খোশ আমদেদ মাহে রমজান। যে মাসটির তাৎপর্য রয়েছে সারা জাহানের সকল মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে। ইবাদাত, পবিত্রতা অর্জন এবং তা রক্ষার যে তাগিদ এ মাসে দেখা যায় তা অন্যান্য মাসে কিছুটা হলেও বিরল দৃশ্যে রূপ নেয়, অর্থাৎ দেখা যায় না। ঠিক তেমনি, অন্যান্য মাসে যে অনভ্যস্ততায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে মানুষ, এ মাসে তাও হয়ে ওঠে না। তার উপর শারীরিক কিছু ধকল তো আছেই।
সব মিলিয়েই কিছু নিয়ম যোগ হওয়া, আর কিছু অভ্যেস সুযোগের অভাবে বাদ হয়ে যাওয়া এই মাসটায় কিছুটা আলসেমি, সময়ের অভাব, কাহিল কিংবা দূর্বলতার কারণেই শরীর সহ ত্বকটা কিছুটা হলেও অনাদরেই পড়ে যায়। আজকের লেখন এর বিষয় এ নিয়েই।
প্রসঙ্গ নিয়ে স্বল্প আলাপনঃ
রমজান মাস। বছরের পবিত্রতম এই মাসটিতে খাওয়ার পরিমাণ এবং সময়ে থাকে বড্ড হেরফের। প্রাত্যহিক যে নিয়মে আমাদের দেহ ঘড়ি চলে, সেই নিয়মের দুনিয়ায় চলে আসে আকাশ-পাতাল পরিবর্তন। ভোর রাতের সাহরি আর সন্ধার সময়ে ইফতার। মাঝের এই দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকাটা অতটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও পানি পান না করে থাকাটা কিন্তু আসলেই সমস্যার একটি বিষয়।
এটা আপনারা জানেন, আমরা যতই খাই, আসল কাজ কিন্তু করে পানি। আর রমজান মাসে এই পানির ঘাটতিই দেখা দেয় বেশি। যার ফলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, একই সাথে ত্বকের নানান সমস্যাও দেখা দেয়। আর এ কারণেই রমজান মাসে শরীর সুস্থ রাখার সাথে সাথে নিজের ত্বকের দিকেও একটু মনযোগী হতে হবে বইকি।
প্রয়োজন কিছু যত্নের। যে যত্ন ত্বকের নিস্তেজ এবং শুষ্কতা দূর করে দিয়ে স্বাস্থ্যকর, কোমল, উজ্জ্বল করে তুলবে। আর যেহেতু এবারের রমজান মাসটা ভরা চৈত্রে পালন করতে হচ্ছে এবং হবে, তাই দরকার সতর্কতার সাথে সচেতনতা। কারণ আপনার সুস্থতা দরকার। ইবাদাতে মনযোগী হতে গেলেও সুস্থতা আবশ্যক। হোক তা শরীরের কিংবা ত্বকের।
রমজানে করণীয়ঃ
কিছু অভ্যেসের আমদানি করতে হবে। অভ্যেসের আমদানির কারণ আপনার সুস্থতা, আপনার শরীর ও ত্বকের সুস্থতা। এ কারণে একটু জানয়ে দতে চাই চলমান এই রমজানে কী করবেন আর কী করবেন না। প্রথমেই জানিয়ে দেই, কী কী করবেন না।
এই রোজায় যা যা মোটেও করবেন না
মেইক আপ!
ইবাদাতের মাস। অযু সমেত পাক পবিত্রতা বজায় রাখার পুরো উলটো কাজ হচ্ছে মেইক আপ। বুঝিয়ে বলছি-
স্বাভাবিকভাবে ভাবুন। দীর্ঘসময় পানিহীন থাকার দরুন আপনার ত্বকে এটা স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে যে, পানির ঘাটতি আপনার শরীরে বিদ্যমান। সেখানে মেইকআপের মতো কৃত্রিম কিছু প্রসাধনীর ব্যবহার আপনার ত্বকের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য মোটেও প্রযোজ্য নয়। শীতকালে রূক্ষ হয়ে যাওয়া ত্বকের উপর পাওডার মাখালে যেমন ভেসে ভেসে থাকে, এই রমজানে মেইকআপও তেমনি ভেসে ভেসে থাকে। যে কারণে কোন ধরণের শুষ্ক প্রসাধনী ব্যবহারে যাবেন না। এগুলো ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে।
ভাজা পোড়া খাবার!
