ক্ষুদ্র মানব শিশু! জগতের সবচেয়ে রহস্যময় অথচ অপূর্ব এক সৃষ্টি। গড়নে নিখুঁত। সময়ের পরিক্রমায় বয়স বাড়তে বাড়তে যখন তারুণ্য পেরিয়ে একটু আগায় তখনই যেন কিছু ‘না শুনতে চাওয়া’ শব্দেরা চারপাশ থেকে বিদ্ধ হতে থাকে কানে। অনেকটা জানান দেয় ঘরে থাকা আয়নাটাও। আর বয়স তো জানান দেয়ই! পাল্টাচ্ছে সময়, বাড়ছে বয়স! পরিবর্তন হচ্ছে শরীরে, হচ্ছে মনে। হবেও। এই-ই নিয়ম। নিয়মের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে সব পাল্টানোর দলে নাম লিখিয়েছে মানব দেহ, ত্বক, সবকিছুই। জানিয়ে দিচ্ছে, আর ছোট্টটি নেই আপনি। বড়ো হয়েছেন, বুড়িয়ে যাচ্ছেন!
বলছি হালের চিন্তার বিষয়- ‘মুখে বয়সের ছাপ বা ত্বকের বলিরেখা‘ নিয়ে। চিন্তার বিষয়ই বটে! বয়স হলেও বয়সটা লুকোতে স্বচ্ছন্দ আমরা সবাই। কে চাইবে ত্বকে মুখে বয়স বুঝাতে? কেউই না। তাই বলে বয়স বাড়লেই যে বলিরেখা কিংবা মুখে বয়সের ছাপ পড়বে, বিষয়টি কিন্তু তা না। অনেকের খুব বয়সেও অত ছাপ পড়ে না আবার অনেককেই দেখবেন কম বয়সে মুখে বয়সের ছাপ পড়েছে।
এর কারণ কী হতে পারে বলুন তো?
মুখে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা! কী এই জিনিস?
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে কমে যায় কোষের কার্যক্ষমতা। স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে যাকে বলা হয় জৈবিক ক্ষমতা হ্রাস। যাদের প্রভাব শরীরে সহজেই দৃশ্যমান হয়। বিশেষ করে মুখে। কি তাইতো? বয়স যত বাড়তে থাকে, শরীরে থাকা এনজাইম কাজ করা তত কমাতে থাকে। এক পর্যায়ে গিয়ে কাজ করা বন্ধই করে দেয়। তখন ত্বকে কিছু ছাপ পড়ে, ভাজ পড়ে, যেগুলোকে বয়সের ছাপ কিংবা বলিরেখা বলা হয়।
বলিরেখা পড়ার জায়গাগুলোও অদ্ভুত। মুখে, চোখের নিচে, ঠোঁটের চারপাশে বয়সের ছাপ গুলোকেই বলিরেখা বলে। জায়গাগুলো অদ্ভুতই বটে! বয়স বুঝিয়েই ছাড়ছে। বলিরেখা নিয়ে সবচেয়ে প্রচলিত ভুল ধারণাও কিন্তু এখানে। অবেকেই ভাবেন, বলিরেখা মানেই বয়স বৃদ্ধি। অর্থাৎ যার যত বয়স, তার মুখেই বলিরেখা থাকবে। যদি এ কথায় কেউ ভুল খুঁজে না পান তাহলে পাশ্চাত্য দেশের নায়ক নায়িকাদের বয়স ধরে রাখার সূত্রটা কী হতে পারে বলে আপনি মনে করছেন? কিংবা বাংলাদেশের চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা অথবা জয়া আহসান নিয়েই বা কেমন ভাবনা আপনাদের? বয়স কত হতে পারে তাঁদের? বলিরেখা পান তাঁদের মুখে? না পেলে কেন?
