সারা বিশ্ব জুড়ে বেশিরভাগ নারীদের জন্য চুল পড়া একটি বিশাল উদ্বেগের কারন, এবং আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হন তাহলে আপনার জেনে রাখা ভালো যে এই সমস্যা সমাধানের অনেকগুলো উপায় আছে।
কিন্তু একটা মাত্র সমস্যা হল পার্লারে গিয়ে এই সব ট্রিটমেন্ট নেওয়ার মত যথেষ্ট সময় সবার থাকে না। আপনার ব্যস্ত সময়সূচির কারণে আপনার চুলের ট্রিটমেন্টের জন্য সময় বের করা খুব কষ্টকর হয়ে যেতে পারে।
যাইহোক, এখানে আরো অনেক উপায় রয়েছে। চুল পড়া স্থায়ীভাবে বন্ধ ও প্রতিরোধ করার একটি ফলপ্রসূ এবং স্মার্ট পথ হলো ঘরে তৈরি কিছু মাস্ক ব্যবহার করা।
আমরা প্রাকৃতিক ট্রিটমেন্টের কিছু কৌশল একসাথে তুলে ধরলাম যা আপনি আপনার রান্না ঘরের কিছু উপকরণ দিয়ে বানাতে পারবেন।
চুল পড়া প্রতিরোধের কার্যকর হেয়ার মাস্ক
৬. কারি পাতা এবং নারিকেলের হেয়ার মাস্ক
১২. লেবু, ক্রিম এবং গম বীজের তেলের মাস্ক
১৩. শুষ্ক চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক
১৪. স্বাভাবিক চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক
১৫. তৈলাক্ত চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক
১. চুলের জন্য ডিমের মাস্ক
ডিমে প্রচুর পুষ্টি এবং প্রোটিন আছে যা আপনার চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য খুবই ভালো।
ডিম সকল ধরণের চুলে খুব ভালো কাজ করে এবং আপনার চুলে খুব ভালো পুষ্টি প্রদান করে। যার ফলে চুল পড়া কমে।
এছাড়াও এতে প্রচুর ভিটামিন বি আছে যা চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। চুলের বৃদ্ধির জন্য ঘরে তৈরি কার্যকর হেয়ার মাস্কগুলোর মধ্যে এটি একটি।
কিভাবে আপনি আপনার চুলের জন্য ডিমের মাস্ক তৈরি করবেন?
উপকরণ
- ১ টি ডিম
- ১ কাপ দুধ
- ২ টেবিল চামচ লেবুর রস
- ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
প্রক্রিয়া
- ডিম ফাটিয়ে নিন এবং অন্যান্য উপকরণের সাথে মিশিয়ে নিন।
- মিশ্রণটি আপনার চুল এবং স্ক্যাল্পে লাগান।
- একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে দিন এবং আপনার চুলে মিশ্রণটি ২০ মিনিট রাখুন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
বিকল্পভাবে, আপনি শুধুমাত্র ডিম চুলে ব্যবহার করতে পারেন নিচের কয়েকটি ধাপের মাধ্যমেঃ
- কয়েকটি ডিম একসাথে ফাটিয়ে নিন। কুসুম এবং সাদা অংশ ভালোভাবে মিশে না যাওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন।
- আপনার চুল এবং স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।
- ১৫-২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের মাস্কের উপকারিতা
- প্রোটিন এবং অ্যামিনো সমৃদ্ধ, যা চুলে পুষ্টি জোগায়
- উজ্জ্বলতা প্রদান করে
- চুল পড়া কমায়
- চুল বৃদ্ধিতে উৎসাহ জোগায়
২. কলার হেয়ার মাস্ক
কলা পটাশিয়াম, এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রাকৃতিক তেল এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ, যা চুল পড়া রোধের জন্য আদর্শ উপকরণ।
কলা সারা বছর ধরে পাওয়া যায় এবং চুল পড়ার জন্য চমৎকার হেয়ার মাস্ক হিসেবে কাজ করে।
নিচে উল্লেখিত কলার হেয়ার মাস্কগুলো অনুসরণ করে আপনার চুল পড়া রধ করতে পারেন।
ঘরেই কিভাবে আপনি আপনার চুল পড়া রোধে কলার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ২ টি পাকা কলা
- ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
