প্রতিদিন সকালে আপনি আপনার চুল ধুয়ে নেন এবং খুব সুন্দরভাবে চুল স্টাইল করে নেন, এবং আপনি প্রস্তুত সারাদিন সুন্দরভাবে থাকার জন্য। কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর আয়নাতে একবার নজর দিলে আপনি অন্য কাউকে আবিষ্কার করবেন। আপনার চুল তৈলাক্ত এবং চিটচিটে হয়ে গেছে, যা দেখে মনে হবে আপনি এর আগে সকালে চুল একবারের জন্য পরিষ্কার করেননি।
এর মানে হলো আপনার চুল তৈলাক্ত। তেলগ্রন্থির কারণে চুলের আগা ভাঙন থেকে রক্ষা পায় এবং আপনার স্ক্যাল্প ভালো অবস্থায় থাকে। নানা রকম কারণে যেমন হরমোনের ঊঠা-নামা, বংশগত কারণ অথবা আপনার চুলের প্রাকৃতিক গঠনের কারণে এই গ্রন্থিগুলো মাত্রাতিরিক্ত তেল নিঃসরণ করে। চিন্তার কোন কারণ নেই। আমাদের কাছে তৈলাক্ত চুলের জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় আছে।
তেলের নিঃসরণ চুলের জন্য ভালো কারণ এটা চুলের গোড়া শক্ত করে কিন্তু অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না, এবং এর প্রমান তৈলাক্ত চুল দেখেই পাওয়া যায়। আর, এই সমস্যা বর্তমান নারীদের অনেক বিরক্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলছে, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রতিযোগীতা করে অনেক পণ্য উৎপাদন করছে যা অতিরিক্ত তেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এদের মধ্যে কয়টা যে কাজ করে তা কেউ বলতে পারেনা।
আজ আমরা আপনাদের কিছু টিপস দিব যা আপনাদের চুলের তেলতেলে ভাব কমিয়ে আনবে এবং আপনার চুল আরো বাউন্সি করবে। নিচে তৈলাক্ত চুলের জন্য ঘরে তৈরি কিছু টিপস দেওয়া হলো।
১. তৈলাক্ত চুলের জন্য শ্যাম্পু
যদি আপনার চুল তৈলাক্ত হয় তাহলে চুল পরিষ্কার এবং তেলতেলে মুক্ত রাখার জন্য প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করাটাই উত্তম।
আপনার তৈলাক্ত চুলের জন্য একটি শ্যাম্পু বাছাই করে নিন। আপনার চুল যদি শুষ্ক হয়, তাহলে চুল ময়েশ্চারাইজড এবং নরম রাখার জন্য একটি পুষ্টিকর কন্ডিশনার শুধুমাত্র আপনার চুলের আগাতে ব্যবহার করুন। যদি আপনার চুলের সাথে সাথে আপনার স্ক্যাল্পও তৈলাক্ত হয় তাহলে শ্যাম্পুই আপনার স্ক্যাল্প এবং চুল দুইটিরই একসাথে যত্ন নেয়। একটি পিএইচ ব্যালেন্স শ্যাম্পু ব্যবহার করুন যা হালকা এবং যা তৈলাক্ত চুলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি।
শ্যাম্পু করার সময় আপনার স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করবেন। আপনার স্ক্যাল্পে লেগে থাকা তেল এবং ধুলাবালি পরিষ্কার করা বাধ্যতামূলক। সবসময় একটি হালকা শ্যাম্পু কিনবেন যা সবসময় ব্যবহার করার জন্য উপযুক্ত।
২. ভালোভাবে ধুয়ে নিন
যখন শ্যাম্পু করবেন, তখন অবশ্যই চুল ভালোভাবে ধুবেন। ভালোভাবে চুলের শ্যাম্পু পরিষ্কার না করলে লেগে থাকা অবশিষ্ট শ্যাম্পু আরো তেল এবং ময়লা বাড়াবে। চুলে কখনোই কোন সাবান বা শ্যাম্পু লেগে থাকতে দিবেন না। আপনার চুলে লেগে থাকা প্রতিটি সাবানের ফেনা ভালোভাবে ধোয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চুলে লেগে থাকা শ্যাম্পু শুধু আপনার চুল তৈলাক্ত এবং চিটচিটেই করেনা, এটি চুলের জন্য খুব ক্ষতিকরও।