প্রশ্নোত্তর পর্ব বাদ রেখে চলুন খোলাসা করি বিষয়টা। বলিরেখার জন্য বয়স আসলেই কিছু না। বলিরেখার কারণ হিসেবে তালিকার শীর্ষে আছে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্নি। বয়স কিছুই না। বরং বয়স ধীরে ধীরে বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। বয়স কম থাকাকালীন শরীরে কোষ বিভাজন এবং কোলাজেন তৈরি দুটির হার বেশি থাকে। যাতে ত্বক টানটান থাকে আর চাকচিক্য ভাব বজায় থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে কোষ বিভাজন এবং কোলাজেন তৈরির হার কমতে থাকে ফলে ত্বক ঢিলে হতে থাকে। সেই সাথে কমে যায় ত্বকের চাকচিক্য।
সুতরাং বলিরেখার সাথে বয়স বৃদ্ধির যে অমন কোন সম্পর্ক নেই, সে ব্যাপারে ধারণা কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে না পাঠক? বয়সের ছাপ কিন্তু যে-কোন বয়সেই পড়তে পারে। কারও কিশোর বয়সেই বয়সের ছাপ পড়ে, অনেকের ৩০ পেরোলেও বয়স বোঝা যায় না। বয়সের ছাপের এই প্রক্রিয়াটা মূলত শুরু হয় শরীরের ভেতরে। পরে বাইরে এর প্রভাব পড়ে। তবে এখানে আরও একটা ব্যাপার আছে। চেহারাতে বয়সের ছাপ কতটা পড়বে আর কোন বয়সে পড়বে তা কিন্তু অনেকটাই নির্ভর করে আপনার বংশীয় কিছু বিষয়ের উপর। কেমন সেটা?
বংশে কারও ডায়াবিটিস হলে অন্যদেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এ আপনারা জানেন। ঠিক তেমনি আপনার বংশে যদি কম বয়সেই ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা কিংবা সমস্যা থাকে তবে আপনি ধরে নিন আপনারও এটা হবেই। কিন্তু হ্যাঁ, এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব! কীভাবে জানেন? কোন কিছুর সমাধানে আসার আগে সমস্যাটি খুব ভালোভাবে বুঝে নিতে হয়, এ আপনারা জানেন। সে কাজটিই করবো এখন। বলিরেখা নিয়ে আদ্যপান্ত জানবো। এতে কী হবে জানেন? সমস্যার বিস্তারিত বুঝতে পারলে সমাধান বের করতে আর নতুন সমস্যা হবে না। তাই না? চলুন শুরু করা যাক-
বলিরেখা কিংবা মুখে বয়সের ছাপ! কেন?
কোন কিছুর সমাধানের জন্য সমস্যার গভীরে যাওয়া আবশ্যক। মুখে বয়সের ছাপ কিংবা বলিরেখা সংক্রান্ত সমস্যার ঘরোয়া সমাধানে যাওয়ার আগে একটু করে জানিয়ে রাখতে চাই কেন এই বলিরেখা-
পাঠক, কোলাজেন নিয়ে একটু আগে আলাপ করছিলাম। মনে আছে নিশ্চয়ই? মূলত কোলাজেনই ত্বক টানটান রাখে। বয়স বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ত্বকে কোলাজেন তৈরির যে স্বাভাবিক ক্ষমতা, তা কমে আসে। আর এতেই ত্বক বুড়িয়ে যেতে থাকে।
এ তো গেলো বলিরেখা সংক্রান্ত শরীরের ভেতরের খবর। বাইরেরও কিছু প্রভাব আছে বইকি! মানসিক যে-কোন চাপ, রোদে বেশিক্ষণ থাকা, পানি কম খাওয়া, ধুমপান, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, ঘুমের সময় বালিশের চাপের কারণে ত্বকে দাগ পড়াসহ মুখের নানান রকম ভঙ্গিমার কারণেও কিন্তু ত্বকে এবং মুখে বলিরেখা কিংবা বয়সের ছাপ দেখা দেয়।
বলিরেখা না পড়ুক!
অনেক কথার ফুলঝুড়ির পর এবার আসি সমাধানে। যেন-তেন সমাধান নয়, একদম ঘরোয়া। বর্তমানে সয়লাব হয়ে যাওয়া নকলের ভিড়ে প্রয়োজনীয় কিছু খুঁজে পেয়ে ব্যবহার করা দুষ্করই বটে! আবার এক সমস্যা দূর করতে গিয়ে অন্য সমস্যার উদ্ভব হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই না পাঠক? সে কারণে কৃত্রিমতা বাদ দিয়ে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যাচ্ছি আপনাদের। কারণ একমাত্র প্রাকৃতিক কিছুই সম্পূর্ণ ভরসাযোগ্য, এ কিন্তু নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। অতএব….
বয়স বাড়ার সাথে মুখে বয়সের ছাপ পড়বেই, এটা যেন চিরন্তন সত্য। তবে বয়সের ছাপ পড়ার এই গতিকে কিন্তু ঘরোয়াভাবেই ধীর করতে পারবেন আপনি। চাই কিছু প্রচেষ্টা। তো চলুন ঘরোয়াভাবে কীভাবে বলিরেখা দূর করবেন সে সম্পর্কে জেনে নেই-
জীবনধারা পালটে ফেলুন!