- ১ টেবিল চামচ নারিকেল তেল
- ১ টেবিল চামচ মধু
প্রক্রিয়া
- সব উপকরণগুলো একটি পাত্রে মিশান এবং একটি মশ্রিণ পেস্ট তৈরি করুন।
- মিশ্রণটি আপনার স্ক্যাল্প এবং চুলে লাগান। পুরো মাথা মিশ্রণ দিয়ে ঢেকে ফেলুন।
- ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এখানে আরেকটি হেয়ার মাস্কের রেসিপি দেওয়া হল যেটি কলা এবং বাদাম তেল দিয়ে তৈরিঃ
- কয়েকটি কলা নিন এবং এগুলোর মশ্রিণ পেস্ট করে নিন।
- এই পেস্টে ৫ থেকে ৮ ফোঁটা বাদাম তেল মিশান।
- আপনার চুলে মাখুন। চুল বাধুন এবং একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে এক ঘন্টার জন্য ঢেকে রাখুন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং এরপর একটি হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এরপর অনেক কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
কলার হেয়ার মাস্ক ব্যবহারের উপকারিতা
- আপনার চুলকে উজ্জ্বল করে
- আপনার চুল নরম করে
- খুশকি কমায়
- ক্ষতি হওয়া কমায়
- আপনার চুল ময়েশ্চারাইজ করে
৩. দইয়ের হেয়ার মাস্ক
দই ভিটামিন বি, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি দ্বারা গঠিত, যা এটিকে চুলের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ বানিয়েছে।
কিভাবে দইয়ের হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ১ কাপ দই
- ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার
- ১ টেবিল চামচ মধু
প্রক্রিয়া
- একটি পাত্রে উপকরণগুলো মিশান।
- মিশ্রণটি আপনার চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগান।
- ১৫ মিনিট মাথায় রাখুন, এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
দইয়ের হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- চুল ময়েশ্চারাইজড করে।
- চুলে পুষ্টি জোগায়।
- চুল মজবুত করে এবং চুলের ভাঙন কমায়।
৪. অ্যাভাকাডো হেয়ার মাস্ক
অ্যাভাকাডো ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডে পরিপূর্ণ, যা চুল জন্মাতে উৎসাহ জোগায় এবং চুলের স্বাস্থ্য সুন্দর করে। এতে এ্যান্টি-ইনফ্লেমেটোরি বৈশিষ্ট্য আছে, যা একে স্ক্যাল্পের জন্য আদর্শ করে তুলেছে।
আপনার চুলের গঠন উন্নত করা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য সপ্তাহে এক অথবা দুইবার অ্যাভাকাডো মাস্ক ব্যবহার করুন।
কিভাবে ঘরেই অ্যাভাকাডো হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ১ টি ছোট পাঁকা অ্যাভাকাডো
- ১/২ কাপ দুধ
- ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
- ১ টেবিল চামচ বাদাম তেল
প্রক্রিয়া
- উপকরণগুলো ব্লেন্ড করে মশ্রিণ ঘনত্বের একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।
- চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগান।
- ১৫ মিনিট চুলে রেখে দিন এবং এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
অ্যাভাকাডো হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- আগা ফাঁটা কমায়
- চুল ময়েশ্চারাইজড করে
- কোঁকড়াভাব কমায়
৫. স্ট্রবেরি হেয়ার মাস্ক
আপনার চুল যদি তৈলাক্ত হয়, তাহলে স্ট্রবেরি হেয়ার মাস্ক সবচেয়ে ভালো উপায়। দূষিত লোমকূপের ফলে সৃষ্ট চুল ঝরা কমাতে এই মাস্কটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
চুল জন্মানোর জন্য কিভাবে স্ট্রবেরি হেয়ার মাস্ক বানাতে হবে?