চৈত্রের রোদের বৈশিষ্ট্য কী জানেন? এর কড়া তেজ! মানে প্রখর রোদ। এই রোদে মশলাদার, তেলে ভাজা খাবার খেতে ভালো লাগে? না-কি লাগার কথা বলুন তো? আপনি যতটা তেলে ভাজা খাবার কিংবা মশলাদার খাবার খাবেন, অতটা হজম হতে প্রচুর পানির দরকার হয়। এতে চাপ পড়ে কিডনি আর পাকস্থলীর উপর কারণ এই পানি আর খাবার এর প্রক্রিয়া এরাই করে থাকে।
খেয়াল করে দেখবেন, গরমকালে উচ্চ প্রোটিন, তেলে ভাজা, মশলাদার খাবার খেয়ে আপনার মোটেও স্বস্তি হবে না। বরং এক ধরণের অজানা অস্বস্তিতে দিনভর ভুগতে থাকবেন একই সাথে ক্লান্তিতে ছেয়ে থাকবে পুরো শরীর। এছাড়াও তেলে ভাজা খাবারগুলো কিন্তু ত্বকের নানারকম সমস্যার কারণ।
আদ্রতা!
রমজান মাসে অতিরিক্ত রোদ কিংবা ঠাণ্ডা দুটোই আপনার ত্বকের জন্য ভিষণ রকমের ক্ষতিকর। অতিরিক্ত রোদে অনেকের হিটস্ট্রোক হওয়ার ঘটনা বিরল নয়। আবার অনেকক্ষণ এসির মধ্যে থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রাও অসহ্যকর হয়ে উঠতে পারে।
ঘুমত্যাগ!
অনেকের বদভ্যাস আছে রাত জাগার। রাতটা জেগে কাটিয়ে সাহরিতে কোনমতে খেয়ে, কোন রকমের একটু ঘুম দিয়েই সকালে হয় ক্লাশে ছোটা নয় কর্মস্থলে ছোটা! ফলশ্রুতিতে চোখের তলে কালি, চোখ ফোলা, চেহারায় তেলতেলে বিধ্বস্ত ভাব লক্ষ্যনীয়।
এই রোজায় যা যা করবেন!
কী কী করতে পারবেন না, সেই তালিকা তো জানা হলো। এবার একটু জেনে নেওয়া দরকার এই দাবদাহে রোজা রেখে কী কী করতে পারবেন এবং করবেন। তো চলুন জেনে নেই –
পানি!
পানির বিকল্পই নেই, বিশ্বাস করুন। সারাদিন পানি ছাড়া, ভাবা যায়? সেখানে ইফতার বলুন কিংবা সাহরি, পানি এবং পানি জাতীয় খাবারের ব্যবস্থা রাখাই হবে সবচেয়ে ভালো উপায়। চেষ্টা করবেন ইফতারের পর থেকে সাহরি পর্যন্ত ২.৫-৩ লিটার পানি খেতে।
ডাবের পানি, লেবুর শরবৎ কিংবা আপনার সাধ্য অনুযায়ী যে-কোন ফলের জুস বানিয়ে নিতে পারেন। খেতে পারেন ফল, সালাদ, সবজি, শাক। এগুলো শরীরে পানি ধরে রাখে। শরীরে পানির প্রবাহ ঠিক থাকলে ত্বক সুস্থ থাকে আর এতে করে ত্বকের নেতিয়ে পড়াটা কমে আসবে।
খাদ্যতালিকা!