আচ্ছা পাঠক, একটু ভেবে বলুন তো! আপনারা কে কীভাবে জীবন চালাচ্ছেন? প্রশ্ন দেখে কপাল কুঁচকে এলো কি? আচ্ছা সহজ করে দিচ্ছি- আপনার দৈনন্দিন খাবার গুলো কী? খাদ্যাভাস সম্পর্কে একটু ভাবুন। না! এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। এরপরের ভাবনা শারীরিক ব্যায়াম নিয়ে। করেন তো প্রত্যেহ? ঘুম ঠিকঠাক হয় তো? প্রাপ্তবয়স্কদের জব্য ঘুম মানেই কিন্তু ৮ ঘন্টা। বয়সের সাথে সাথে বুড়িয়ে যাওয়া এড়াতে কিংবা বুড়িয়ে যাওয়ার গতি ধীর করতে এই তিন বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কোন ৩ টি?
- খাদ্যাভ্যাস।
- শারীরিক ব্যায়াম।
- পর্যাপ্ত ঘুম অর্থাৎ ৮ ঘন্টা ঘুম।
কি মনে থাকবে তো? এই তিনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু খাদ্যাভ্যাস। যে অভ্যাসের সূচনা করতে হয় বয়সের ছাপ পড়ার আগেই। কিছু খাবার আছে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে বেশ সহায়ক। সুতরাং খাদ্যতালিকায় সে খাবারগুলোর অগ্রাধিকার অবশ্যই বেশি থাকবে। কি তাইতো?
খাদ্যাভ্যাস এর পাশাপাশি একটা বিষয় মনে করিয়ে দেই, পানি পান করবেন। অনেকেই পানির পিপাসা পায় না, জানেন? এর মধ্যে শীতকাল আসন্ন। শীতকালে ঠাণ্ডার ভয়েও অনেকে পানি পান করেন না। কিন্তু ভয়ংকর তথ্য কী জানেন? ত্বকে পানির পরিমাণ কমে গেলেই কিন্তু মুখে বয়সের ছাপ আরও স্পষ্ট আকারে বসে যায়। পানির অভাবে যদি আদ্রতা হারিয়ে ত্বক শুকিয়ে যায়, তাহলে যত দামি ক্রিম বা লোশনই হোক না কেন, কাজে দেবে ন। এ আপনারা মিলিয়ে নিন। শুধু পানি পানে সমস্যা হয় অনেকের। বমি বমি ভাবও হয়। সেক্ষেত্রে পরামর্শ দিচ্ছি পানি আছে এমন কিছু খাওয়ার। যেমন- শাক, সবজি, ফল, সালাদ, শরবৎ, স্যুপ ইত্যাদি।
মোট কথা শরীরে লিকুইড প্রবেশ হতে দেবেন। এটা আপনার ত্বক ভালো রাখবে, সতেজ করবে ভেতর থেকে। অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে যাবেন। খাদ্যতালিকায় রাখবেন সহজপাচ্য সব খাবার যা সহজে হজম হয়। ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই যুক্ত খাবার অবশ্যই রাখবেন খাদ্যতালিকায়। এই দুই জাতীয় ভিটামিন ত্বক সতেজ রাখতে বেশ কার্যকর। আর হ্যাঁ, সাপ্লিমেন্ট কিছু খাবেন না। এমন কিছুই খাবেন যাতে শরীরে সরাসরি পুষ্টি যায়।
এড়িয়ে চলুন কৃত্রিম সব প্রসাধনী!
সাজগোজ পছন্দ করেন এমন মানুষের সংখ্যাটা কেমন হতে পারে বলে আপনাদের ধারণা?