উপকরণ
- ৩-৪ টি তাজা স্ট্রবেরি
- ১ টেবিল চামচ নারিকেল তেল
- ১ টেবিল চামচ মধু_বাদাম
প্রক্রিয়া
- সব উপকরণগুলো একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
- আপনার চুলে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মাস্কটি লাগান।
- ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
স্ট্রবেরি হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- তৈলাক্ততার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে
- লোমকূপ দূষণমুক্ত করে
- চুল মজবুত করে
- চুল পড়া কমায়
৬. কারিপাতা এবং নারিকেল তেলের হেয়ার মাস্ক
কারি পাতায় প্রচুর প্রোটিন এবং বেটা ক্যারোটিন আছে, যা চুল ঝরার বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। নারিকেল তেলের তীব্র বৈশিষ্ট্য এবং এর ফ্যাটি এসিড চেইন একটি সঠিক কম্বো যা চুলের পাতলা হয়ে যাওয়ার বিরূদ্ধে যুদ্ধ করে। এই মাস্কটি ভালো ফলাফলের জন্য সপ্তাহে দুইবার বযবহার করুন।
কিভাবে নারিকেল তেল দিয়ে কারি পাতার হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ১০-১২ টি তাজা কারি পাতা
- ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল
প্রক্রিয়া
- নারিকেল তেলে কারি পাতাগুলো শব্দ না হওয়া পর্যন্ত গরম করুন।
- তেল সহনীয় পর্যায়ের গরম তাপমাত্রায় না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তেলটি আপনার স্ক্যাল্প এবং চুলে লাগান।
- ২০ মিনিটের জন্য মাথায় রাখুন এবং একটি শযাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কারি পাতা এবং নারিকেল তেলের হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- চুল ঝরা কমায়
- চুল ময়েশ্চারাইজড করে
- চুলে পুষ্টি জোগায়
৭. ক্যাস্টর অয়েল হেয়ার মাস্ক
ক্যাস্টর অয়েল প্রোটিন সমৃদ্ধ। এটি স্ক্যাল্প শুষ্ক হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। এটি ক্ষতিগ্রস্থ চুল ঠিক করে এবং চুল পুনরায় জন্মাতে উৎসাহ জোগায়।
কিভাবে ক্যাস্টোর অয়েল হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ২ টেবিল চামচ ক্যাস্টোর অয়েল
- ২ টেবিল চামচ ব্র্যান্ডি (এক ধরণের করা মদ)
- ১ টি ডিম
প্রক্রিয়া
- সব উপকরণগুলো একসাথে মিশান।
- মিশ্রণটি আপনার স্ক্যাল্প এবং চুলে ম্যাসাজ করুন।
- ৩০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন এবং এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ক্যাস্টর অয়েল হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- কোঁকড়াভাব হ্রাস করে।
- চুল জন্মাতে সাহায্য করে।
- চুল পেঁকে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
৮. রোজমেরি হেয়ার মাস্ক
যদি আপনি চুল জন্মানোর জন্য সেরা হেয়ার মাস্কটির সন্ধান করে থাকেন, তাহলে এটিই সেই হেয়ার মাস্ক। অনেক বছর ধরেই চুলের বৃদ্ধির জন্য রোজমেরি ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আছে যা র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং চুলের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
উপকরণ
- ২-৩ টেবিল চামচ ভালোভাবে কুচি করা রোজমেরি
- ১ কাপ পানি
প্রক্রিয়া
- এক কাপ পানিতে কুচি করা রোজমেরি কয়েক মিনিট সেদ্ধ করে নিন।
- পানিটা ছেঁকে নিন এবং ঠান্ডা হতে দিন।
- ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর, লিকুইডটি আপনার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।
- ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
রোজমেরি হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- চুল পুনরায় জন্মাতে সাহায্য করে
- চুল মজবুত করে
- র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