৩. প্রতিদিন শ্যাম্পু করুন
তেল নিঃসরণের ফলে ধুলাবালি এবং দূষিত কণা আপনার স্ক্যাল্পে জমে যায়। তাই প্রতিদিন আপনি আপনার চুল শ্যাম্পু করুন। আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে শ্যাম্পুটি খুব রুক্ষ না হয়। কারণ, রুক্ষ প্রকৃতির শ্যাম্পু প্রাকৃতিক তেল তুলে ফেলে যা মোটেও ভালো না। প্রতিদিন শ্যাম্পু করা আপনার স্ক্যাল্পকে সতেজ এবং পরিষ্কার রাখবে। শ্যাম্পু লাগানোর সময় আপনার আঙ্গুল দিয়ে আলতোভাবে স্ক্যাল্প ঘষুন এতে করে স্ক্যাল্পে তেল হওয়ার আর কোন সুযোগ থাকবেনা।
৪. বিশেষ ভাবে বানানো শ্যাম্পু ব্যবহার করুন
তৈলাক্ত চুলের জন্য বিশেষভাবে বানানো শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। স্বাভাবিক চুলের শ্যাম্পুর পিএইচ ৪.৫ এবং ৬.৭ এর ভেতর হয়, কিন্তু তৈলাক্ত চুলের শ্যাম্পুর পিএইচ এর থেকে আরো বেশি হয়।
৫. সপ্তাহে একবার তেল ম্যাসাজ করুন
চুলের যত্নে তেল খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নারিকেল তেলের সাথে বাদাম তেল মিশান। কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল যোগ করুন। স্ক্যাল্প এবং মাথা ম্যাসাজ করার জন্য এই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন। এক ঘন্টার জন্য তেল মাথায় রেখে দিন। একটি ভালো মানের শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন এবং নিশ্চিত করুন আপনি ভালোভাবে আপনার চুল পরিষ্কার করেছেন। তেলের কোন চিহ্ন যাতে থেকে না যায়। এটা আপনার স্ক্যাল্প এবং চুলে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করবে। একই সময়ে, যেহেতু আপনি এই তেল এক ঘন্টার বেশি সময় ধরে রাখতে পারবেন না, তাই এটি আপনার চুলে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। সারারাত চুলে তেল লাগিয়ে রাখবেন না কারণ তখন এই তেল আপনার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
গরম তেলের ট্রিটমেন্ট সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগানো তৈলাক্ত এবং চিটচিটে চুলে খুবই চমৎকার কাজ করে। আমি নিশ্চিত আপনি আশ্চর্য হয়ে বলছেন, কিভাবে? এখানে একটি সহজ কৌশল দেওয়া হল।
- আস্তে আস্তে তেল আপনার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন।
- এরপরে তৈলাক্ত চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
২-৩ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার দিয়েও আপনি চুল ধুতে পারেন অথবা এক মগ পানিতে সাদা ভিনেগার গুলে নিয়ে তা মাথায় লাগাতে পারেন।
এটি আপনার চুলের গোড়া হাইড্রেট করে চুলকে ভালোভাবে কন্ডিশনিং করে। এবং এরপর পরেই চুল ধুয়ে ফেলার ফলে, আপনার চুলের অতিরিক্ত তেল চলে যায় এবং প্রয়োজনীয় পরিমাণ তেল চুলে রয়ে যায়।
৬. অ্যালোভেরা
তৈলাক্ত চুলের জন্য অ্যালোভেরা সবচেয়ে উত্তম প্রাকৃতিক উপায়গুলোর মধ্যে একটি। তার জন্য, ১ কাপ হালকা শ্যাম্পু নিন এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ১ চামচ তাজা অ্যালোভেরা জেল এতে ঢালুন। এটিকে মিশিয়ে নিন এবং একটি বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। এই মিশ্রণটি প্রায় ১ সপ্তাহ ভালো থাকবে। তৈলাক্ততা দূর করতে প্রতিদিন শ্যাম্পুর এই মিশ্রণটি দিয়ে চুল ধুতে হবে।