অবশ্যই কম নয়, তাই না? আচ্ছা এবার বলুন তো, সাজগোজ করা ক’টা মানুষের মুখ ত্রুটিহীন দেখেছেন? ত্রুটিহীন বলতে বুঝাচ্ছি বয়সের ছাপ, ব্রন জাতীয় বিষয়াদি। অনেকে এগুলো ঢেকে রাখতেই ব্যবহার করেন নানান ধরণের কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী। সাময়িক উপকার পেলেও এর খেসারত হয় মারাত্মক ধরণের। ফেইসবুক এবং পত্রিকাগুলোতে অনেকের ত্বক পুড়ে যাওয়ার ঘটনা আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন। পুড়ে যাওয়ার কারণ এই কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী। মোটকথা হলো, কৃত্রিম কোন কিছুই ভালো নয়। হোক সেটা সাধারণ বা প্রাকৃতিক বলে বিক্রি করা সাবান কিংবা ফেইসওয়াশ।
এখন প্রশ্ন আসা খুব স্বাভাবিক যে, “যদি সাবান কিংবা ফেইসওয়াশ বাদ দিতেই হয় তবে মুখ ধুবো কী দিয়ে?”
উত্তর- দুধের সর, কাঁচা হলুদ, ময়দা, গোলাপজল, অ্যালোভেরা, ডিম, খুব ভালো মানের তেল, ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন। বাস! হয়ে এলো! একটা ব্যাপার জানিয়ে রাখি, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন না। এবং সানস্ক্রিন কেনার আগে অবশ্যই রঙহীন ও গন্ধহীন দেখেই কিনুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহারের একটা নিয়ম জানিয়ে দিচ্ছি
দিনের আলোতে যদি বাড়িতে কিংবা অফিসে থাকেন তাহলে কমপক্ষে ২ বার সানস্ক্রিন লাগাবেন। আর বাইরে থাকলে প্রতি ২ ঘন্টা পরপর ১ বার করে সানস্ক্রিন লাগাবেন। খেয়াল রাখবেন, ত্বক যেন কোনভাবেই শুষ্ক হয়ে না যায়।
ডুব দিন প্রকৃতিতে
কেবল প্রাকৃতিক ছাড়া আর কিছুতেই স্বয়ংসম্পূর্ণ কিছু পাওয়া কিন্তু নিতান্তই অসম্ভব। এককালে রূপচর্চা বলতে প্রাকৃতিক বিষয়ই বুঝানো হতো। কিন্তু এখন দিনকাল বড্ড পাল্টেছে। যতই বলি, মেইক আপে সব সম্ভব কিন্তু প্রাকৃতিক আর কৃত্রিমতার মধ্যে বিস্তর একটা ফারাক আছে। আর সে কারণেই কিছু প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে জানাবো আপনাদের। যার কিছু না কিছু ঘরেই থাকে। চলুন শুরু করা যাক-
অ্যালোভেরা
বাংলায় ঘৃতকুমারী, ইংরেজিতে অ্যালোভেরা। মোটামুটি পরিচিতি একটা সবুজ উদ্ভিদ। গন্ধ এবং স্বাদের কারণে অনেকে নাক ছিটকালেও এর উপকার কিন্তু অনবদ্য। বিশেষ করে ত্বকের জন্য। ত্বকের অসংখ্য সমস্যার অসাধারণ একটি সমাধান এই অ্যালোভেরা প্রাকৃতিকভাবেই ঝুলে ও কুঁচকে যাওয়া বলিরেখাযুক্ত ত্বককে করে তোলে টানটান।
শরীরের যে জায়গাগুলো কুঁচকে যায়, ঝুলে যায় কিংবা বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে সে জায়গাগুলোতে অ্যালোভেরা জেল মাখিয়ে আলতো হাতে ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন। ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট রেখেই ধুয়ে নেবেন জায়গাগুলো।
অ্যালোভেরার জেল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে ভালো হয় সরাসরি গাছেরটা ব্যবহার করতে পারলে। রোজ ব্যবহারেই ফল পাবেন। তবে হ্যাঁ, ধৈর্য ধরেই রোজ ব্যবহার করতে হবে। একদিন করলেন, দু’দিন বাদ দিলেন, এভাবে হবে না। যাই করবেন, করতে হবে নিয়মিত। এই হলো কথা।
গোলাপজল
গোলাপজল যারা ব্যবহার করেন বা ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন তারা কিন্তু এই পানির গুরুত্ব বেশ অনুধাবন করতে পারেন। কি তাইতো?