৯. গ্রিন টি হেয়ার মাস্ক
গ্রিন টি এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং র্যাডিকেলের কারণে চুল ঝরা প্রতিরোধের সহজ সমাধান।
কিভাবে ঘরেই গ্রিন টি হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ১ টি ডিমের কুসুম
- ২ টেবিল চামচ গ্রিন টি
প্রক্রিয়া
- উপকরণগুলো একসাথে নিয়ে একটি ক্রিমি গঠন না হওয়া পর্যন্ত মিশান।
- একটি ব্রাশ দিয়ে মিশ্রণটি আপনার চুলে এবং স্ক্যাল্পে লাগান।
- ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- শ্যাম্পু করার আগে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
গ্রিন টি হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- প্রোটিন চুল এবং স্ক্যাল্পে পুষ্টি জোগায়
- চুল ঝরা কমায়
- এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
১০. ভিটামিন ই ক্যাপসুল হেয়ার মাস্ক
ভিটামিন ই তেল এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি এ্যান্টি-ফাংগাল এবং এ্যান্টি-ইনফ্লেমেটোরি বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ যা স্ক্যাল্পকে সুস্থ রাখে এবং চুল ঝরা কমায়। এই মাস্কটি সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
কিভাবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ২ ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- ১ টেবিল চামচ বাদাম তেল
- ১ টেবিল চামচ নারিকেল তেল
- ১ চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল
- কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এ্যাসেন্সিয়াল তেল
প্রক্রিয়া
- সব উপকরণ একসাথে মিশান। আপনি চাইলে বেশি পরিমাণে বানিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন।
- আপনার সম্পূর্ণ চুলে তেলটি লাগান।
- তেলটি সারারাত চুলে রাখুন এবং পরের দিন সকালে শ্যাম্পু ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ভিটামিন ই হেয়ার প্যাকের উপকারিতা
- এ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং এ্যান্টি-ইনফ্লেমেটোরি বৈশিষ্ট্যে স্ক্যাল্প সুস্থ রাখে।
- এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
- গোড়া মজবুত করে।
- চুল পড়া কমায়।
১১. লেবু, ক্রিম এবং গম বীজের তেল
লেবু আপনার কোষ এবং চুল পরিষ্কার করার জন্য উপযুক্ত এবং ধুলাবালি থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি ভালো উপায়।
কিভাবে ঘরে লেবুর হেয়ার মাস্ক তৈরি করবেন?
উপকরণ
- ২ টি লেবু
- ১/৪ কাপ টক ক্রিম
- ১/৪ কাপ গম বীজের তেল
প্রক্রিয়া
- লেবুর রসগুলো বের করে নিন এবং সব উপকরণগুলো একসাথে মিশান।
- মিশ্রণটি আপনার চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগান এবং এক ঘন্টা রেখে দিন।
- কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- কসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং এরপর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার লাগান।
লেবু, ক্রিম এবং গম বীজের তেলের মাস্কের উপকারিতা
- গ্রন্থিগুলো দূষনমুক্ত করে
- জমে থাকা ধুলাবালি দূর করে
- গোড়া মজবুত করে
- বিভিন্ন রকম চুলের জন্য এটি আদর্শ হেয়ার মাস্ক
১২. শুষ্ক চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক
এই হেয়ার মাস্কটি আপনার চুলকে খুবই ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য করে, নরম করে এবং কোঁকড়াভাব কমায়। এটি একটি উপযুক্ত কন্ডিশনিং মাস্ক।
শুষ্ক চুলের জন্য কিভাবে ঘরেই হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ৪ টেবিল চামচ মধু
- ১ চা চামচ বাদামের পেস্ট (৪ টি বাদাম ১/২ টেবিল চামচ গোলাপজল দিয়ে ব্লেন্দ করে নিন)
- ২ টেবিল চামচ ক্রিম