রমজান মাস। ইবাদাতের এই মাসটায় ইবাদাত নিয়ে মাথা ঘামানোটাই বেশি জরুরি, তাই না পাঠক? কিন্তু আমাদের অনেকেই এই সময়টায় ভুড়িভোজে মেতে ওঠেন। এই বিষয় থেকে একটু সরে আসা প্রয়োজন আছে। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, আপনি যত ভারি খাবার খাবেন আপনার শরীরের তত পরিশ্রম হবে সেটা হজম করার জন্য।
এজন্য সহজপাচ্য কিছু খাবার বরাদ্দ রাখুন সাহরি আর ইফতারের জন্য। আঁশযুক্ত খাবার রাখুন তালিকায়। এ ধরণের খাবার শরীর, ত্বক দুইএর জন্য বিষম উপকারি। অন্ত্র তো ভালো থাকেই, সেই সাথে ত্বকেও দারুণ পুষ্টি জোগায়। ফল (হোক তা দেশি বা আপনার সাধ্য অনুযায়ী), বাদাম, খেজুর, সবুজ ও রঙিন শাক-সবজি রাখুন তালিকায়। এগুলো আপনার শরীরকে ঠিক রাখতে একদম যথেষ্ট। খেতে পারেন সেদ্ধ করা খাবার। বিশেষ করে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই যুক্ত সবজি।
আরেকটা তথ্য দেই, দুধ খাওয়ার অভ্যেস থাকলে সাহরিতে এবং ইফতারে দুধ খেতে পারেন। দুধ খাওয়াতে সমস্যা মনে হলে দই খেতে পারেন। এটা খুবই উপকারি। এই গরমে দই আপনার জন্য শান্তির পাশাপাশি স্বস্তিদায়ক একটা খাবারই হবে বটে! প্রোটিন তো পাবেন, একই সাথে সারাদিনের কর্মশক্তিও পাবেন।
পরিধেয় বস্ত্র হোক সুতির!
গরমের তেজ দেখেছেন? গোসল করে বের হলেও এই তেজে শরীর আবার ঘেমে নেয়ে ওঠে। কি তাই তো? এই অতিরিক্ত গরম, সাথে তীব্র এবং অসহনীয় জ্যাম, তার উপর সিয়াম পালন করে দীর্ঘ সময় থাকাটা ধকলের বিষয়ই বটে। এই গরম, এবং এর ফলে হওয়া অতিরিক্ত ঘাম দুটোই কিন্তু শরীর এবং ত্বকের জন্য বেশ খারাপ।
আবার শুধু ঘাম বের হয়েই ক্ষান্ত নয়, ঘামাচি সমেত কিছু ফোঁড়া, চর্মরোগও দেখা দেয় অনেকের। বিশেষ করে যারা কর্মজীবী আছেন। এই গরমে যাদের বের হতে হচ্ছে বাইরে। তারা একটু সচেতন থাকবেন। অবশ্য এই রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খোলা আছে। তাই কর্মজীবী সমেত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। মূলত, বাইরে যারা বের হচ্ছেন তাদের সবার ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো খাটে। আর তাই, সমাধান আবশ্যক। সমাধান আপনার পরিধেয় বস্ত্রে। সুতি ব্যবহার করুন। শরীর সতেজ থাকবে।
ত্বক কথন!
দীর্ঘসময়ের সিয়াম পালনে শরীরের যে অংশটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দৃষ্টিগোচর হয়, তার নাম ত্বক। আমরা হয়তো হাল ছেড়েই দেই, একটা মাসের ব্যাপার বলে। কিন্তু যখন আপনি ঠিক করবেন নিজেকে যত্নে রাখবেন তখন এই যত্নের ব্যপ্তিকাল সারা বছরের জন্যই হওয়া চাই। তাই না? একটু প্রয়োজন আছে যত্নের। আর এ জন্যই ঘরোয়া কিছু বিষয় জানিয়ে দিচ্ছি-
ময়েশ্চারাইজার!
ত্বক কী পরিমাণে শুষ্ক হয়ে থাকে, এ তো এতদিনের সিয়াম পালনে আপনারা ইতোমধ্যে জেনে গিয়েছেন। মেইকআপও বেমানান এই শুষ্ক ত্বকে। তবে করণীয় কী বলুন তো? ময়েশ্চারাইজার! জি, এটাই একমাত্র জিনিস যা আপনার ত্বককে সজীব রাখবে। ত্বক ভালো করে ভিজিয়ে নিয়ে তবেই ময়েশ্চারাইজার মাখাবেন।
অথবা গোসলের পর মাখাতে পারেন। কিংবা বাইরে বের হওয়ার আগে মাখিয়ে নিতে পারেন। আবার ফিরে এসে ভালো করে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার মাখয়ে রাখতে পারেন। ত্বক উজ্জ্বল তো থাকবেই, সেই সাথে শুষ্কতাও অতটা কাবু করতে পারবে না।
এখন একটা ব্যাপার, কোন ময়েশ্চারাইজার মাখাবেন! বাজারে তো অভাব নেই। অলিভ ওয়েল মাখাতে পারেন। এটা খুবই ভালো ময়েশ্চারাইজার। ধরুন, অলিভ ওয়েল নেই আপনার। কী করবেন? নারিকেল এর খাটি তেল মাখাবেন। সবচেয়ে উৎকর্ষ ময়েশ্চারাইজার কিন্তু এই নারিকেল তেলই।
ঘুমের বিকল্প নেই!