সৌন্দর্যের বন্ধু গোলাপজল বলিরেখা দূর করব ত্বককে করে তোলে টানটান এবং লাবণ্যময়। রাতে ঘুমোনোর আগে শরীরের যে জায়গাগুলোতে বলিরেখা পড়েছে সে জায়গাগুলোতে গোলাপজল লাগান তুলোতে মিশিয়ে। অর্থাৎ গোলাপজলে তুলো ভিজিয়ে নিয়ে সে ভেজানো তুলো বলিরেখা হয়েছে এমন জায়গায় আলতো করে লাগান। সারারাত রাখুন। সকালে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করুন কাজটি। ফলাফল নিজেই দেখুন।
একটা বিষয় জানিয়ে রাখি, আসল গোলাপজল না হলে কাজ হবে না৷ আর আসল গোলাপজল পাওয়াটাও কঠিন, তাই না? সেক্ষেত্রে ঘরেই বানিয়ে ফেলতে পারেন গোলাপজল। কী করে? জানাচ্ছি-
গোলাপ জলের জন্য প্রথমেই লাগবে গোলাপ ফুল। নিজের গাছের হলে তো খুবই ভালো। বাইরে থেকে কিনে আনা হলে খেয়াল রাখবেন এই ফুলে যাতে কোন কেমিক্যাল মেশানো না থাকে। অর্থাৎ পুরো টাটকা ফুলই লাগবে গোলাপজল বানাতে।
১ কাপ পরিমাণ গোলাপের পাপড়ি আলাদা করে একটা কাঁচের পাত্রে রাখুন। ২ কাপ পরিমাণ পানি সেদ্ধ করে সেই কাঁচের জারে রাখুন। ৩০ মিনিট ঢেকে রাখুন। এরপর পানিটা ছেঁকে নিন। ছেঁকে নেওয়া পানি ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে ব্যবহার করুন। যেহেতু ঘরোয়া এবং প্রিজারভেটিভ নেই তাই ১ সপ্তাহের মতো ব্যবহার করতে পারবেন। এরপর শেষ হয়ে এলে আবার একই নিয়মে বানিয়ে নেবেন। খুব সহজ না?
ডিম
ব্যাচেলর্স ফুড নামে খ্যাত এই ডিমকে চুলের যত্নে ব্যবহৃত হতে দেখলেও ত্বকের যত্নে অনেকেই হয়তো সেভাবে দেখেননি। এবার জানবেন এবং ঘরে তৈরি করে দেখবেনও। জানাচ্ছি ব্যবহারবিধি-
ডিম থেকে সাদা অংশ আলাদা করে বিট করে ফোম বানান। এই ফোম বলিরেখা যুক্ত স্থানে মাখিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। নিয়মিত ব্যবহার করুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ থেকে ৪ বার। ত্বক টানটান হয়ে উঠবে।
মধু
মধুকে অনেক রোগের ঔষুধ বলা হয়। মহৌষধ খ্যাত এই মধুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদানের কারণে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি সহ শরীরের ভেতর থেকে অনেক রোগ সারিয়ে তোলে। এমনকি মধু ত্বকের অ্যাকনে দূর করতেও সাহায্য করে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে মন্থর করে দেয় মধু। শুষ্কতা, রুক্ষতা দূর করতেও মধুর বিকল্প নেই।
মধুর ব্যবহার
মধুর ব্যবহার মোটেও কঠিন কিছু না। নিয়ম করে রোজ ব্যবহার করবেন। শুধু পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে আলতো হাতে মধু মাখাবেন মুখে। কিছুক্ষণ রেখে আবার শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। এভাবে রোজ করবেন। পার্থক্যটা ক’দিন বাদেই টের পাবেন।
আমন্ড অয়েল
তেলের নাম শুনে যারা অ্যালার্জির ভয় পাচ্ছেন তাদের জন্য বলছি- অ্যামন্ড অয়েলে অ্যালার্জির কোন সম্ভাবনা নেই। এই তেলটিকে ত্বক খুব দ্রুতই শুষে নেয় ফলে মুখ চটচটে হয় না। বরং ঝকঝকে, দাগহীন এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠে ত্বক। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে তেলটিতে ফলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্নি থেকে ত্বকে সুরক্ষা করে৷ এতে কী হয় জানেন? মুখে বয়সের ছাপ পড়ে না। এছাড়া অ্যামন্ড অয়েলে থাকা কোলাজেনই মূলত ত্বকে বয়সের ছাপ এড়াতে সহায়তা করে।
শুধু ত্বক নয় বরং চোখের ডার্ক সার্কেল এর দাগ দূর করতেও কিন্তু অ্যামন্ড অয়েল বেশ কার্যকর।
- ব্যবহারের নিয়ম
রাতে ঘুমোনোর আগে ভালো করে মুখ ধুয়ে আলতো করে অ্যামন্ড অয়েল মুখে মাখিয়ে নিন। সারারাত রাখুন। সকালে ঘুম থেকে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন। নিয়ম করে রোজ ব্যবহার করুন এবং ফলাফল দেখুন।
অলিভ অয়েল
ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ও আদ্রতা বাড়ানোর জন্য অলিভ অয়েলের বিকল্প নেই বললেই চলে। তুলোর সাহায্যে অলিভ অয়েল মুখে মাখিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন। নিয়মিত করুন। উপকার পাবেন।
লেবুর রস!