প্রক্রিয়া
- মধু এবং বাদামের পেস্ট একটি পাত্রে একসাথে মিশান।
- ক্রিম সামান্য ফুলে না যাওয়া পর্যন্ত ফাটিয়ে নিন এবং মধু-বাদামের মিশ্রণে মিশিয়ে নিন।
- আপনার চুলে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মাস্কটি লাগান। ৩০ মিনিট পর্যন্ত মাথায় রাখুন।
- ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার চুল ধুয়ে নিন। একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন এবং আপনার চুলকে স্বাভাবিকভাবে শুকাতে দিন।
নোটঃ আপনি ক্রিমের পরিবর্তে দই ব্যবহার করতে পারেন, ফলাফল সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
শুষ্ক চুলের জন্য ঘরে তৈরি হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- চুলকে ময়েশ্চারাইজড করে
- স্ক্যাল্পকে শীতল করে
- স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিতে উৎসাহ প্রদান করে
১৩. স্বাভাবিক চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক
এটি সম্ভবত বানাতে সবচেয়ে সহজ হেয়ার মাস্ক, এবং এটি আপনি এক সপ্তাহ ধরে রেখে দিতে পারবেন। তবে অবশ্যই ফ্রিজে রাখতে হবে। এই মাস্ক চুল থেকে হারিয়ে যাওয়া পুষ্টি ফিরিয়ে দেয়। এছাড়াও এই মাস্ক চুলের কোমলতা পুনরুদ্ধার করে।
উপকরণ
- ১ টি ডিম
- ১ চা চামচ লেবুর রস
- ১ চা চামচ বাদাম তেল
- ১ চা চামচ মধু
- ৪ টেবিল চামচ ফ্ল্যাট বিয়ার
প্রক্রিয়া
- ডিম এর কুসুমটি সাদা অংশ থেকে আলাদা করে নিন এবং বাকি উপকরণগুলোর সাথে মিশান।
- মিশ্রণটি আপনার স্ক্যাল্পে লাগান।
- এখন ডিমের সাদা অংশটির সাথে ৪ টেবিল চামচ ফ্ল্যাট বিয়ার মিশান। ফুলে না উঠা পর্যন্ত ফ্যাটাতে থাকুন।
- এই মিশ্রণটি চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগান।
- একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে আপনার চুল ঢেকে দিন এবং ৩০-৪০ মিনিট আপনার চুলে মিশ্রণটি রাখুন।
- একটি ভালো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন এবং চুল স্বাভাবিকভাবে শুকাতে দিন।
স্বাভাবিক চুলের হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- চুলকে রেশমি এবং ঘন করে
- চুলে উজ্জ্বলতা প্রদান করে
- চুলে পুষ্টি জোগায়
- স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য উন্নতি করে
১৪. তৈলাক্ত চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক
অনেক মানুষ তৈলাক্ত চুলে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে ভয় পায় কারণ তখন হয়ত চুল আরো তৈলাক্ত হয়ে যাবে। তৈলাক্ত চুলের মাস্কের জন্য এমন উপকরণ খুঁজতে হবে যা তেলের নিঃসরণ কমায়, এবং আপনার চুলের পুষ্টিগুণ দূর করে দেয় না। এই হেয়ার মাস্কটি তৈলাক্ত চুলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি এবং নিখুঁতভাবে কাজ করে।
কিভাবে ঘরে তৈলাক্ত চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক বানাবেন?
উপকরণ
- ১ টেবিল চামচ পানি
- ১ চিমটি ফ্রুট সল্ট
- ২ টি আমলকির পেস্ট
- ১ টি ডিমের সাদা অংশ
প্রক্রিয়া
- ডিমের সাদা অংশ ফ্যাটিয়ে নিন যতক্ষণ পর্যন্ত না সাদা অংশ ফুলে উঠে এবং অন্যান্য উপকরণগুলো মিশান।
- চুলে মিশ্রণটি লাগান।
- ২০-৩০ মিনিট চুলে রাখুন এবং ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
- একটি ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন এবং বাতাসে শুকিয়ে নিন।
তৈলাক্ত চুলের হেয়ার মাস্কের উপকারিতা
- চিটচিটে ভাব দূর করে
- চুলকে ঘন করে।
- লোমকূপ ধুলাবালি মুক্ত করে এবং চুল পড়া কমায়
কার্যকর এবং প্রাকৃতিক হেয়ার মাস্কগুলোর মধ্যে এখানে কিছু দেওয়া হল যা আপনি আপনার চুল সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর করে তুলতে সহায়তা করে।