আপনি একটি কন্ডিশনার বানাতে পারেন তাজা অ্যালোভেরা জেল (অথবা ভালো ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত অ্যালোভেরা জেল) ব্যবহার করে এবং এর সাথে শুধু ১ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার অথবা ২ টেবিল চামচ লেবুর রস অথবা দুইটির প্রতিটি ১ টেবিল চামচ করে মিশাতে হবে। এটা সবধরণের চুলের জন্য খুবই ভালো।
৭. সতর্কভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
আপনার চুলের শুধুমাত্র অগ্রভাগেই কন্ডিশনার ব্যবহার করুন, যদি চুল শুষ্ক হয় তাহলেই ব্যবহার করুন। কন্ডিশনার তৈলাক্ত চুলে ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয় না কারণ এরা চুলকে কোট করে ফেলে। অর্থাৎ, কন্ডিশনারে ময়েশ্চারাইজার থাকে। এই ময়েশ্চারাইজার শুধু চুল তৈলাক্ত এবং চিটচিটে করে তুলে।
৮. সিরাম এবং গ্লসি জেল পরিহার করুন
তৈলাক্ত চুলের একটি প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আছে। তাই চুলে উজ্জ্বল সিরাম এবং গ্লসি জেল ব্যবহার করা পরিহার করুন। এগুলো আপনার চুলের জন্য প্রয়োজনীয় না। এগুলো শুধু আপনার চুলে সমস্যা বাড়াবে।
৯. চুলে অতিরিক্ত ব্রাশ করা থেকে বিরত থাকুন
আপনার চুল অতিরিক্ত ব্রাশ করবেন না। কারণ যতবার আপনি চুল ব্রাশ করবেন ততবার আপনার স্ক্যাল্প থেকে তেল নিঃসরণ হবে।
১০. স্ক্যাল্প নখ দিয়ে আঁচড়ানো অথবা ঘষবেন না
কখনো খুব জোরে তোয়ালে স্ক্যাল্পে ঘষবেন না অথবা নখ দিয়ে আঁচড়াবেন না। এটা আপনার স্ক্যাল্পে ক্ষত, তৈলাক্ত খুশকি অথবা তেল গ্রন্থিকে আরো তেল নিঃসরণে উৎসাহিত করতে পারে।
১১. অতিরিক্ত তেল অপসারণে বেবী পাউডার
আপনার যদি খুব তাড়া থাকে যার কারণে চুল ধোয়ারও সময় হচ্ছে না, তাহলে কিছু বেবী পাউডার ছিটিয়ে দিন। ৫ মিনিট এটিকে বসতে দিন এবং ভালোভাবে চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে নিন। পাউডার অতিরিক্ত তেল শুষে নিবে এবং আপনার চুলে ভালো সুগন্ধ দিবে।
১২. ভিনেগার এবং লেবুর রসের মিশ্রণ
চিটচিটে ভাব দূর করার আরেকটি উপায় হল শ্যাম্পু করার পর ভিনেগার এবং লেবুর রসের মিশ্রণ দিয়ে চুল ধুয়ে নেওয়া। এর জন্য, ২ টেবিল চামচ সাদা ভিনেগার অথবা একটি লেবুর রস এক কাপ পানির সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। শ্যাম্পু করার পর, এই মিশ্রণটি দিয়ে চুল অবশ্যই ধুতে হবে এবং এর পরে কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল আরেকবার ধুয়ে নিতে হবে।
১৩. চা
শ্যাম্পু করার পর চুল চা এর মিশ্রণ দিয়েও ধোয়া যাবে। চাতে ট্যানিক এসিড আছে যা এ্যাস্ট্রিনজেন্ট হিসেবে কাজ করে, তৈলাক্ততা কমায়। এক গ্লাস পানিতে চা পাতা সিদ্ধ করে নিন। যখন এটি কুসুম গরম হবে, তখন চায়ের পানিটা স্ক্যাল্প এবং চুলে লাগান এবং কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিন। পানি এবং শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
১৪. পুদিনা