হালকা করে লেবুর রস মুখে মাখিয়ে ১০ মিনিট পরেই ধুয়ে ফেলুন। অনেকের মুখে লেবুর রস সরাসরি সহ্য হয় না। সেক্ষেত্রে পানি দিয়ে প্রথমে মুখটা ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন। এরপর লেবু কেটে মুখে আলতো করে ঘষে ঘষে লাগাবেন। উপকার পাবেন। বেশি লাগাবেন না। অনেকের র্যাশের সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে খুব সংবেদনশীল ত্বক হলে লেবু পুরোপুরি বাদ দেবেন।
কলা
বলতে গেলে প্রায় বারোমাসি এই ফল বাসার আশেপাশেই পাওয়া যায়। ভীষণ সহজলভ্য এবং দামেও সস্তা আর পুষ্টিতে অনবদ্য এই কলার ব্যবহার শুধু খাওয়াতেই নয় বরং ত্বকের জন্যও প্রযোজ্য। সেক্ষেত্রে ত্বকের জন্য পাকা কলা ব্যবহার করবেন। পেকে যাওয়া কলা চটকে নিয়ে পেস্ট করুন বা ব্লেন্ড করেও নিতে পারেন। মুখে মাখিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলবেন। নিয়মিত ত্বকে কলার ব্যবহার আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলবে।
আনারস
ফল হিসেবেই বেশ সুস্বাদু ও উপকারি হিসেবে খ্যাত এই আনারসের ব্যবহার যে ত্বকেও হতে পারে, সেটা হয়তো অনেকের ভাবনার বাইরে। মুখের বলিরেখা দূরীকরণে আনারসের ভূমিকাও কিন্তু কম না। কয়েক টুকরো আনারসের পেস্ট বানান অথবা শুধু রসটা নিন। মুখে মাখিয়ে শুকিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে এলেই ধুয়ে নিন। নিয়মিত ব্যবহার করুন। উপকার পাবেন বইকি।
ঘরোয়া টোটকা
এত-শত কথার ভিড়ে অনেক কিছু নিয়েই মোটামুটি একটা ধারণা হলো, তাই না? এবার তবে আলোচ্য বিষয় যা নিয়ে সেদিকে সরাসরি চলে এলে মন্দ হয় না। বলছিলাম, ঘরোয়াভাবে বলিরেখা দূর করার উপায় নিয়ে। চলুন কিছু টোটকা জেনে আসা যাক-
ওটমিলের ঘরোয়া স্ক্রাব
যা লাগছে-
- ১ টেবিল চামচ ওটমিল।
- ১ টেবিল চামচ জলপাই তেল।
- ১ চা চামচ মধু।
এই তিন জিনিস একত্রে মেশান, পেস্ট তৈরি করুন। পেস্ট তৈরি হয়ে এলে মুখে ঘষুন। ২ মিনিটের মতো রাখুন। ধুয়ে ফেলুন।
মিল্ক স্ক্রাব
পরিমাণ মতো গমের ভুসি ও ক্লেঞ্জিং মিল্ক একত্রে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখুন। ধুয়ে ফেলুন।
শুধুই নারিকেল তেল
ঘরে একদম প্রাকৃতিক নারিকেল তেল আছে? তাহলে নির্ভয়ে এবং নিশ্চিন্তে থাকুন। ঘুমোবার আগে পুরো মুখে, ঘাড়ে নারিকেল তেল ম্যাসাজ করুন। পুরো রাত রাখুন। ত্বকের বার্ধক্য দূর করতে নারিকেল তেলের তুলনা হয় না। এই তেল ত্বকের গভীরে পৌছে ত্বকে ভেতর থেকে পুষ্টি দেয়। ত্বকের স্বাভাবিক বার্ধক্য প্রক্রিয়াকেও নষ্ট করতে সাহায্য করে নারিকেল তেল। তবে তেলটা খাটি হতে হবে।
নারিকেল তেলের ব্যবহার এখানেই শেষ নয়। আরেকটা ব্যবহার আছে। যেটাতে লাগবে শুধু হলুদ আর খাটি নারিকেল তেল। দুটো একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। বলিরেখা আছে এমন স্থানে মাখিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলেই ধুয়ে নিন। এই পেস্ট এর ব্যবহার আপনার ত্বককে নরম করবে। বলিরেখা দূর করে আরও উজ্জ্বলতা বাড়াবে। মূলত ত্বকের জন্য হলুদ কিন্তু খুবই কার্যকরী। কতটা কার্যকরী সে প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয়-
