

Low FODMAP Diet: ৩ ধাপের পরিকল্পনা ও কোন খাবার খাবেন, কোনটা এড়িয়ে চলবেন

প্যালিও ডায়েট: উপকারিতা, ঝুঁকি ও ৭ দিনের খাবার পরিকল্পনা

বিভাগ সমূহ

  • Fashion
  • HAIR CARE (চুলের যত্ন)
    • Basic Hair Care (বেসিক হেয়ার কেয়ার)
    • Dandruff (খুশকি)
    • Dry Hair Care (শুকনো হেয়ার কেয়ার)
    • Hair Care Ideas
    • Hair Fall ( চুল পড়া)
    • Hair Growth ( চুল বৃদ্ধি)
    • Hair Treatment (চুল চিকিৎসা)
    • Oily Hair Care ( তৈলাক্ত চুলের যত্ন)
  • HEALTH & WELLNESS (স্বাস্থ্য ও সুস্থতা)
    • Diet Tips
    • Fitness
    • Healthy Food
    • Home Remedies
    • Ingredients and Uses
    • Nutrition (পুষ্টি)
    • Weight Gain
    • Weight Loss (ওয়েট লস)
  • Lifestyle (জীবনযাপন )
  • MAKEUP (মেকআপ)
    • Bridal Makeup (ব্রাইডাল মেকআপ)
    • Eye Makeup (চোখের সাজসজ্জা)
    • Lip Make up (লিপ আপ করুন)
  • SKIN CARE (ত্বকের যত্ন)
    • Acne
    • Anti Ageing
    • Beauty Secrets
    • Dry Skin
    • Face Care Tips
    • Face Packs and Masks
    • Glowing skin
    • Homemade Tips
    • Oily Skin
    • Skin Care Ideas
    • Skin Care Problems
    • Sunscreen
  • Top 10's

Copyright © 2025 · RUP KOTHON · All rights reserved ®