পুদিনা পাতাও চুলের তৈলাক্ততা দূর করতে ব্যবহার হয়। একমুঠো পুদিনা পাতা দুই গ্লাস পানিতে ১৫-২০ মিনিটের জন্য ফুটিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি শ্যাম্পুতে মিশান এবং আপনার চুলে লাগান। পুদিনাতে এ্যাসট্রিনজেন্ট আছে যা চুলে লাগালে অতিরিক্ত তেল দূর করে।
১৫. ডিমের কুসুম এবং লেবুর রসের মাস্ক
অতিরিক্ত তৈলাক্ততা দূর করার আরেকটি উপায় হল ডিমের কুসুম ব্যবহার করা। এটা শুধু তৈলাক্ততা দূর করে না, এটা চুলে উজ্জ্বলতাও প্রদান করে। এটি তৈরি করতে দুইটি ডিমের কুসুম নিন; কয়েক ফোঁটা লেবুর রস এতে ঢালুন এবং একসাথে ফাটিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি আপনার ভিজা চুলে লাগান এবং ৫-৭ মিনিট রেখে দিন। এরপরে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। চুলের তৈলাক্ততা থেকে মুক্তি পেতে একজনকে এই মিশ্রণটি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে হবে।
১৬. ওটমিল
ওটমিল তৈলাক্ত চুলের জন্য খুব ভালো। এটি ঘন হওয়ার কারনে স্ক্যাল্পের তেল শুষে নেয় এবং চুলকানি কমায়। এটি তৈরি করতে, ওটমিল তৈরি করুন এবং যখন এটি ঠান্ডা হবে স্ক্যাল্পে লাগান এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর যথারীতি শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।
১৭. বেকিং সোডা
চিটচিটে ভাব দূর করার আরেকটি উপায় হলো বেকিং সোডা। কিন্তু এটির তরল রূপ ব্যবহার করা উচিত। বেকিং সোডা চুলের চিটচিটে ভাব হওয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। দুই থেকে তিন টেবিল চামচ বেকিং সোডা এক লিটার পানিতে মিশান। এই তরলটি আপনার চুলে লাগান এবং ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর সবসময়ের মত শ্যাম্পু করে ফেলুন। তৈলাক্ত চুলের এই ট্রিটমেন্টটি প্রতি সপ্তাহে তিনবার করতে পারেন।
১৮. মেহেদি ট্রিটমেন্ট
আপনার চুল কন্ডিশনিং করতে মেহেদি ব্যবহার করুন। মেহেদিতে শুষ্কতার প্রভাব আছে, যা তৈলাক্ত স্ক্যাল্পের জন্য উপযুক্ত। আপনার মেহেদি প্যাকে দই মিশিয়ে নিন। দুই সপ্তাহ পরপর একবার মেহেদি ব্যবহার করুন।
১৯. সঠিক খাবার গ্রহণ করুন
যতটা সম্ভব তৈলাক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকুন। মনে রাখবেন, আপনি যেই খাবার গ্রহণ করবেন তার প্রভাব আপনার চেহারা এবং শরীরের উপর পরবে। ডুবো তেলে ভাজা খাবার খাওয়া অথবা ফাস্টফুড দোকানের খাবার আপনার স্ক্যাল্পের অবস্থা আরো খারাপ করে তুলে। ফ্রেঞ্চফ্রাই, চিপস এবং বার্গারের পরিবর্তে তাজা ফল এবং সবজি খাওয়া শুরু করুন। আপনার প্রতিদিনের খাবারে বাদাম, খেজুর, কিশমিশ এবং জাম রাখুন। ক্যানড এবং প্রক্রিয়াজাত অথবা বায়ুভর্তি পানীয় পানের পরিবর্তে তাজা ফলের রস পান করুন।
২০. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
পানি আপনার শরীর থেকে জীবাণু এবং দূষণ নিঃশেষিত করতে সাহায্য করে। একটি স্বাস্থ্যকর স্ক্যাল্প এবং চুল পেতে প্রচুর পানি পান করুন।
২১. লেবু
লেবু তৈলাক্ত চুলের মানুষের জন্য জীবন রক্ষাকারী হিসেবে কাজ করে। এই লেবু ব্যবহারের জন্য, দুইটি লেবুর রস বিশুদ্ধ পানিতে মিশান এবং সংরক্ষণ করে রাখুন। প্রতিবার চুল ধোয়ার পর, আপনার চুল হালকা শুকিয়ে নিন এবং এই সল্যুশনটি দিয়ে আপনার চুল এবং স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করুন। ৫ মিনিট মাথায় রেখে দিন এবং ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