হলুদে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে কোলাজেন এর উৎপাদন এর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। এতে ত্বক টানটান হয়।
গাজর মধুর পেস্ট
বাসায় গাজর থাকে? অন্তত বাসার আশেপাশে বাজারে তো কিনতে পাওয়া যায়, তাই না? ভালো করে ধুয়ে মনমতো টুকরো করে সেদ্ধ দিন। সেদ্ধ হয়ে এলে মধুর সাথে মিশিয়ে সেদ্ধ গাজর ব্লেন্ড করে নিন। পেস্টের মতো হয়ে এলে সেটা বলিরেখা আছে এমন জায়গায় মাখান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন।
গোলাপ জল ও দুধ
খুবই চেনা এবং নাগালের মধ্যে থাকা দুটো উপাদান নিয়ে এবারের ঘরোয়া টোটকা জানাচ্ছি-
দুধ এবং গোলাপ জল একই পরিমানে নিয়ে মেশান। মিশ্রণটিতে তুলো ডুবিয়ে আলতো করে বলিরেখায় মাখুন। শুকিয়ে আসা অবধি মুখে মিশ্রণটি রাখুন। এরপর শুধু পানি দিয়ে ভালো করে মুখটি ধুয়ে নিন। ত্বক টানটান করতে এই মিশ্রণটি খুব কাজের। এতে বলিরেখা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায়।
অ্যালোভেরা ও কাঠবাদাম
টোটকায় যাওয়ার আগে আলাদাভাবে অ্যালোভেরা আর কাঠবাদাম নিয়ে কিছু বিষয় জানিয়ে রাখি-
অ্যালোভেরার কাজ ত্বকের বলিরেখা কমিয়ে ত্বককে ভেতর থেকে উজ্জ্বল, মজবুত আর নরম করে তোলা। কাঠবাদাম প্রচুর তেল সম্বলিত একটি সহজলভ্য ড্রাই ফ্রুট। বয়সের ছাপ এড়াতে কাঠবাদাম খুবই কার্যকর। এবার টোটকায় চলে আসি।
- যা লাগছে
সারারাত ভেজানো কয়েকটা কাঠবাদাম।
একটা টাটকা অ্যালোভেরার পাতার জেল।
- জেল সংগ্রহের নিয়ম
পাতার উপর নিচ আলাদা করে ভেতরে স্বচ্ছ নরম অংশটি ব্লেন্ড করে নিন। হয়ে গেলো অ্যালোভেরা জেল।
- যা করা লাগবে
ভেজানো কাঠবাদাম শিল পাটায় মিহি করে বেটে নিন। ব্লেন্ডারের কথা বললাম না কারণ কয়েকটা কাঠবাদামের জন্য অনেকক্ষেত্রে ব্লেন্ড হয় না। অনেকক্ষেত্রে মিহিও খুব হয় না যদি খুব অল্প পরিমাণে কেউ ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে ভরসা করার মতো শিল পাটাই শ্রেয়।
তো শিল পাটায় বেটে নেওয়া এই কাঠবাদামগুলোকে রেখে দিয়ে এর ভেতর অ্যালোভেরা পাতা থেকে সংগ্রহ করা জেলটি দিন। ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্টটা মুখে মাখিয়ে নিন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন।
লেবুর রস ও পুদিনা পাতা
কিছুটা পুদিনা পাতার রস আর লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এতে তুলো ডুবিয়ে সেই তুলো বলিরেখা যুক্ত স্থানে মাখান। চোখের নিচে থাকা ডার্ক সার্কেলেও মাখান। শুকানো পর্যন্ত রেখে দিন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান হবে।
পেপে ও টকদই
ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে পেপে কিন্তু দারুণ কার্যকরী। সমপরিমাণ টকদই আর পেপের পেস্ট একসাথে মিশিয়ে আলাদা পেস্ট তৈরি করুন। মুখে মাখুন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। বাস!