রমজান মাস মানেই ঘুমের সেই রকমের হেরফের। এই রাত জাগা, দিনে ছোটা, এই করে ঘুমের যে দফারফা হচ্ছে তা কিন্তু আমলে নিচ্ছে না কেউই। হয়তো কেউ নিচ্ছে কিন্তু সংখ্যাটা খুব কম, নগন্য। মোট কথা, ঘুমাবেন। রাতেই ঘুমাবেন। দিনের ঘুমের চাইতে রাতের ঘুমটা ঢের ভালো।
কারণ আমাদের শরীরের যে ক্ষয়ক্ষতিগুলো হয়, সেগুলো রাতেই পূরণ হয়। আর রাত ৯ টার পর থেকে যে ঘুম হয়, সে ঘুমের এক ঘন্টা মাঝরাত কিংবা দিনের ৩ ঘন্টা ঘুমের সমান। সুতরাং বুঝতেই পারছেন! ১০ টার মধ্যে যদি আপনি ঘুমিয়ে যেতে পারেন, ৩ টার মধ্যে এমনিতেই উঠতে পারবেন। ঝরঝরে একটা অনুভূতি নিয়ে তাহাজ্জুদ পড়বেন কিংবা সাহরি যখন খাবেন, তখন যেই প্রশান্তি অনুভব করবেন সেটা কিন্তু রাতে না ঘুমিয়ে একদমই পাবেন না। সুতরাং ঘুমাতে হবে। ৮ ঘন্টা কমপক্ষে।
গোসল করুন!
শীতকালে ঠাণ্ডার ভয়ে গোসল বাদ দেওয়া জাতি আমরা, তাই না? আচ্ছা গরমে ক’বার গোসল করি? কমপক্ষে দুইবার গোসল করুন। সকালে, রাতে। বাইরে যারা বের হোন, তারা বের হওয়ার আগে গোসল করে বের হবেন।
বাসায় ফিরে এসে আবার গোসল করবেন। এতে করে এই দাবদাহে রোজার কারণে ক্লান্তিটা আপনাকে অতটা স্পর্শ করবে না। এবং ত্বকটাও পরিষ্কার থাকবে। আর একটা বিষয় মনে করিয়ে দেই, গোসল করে ময়েশ্চারাইজার মাখাতে ভুলবেন না।
যত্ন নিন ঠোঁটের!
শীতকালে ঠোঁট শুকিয়ে যায়, এ তো জানা কথা। লিপবাম, লিপস্টিক, কতকিছুই তো মাখিয়ে রাখি। আচ্ছা এই রোজায় ঠোঁট শুকালে কী করেন? রোজাভঙ্গের ভয়ে অনেকেই কিছুই মাখাতে চান না ঠোঁটে। ফলে কী হয় জানেন? ঠোঁট ফেটে চৌচির!
অনেকের তো রক্তও বের হয় ঠোঁট দিয়ে। ভয়ংকর বিষয় না এটা? একটু ভিজিয়ে নিয়ে আলতো করে তেল কিংবা ভেসলিন মাখিয়ে রাখলে ক্ষতি নেই। এটা তো আর খাওয়ার জিনিস নয় যে আপনি খেয়ে নিবেন, তাই না?
আরোও কিছু টিপস!