২২. ঘামানোর পর শ্যাম্পু করুন
যদি আপনি সব সময় কাজ করেন তাহলে আপনার চুলে ঘাম থাকতে দিবেন না। কাজের পর অবশ্যই শ্যাম্পু করে ফেলবেন।
২৩. ঝুটি আলগা করে বাধুন
কিছু মানুষের অভ্যাস আছে চুল সবসময় খুব শক্ত এবং টানটান করে ঝুটি বেঁধে রাখার। আপনি যত আপনার চুলের গোড়াতে চাপ দিবেন, আপনার চুল তত তৈলাক্ত হবে কারণ এটি গোড়ার গ্রন্থিগুলোকে আরো উত্তেজিত করে তুলে। এটি এড়ানোর জন্য মাঝে মাঝে আপনার চুল আলগা করে বাঁধুন।
খুশকিযুক্ত তৈলাক্ত চুলের জন্য ঘরে তৈরি উপায়
তৈলাক্ত চুলের কারনে সৃষ্ট খুশকিযুক্ত স্ক্যাল্প থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এখানে আরো কিছু ঘরে তৈরি রেসিপি দেওয়া হলো।
২৪. লেবু
আবার লেবুর কথা বলা হচ্ছে, কারণ খুশকিযুক্ত এবং ময়লা স্ক্যাল্পের চিকিৎসা করার জন্য লেবু সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং পরীক্ষিত পদ্ধতি।
এটি ব্যবহার করতেঃ
- গোসলের আগে একটি লেবুর অর্ধেক আপনার স্ক্যাল্পে ঘষে নিন।
- ১০-১৫ মিনিট এটি মাথায় রাখুন।
- শ্যাম্পু দিয়ে আপনার চুল স্বাভাবিক নিয়মে ধুয়ে নিন।
- এই উপায়টি মাঝে মাঝে ব্যবহার করবেন।
২৫. চা পাতা এবং লেবুর রস
খুশকি দূর করার জন্য চা পাতা এবং লেবুর রস আরেকটি ভালো উপায়। এটি উজ্জ্বল চুল পাওয়ার জন্যও উত্তম।
এটি বানাতেঃ
- শুকনো চা পাতা পানিতে সিদ্ধ করে নিন।
- চা পাতা থেকে পানিগুলো ছেকে নিন এবং পানি পুরোপুরি ঠান্ডা করে নিন।
- একটি লেবুর অর্ধেক এই পানিতে মিশান।
- স্ক্যাল্প এবং চুলে মিশ্রিত পানি লাগান এবং এক ঘন্টা রেখে দিন।
- আপনার চুল স্বাভাবিক নিয়মে ধুয়ে ফেলুন।
২৬. লবণ
সাধারণ লবণ খুশকি এবং স্ক্যাল্পের শুকনো আলগা চামড়া তুলে ফেলে।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
- গোসলের আগে আপনার শুকনো স্ক্যাল্পে লবণ ম্যাসাজ করুন।
- এরপর আপনার চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
২৭. আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগার আমাদের রান্নাঘরের এমন একটি উপকরণ যা প্রায় সবকিছুর জন্য দরকারী। এটি খুশকি দূর করতে খুবই কার্যকরী।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
- ১/৪ কাপ আপেল সিডার ভিনেগার এবং এক কাপ পানি দিয়ে একটি সল্যুশন তৈরি করুন।
- এই সল্যুশনটি দিয়ে আপনার স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করুন।
- গোসল করার সময়ও এটি আপনার মাথায় রেখে দিন।
- গোসল শেষে বের হয়ে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে আপনার চুল ধুয়ে নিন।
- পুরোপুরি খুশকি দূর করতে এটি পুরো এক সপ্তাহ প্রতিদিন ব্যবহার করুন।
আপনার স্ক্যাল্পে সবচেয়ে মানানসই এমন উপায়টি বেছে নিন এবং তৈলাক্ত চুলের সমস্যার কথা পুরোপুরি ভুলে যান।
আশা করি তৈলাক্ত চুলের জন্য ঘরে তৈরি কৌশলের এই আর্টিকেলটি আপনাকে তৈলাক্ত চুলের সমস্যার সাথে যুদ্ধ করতে সাহায্য করবে।