কফি প্যাক
কফিপ্রেমি মানুষদের জন্য একটা সংবাদ, খাওয়ার পাশাপাশি এই কফি আপনি চাইলে মুখেও দিতে পারবেন। এ জন্য সামান্য কিছু কাজ করতে হবে-
নারিকেল তেল, চিনি, দারুচিনি, সহনীয় মাত্রার গরম পানি আর কফি- সবটা মিলিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে মাখুন। মুখের অতিরিক্ত তেল দূর করবে এটা। ত্বককে টানটান করে তুলবে।
ভাতের মাড়ের প্যাক
শিরোনাম দেখে আঁৎকে উঠেছেন যারা, তাদের জন্য বলছি, ভাতের মাড় কিন্তু ত্বকের জন্য বেশ কাজের। ইউটিউবে ঘাটাঘাটি করলে তথ্যটা পেয়ে যাবেন, জাপান, কোরিয়া, তাইওয়ান, চিনের মেয়েদের বয়স ধরে রাখার পেছনে ভাতের মাড়ের অবদান কিন্তু আসলেই গুরুতর। তেমনই একটি টোটকা জানাচ্ছি আজ-
ভাত হয়ে আসার আগে মাড় কিছুটা মাড় ছেঁকে নিবেন। ঠাণ্ডা করে ওতে মেশাবেন দুধ আর মধু। এখন এই মিশ্রণ মুখে মাখিয়ে শুকিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। এরপর সেদ্ধ চালের পানি মানে ভাতের পাতলা মাড় দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন। এরপর এই অবস্থায় আরও কিছুক্ষণ থেকে মুখ শুকিয়ে এলে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নেবেন। ৭ দিন পর পার্থক্য দেখুন।
বয়সের ছাপ কমিয়ে এনে বলিরেখা দূর করে এই প্যাক। তাছাড়া ত্বকের লাবণ্য বাড়াতেও বেশ কার্যকরী প্যাকটি।
দুধ ও কোকো পাউডার
মুখের জন্য কতটাই আর লাগবে? আন্দাজমতো কোকো পাউডার আর দুধ মিশিয়ে পেস্ট করে নিন। যতটা কোকো পাউডার আর অর্ধেকটা দুধ নেবেন এক্ষেত্রে। মুখে মাখিয়ে অপেক্ষা করুন শুকানোর। ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন মুখটা। ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহার করুন।
ডিম এর প্যাক
একটা তথ্য জানিয়ে রাখি, মুখের যে-কোন কিছুতে ডিমের সাদা অংশটা ব্যবহার করবেন। কেন করবেন, এই প্রশ্নের উত্তরে আগাম জানিয়ে রাখি, প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে টানটান করার ক্ষমতা আছে ডিমের সাদা অংশের।
টক দই আর ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। বলিরেখা এবং রোদে পোড়া জায়গায় মাখান পেস্টটা। শুকিয়ে এলেই ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ন্যূনতম ২ দিন করুন এই কাজটা।
ডিমের আরেকটা কাজ আছে। মধুর সাথে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। মেশানো হয়ে এলে মুখে মাখান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নেবেন উষ্ণ গরম পানি দিয়ে। গরম পানি বলতে ধোয়া ওঠা টগবগে পানি না কিন্তু। ত্বকে সহ্য করতে পারবেন, এমন মাত্রার পানি। নিয়মিত এটাও করতে পারেন।
আলু ও আপেল
ভিন্নধর্মী দুই জিনিসকে এক করতে যাচ্ছি। ত্বকের বলিরেখা যুক্ত স্থানেই তো মাখাবেন, কতটা আর লাগতে পারে? সমপরিমাণ আলু ও আপেল বেটে নিন। মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে মাখান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে নিন। ত্বক দারুণভাবে উজ্জ্বল হবে।
কলার প্যাক
পাকা কলা আর মধু একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। মুখ, ঘাড়, হাত, পা সহ যেখানে যেখানে রোদে পোড়ে সেখানে মাখান। রোদে পোড়া দাগ, বলিরেখা কমাতে এই প্যাক বেশ কার্যকর।
মোটামুটি অনেকগুলো কিন্তু সহজলভ্য কিছু ঘরোয়া টোটকা নিয়ে আলাপ হলো আজ। আশা করছি কোন না কোন উপায় অবশ্যই অবলম্বন করবেন। এবং অবশ্যই নিয়ম মেনে চলবেন।