ত্বক সতেজ রাখার জন্যই তো আয়োজন আমাদের। আর এই সতেজতা আসবে যত্নে। যত্ন নিতে প্রয়োজন প্রাকৃতিক কিছু বিষয়ের যা টিপস আকারে দিচ্ছি। ঘরোয়া উপকরণও বলতে পারেন। একটু দেখে নিন-
★ এই ঋতুতে পাকা পেপে কিন্তু দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। ধরুন ইফতার কিংবা সাহরির জন্যই আপনি কাটছেন। একটুখানি নিয়ে একটু পিষে নিন। মুখে, গলায়, হাতে পায়ে মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। পাকা পেপে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
আপনি চাইলে আরও কিছু উপকরণ বাড়াতে পারেন। পাকা পেপের সাথে কিছুটা লেবুর রস আর চালের গুড়া মিশিয়ে একটা মিশ্রণ বানাতে পারেন। এটা মুখে মাখিয়ে ২০ মিনিট রেখে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। ত্বক উজ্জ্বল হবে। নেতিয়ে পড়া ত্বকে জৌলুশ দেখতে পাবেন।
★ ত্বকে মাখাতে পারেন দুধ। অথবা দুধ আর গোলাপজলের মিশ্রণ। ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করে এই মিশ্রণটি।
★ আপনার কাছে চন্দন কাঠের গুড়া থাকলে এই মিশ্রণটি প্রয়োগ করতে পারেন।
কিছুটা চন্দন গুড়া, হলুদ গুড়া আর গোলাপ জল মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে মাখাবেন। এটা ব্রনের জন্য খুব উপকারি। ব্রনের দাগও দূর করে এই মিশ্রণ। নিয়মিত না হলেও সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করতেই পারেন।
★ শুষ্ক ত্বক যাদের, তারা টমেটো, পাকা কলা, শশা আলাদা আলাদা ভাবে অথবা ৩ টা একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে মাখাবেন। ১৫-২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন।
★ বাসায় পেয়াজু, বেগুনি কিংবা আলুর চপ তো হয়? বা না হলেও, মশুরের ডাল আর বেসন তো থাকার কথা, তাই না? মিহি করে ডাল বেটে মুকজে মাখিয়ে রাখবেন। ত্বকের ময়লা দূর করে ডাল ও বেসন। শুষ্কভাবও দূর করে দিয়ে কোমল আর সজিব করে তোলে।
★ এই পয়েন্টটি তাদের জন্য যাদের রোজ বের হতে হচ্ছে এই গরমে। রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বকের জন্য একটা অসাধারণ তথ্য দিচ্ছি। বেকিং পাওডার কিংবা বেকিং সোডার সাথে আপনারা পরিচিত আছন। কিছুটা পানির সাথে এই পাওডার গুলিয়ে নিন। একটা পরিষ্কার কাপড় ঐ পানিতে ভিজিয়ে নিন। এখন এই কাপড় দিয়ে রোদে পোড়া জায়গাগুলো আলতো করে মুছে নিন। কয়েকদিন বাদে নিজেই পার্থক্য লক্ষ্য করুন।
★ রমজানে চোখের নিভে গর্ত হয়ে যাওয়া সহ চোখের নিচে কালি জমাটা খুবই সাধারণ একটা বিষয়। আলু এবং শসার রস মাখাবেন কালি পড়ে যাওয়া জায়গায়।
★ ত্বকের পাশাপাশি চুলও কিন্তু রুক্ষ হয়ে যায়, খেয়াল করেছেন? সপ্তাহে অন্তত ২ দিন তেল লাগান। রুক্ষতা কমবে।
★ এই গরমে অনেকের চুল কিন্তু খুব ঘামে। একই সাথে ঘেমে যায় মাথার ত্বক। এক্ষেত্রে লেবুর খোসা পেস্ট করে মাথায় মাখাবেন, চাইলে কিছুটা আদা দিতে পারেন। কিংবা লেবুর রস মাথায় মাখাতে পারেন। এই মিশ্রনটিকে মাথায় ১ ঘন্টা রেখে ধুয়ে নিবেন শ্যাম্পু দিয়ে। এটা চুল এবং মাথার মধ্যে থাকা ফাংগাল ইনফেকশন দূর করে।
★ অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে যাওয়া চুলে পাকা কলা মাখাতে পারেন। এটা চুলের সতেজতা ফিরিয়ে আনে।
একটা বিষয় খেয়াল করেছেন? আপনি মুখে বা চুলে যাই মাখুন না কেন, তা ধুতে নিতে ঠাণ্ডা পানির কথা বলা হয়েছে। এই ঠাণ্ডা পানি মোটেও বরফ মেশানো পানি নয়। বরং ঘরোয়া তাপমাত্রায় থাকা স্বাভাবিক পানি। অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা কোন পানিই কিন্তু আমাদের ত্বক কিংবা চুলের জন্য ভালো নয়। চলমান রমজান ভালো কাটুক সবার, সুস্থতায় আর সজীবতা থাকুক বিশ্ব।