যদি আপনি সেই সব সংখ্যালঘুদের দলে থাকেন যারা ওজন হ্রাসের পরিবর্তে ওজন বৃদ্ধি করতে বেশি আগ্রহী, তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে উত্তম পথটি হল ঘরে তৈরি প্রতিকার গুলো গ্রহন করা।
এগুলো তৈরি খুবই সহজ এবং এগুলো খুব কার্যকরী, এবং এগুলো ব্যবহারে কোন ক্ষতিকর দিক নেই। এগুলো গ্রহন করার সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো আপনি আপনার নিয়মিত জীবনধারায় এই প্রতিকার গুলোর কোন প্রকার পরিবর্তন না করেই বেশিরভাগই খুব কার্যকরভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন এবং খুব সহজেই ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। ওজন বাড়ানোর জন্য ঘরোয়া প্রতিকারই সবচেয়ে সহজ একটি পথ।
ওজন বাড়ানোর জন্য সেরা ১০ টি ঘরোয়া উপায় দেওয়া হল যেগুলো তেমন কোন কষ্ট ছাড়াই আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
১. পরিশোধিত মাখন এবং চিনি
- ১ টেবিল চামচ পরিশোধিত মাখন এবং তার সমপরিমান চিনি মিক্স করুন।
- খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে খালি পেটে এই মিশ্রনটি খাবেন।
- শুধু ১ মাস এই মিশ্রনটি গ্রহন করলে আপনি চমকপ্রদ ফলাফল লক্ষ্য করবেন।
২. বিকালের ঘুম
- বিকাল বেলা কমপক্ষে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
- এটা শুধু আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে না, বরং এটা আপনাকে রাতের বেলা ভালোভাবে ঘুমাতেও সাহায্য করবে।
*দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য এটি আমাদের সবচেয়ে প্রিয় একটি ঘরোয়া প্রতিকার!
৩. আম এবং দুধ
- দিনে ৩ বার ১ টি করে আম (পাকা) খাবেন।
- আম খাওয়ার পর অবশ্যই এক গ্লাস গরম দুধ পান করবেন।
- ১ মাস পর আপনি লক্ষ্যণীয় ফলাফল দেখতে পাবেন।
৪. ডুমুর ফল এবং কিশমিশ
- শুকনো ডুমুর ফল এবং কিশমিশ প্রচুর ক্যালরিতে পরিপূর্ণ, তাই তারা ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- ৬ টি শুকনো ডুমুর এবং প্রায় ৩০ গ্রাম কিশমিশ সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
- এরপরের দিন এগুলোকে ২ ভাগ করে সকালে এবং রাতে খেয়ে নিন।
- বেশিরভাগ মানুষ প্রায় ২০-৩০ দিনের মধ্যে সুস্পষ্ট ফলাফল দেখতে পায়।
৫. পিনাট বাটার/বাদামের মাখন
বর্তমানে সবাই জানে যে পিনাট বাটারে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। তাই ওজন বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া প্রতিকার হলো পিনাট বাটার।
আপনার পাউরুটিতে বেশি করে পিনাট বাটার লাগান এবং দেখতে থাকুন আপনার ওজন কত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
৬. আলু
আলু কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ, তাই এখানে কোন সন্দেহ নেই যে প্রতিদিন আলু খেলে এটি আপনার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
আলুতে মাখন লাগিয়ে গ্রিল অথবা ওভেনে বেক করুন, অথবা আপনি যদি পছন্দ করেন তাহলে এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল দিয়ে আলু গুলোকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই করুন, তবে সপ্তাহে ২ বারের বেশি আলু খাবেন না।
৭. বাদাম
বাদাম যেমন আমন্ড, আখরোট, সূর্যমুখী বীজ এবং শস্য বীজ এগুলোতে প্রচুর ক্যালোরি রয়েছে এবং দিনে ৩ বেলা আহার গ্রহন করার মাঝখানের বিরতি গুলোতে খাওয়ার জন্য সেরা হলো বাদাম।
এদের দারুণ স্বাদ উপভোগ করার জন্য, পুষ্টি পাওয়ার জন্য এবং অবশ্যই ওজন বাড়ানোর জন্য বেশি বেশি বাদাম খাবেন। বাদামে স্বাস্থ্যকর তেল রয়েছে এবং এটি আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য একটি স্বাস্থ্যকর উপায়।
৮. স্ট্রেস মুক্ত থাকা
ওজন কমে যাওয়ার একটি প্রধান কারন হলো স্ট্রেস বা চাপ। তাই আপনি যদি ঘরে বা কর্মক্ষেত্রে চাপগ্রস্থ পরিস্থিতির সম্মুখীন হন, তাহলে যোগ ব্যায়াম করুন অথবা শ্বাস নিয়ন্ত্রন করার কৌশল আয়ত্ত করার চেষ্টা করুন।
এই কৌশল গুলো আপনার শরীরকে চাপমুক্ত করতে সাহায্য করবে। যখন আপনি আপনার চাপ নিয়ন্ত্রন করা এবং নিজেকে চিন্তা মুক্ত করার কৌশল আয়ত্ত করে ফেলবেন, তখন দেখবেন ওজন বৃদ্ধি করা আপনার জন্য খুব সহজ হয়ে গিয়েছে।
৯. কলা এবং দুধ
আপনি হয়ত জানেন না যে কলা প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরিতে পরিপূর্ণ। এরা আপনাকে মুহূর্তের মধ্যে শক্তি সরবরাহ করতে পারে।
এর মাধ্যমেই বুঝা যায় কেন টেনিস খেলোয়াড়েরা প্রতি খেলার মাঝখানে প্রায়ই কলা খান। প্রতিদিন সকালে একটি করে কলা খাবেন এবং খাওয়ার পরেই এক গ্লাস গরম দুধে এক চা চামচ চিনি মিশিয়ে পান করবেন।
১০. বাদাম দুধ
কয়েক পাউন্ড ওজন বাড়ানোর জন্য বাদাম দুধ পান করাও একটি দুর্দান্ত উপায়। দুধের সাথে বাদাম, শুকনো ডুমুর ফল এবং খেজুর মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। ফুটানো হয়ে গেলে দুধ ছেঁকে নিন এবং এক মাস ধরে প্রতিদিন এই গরম দুধ পান করুন। সিদ্ধ বাদাম, ডুমুর এবং খেজুর গুলো ফেলে দিবেন না। সিদ্ধ করার পরেও এগুলোর ভিতরে অনেক পুষ্টি বিদ্যমান থাকে। তাই এগুলোও খেয়ে ফেলুন।
আপনি আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য নানা রকম ঘরোয়া প্রতিকার গুলোকে সমন্বয় করে নতুন খাবার বানাতে পারেন এবং আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ওজন পাওয়া পর্যন্ত এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো চালিয়ে যান।
যদি আপনি আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর, সহজ এবং জটিলতাবিহীন ঘরোয়া প্রতিকার চান তাহলে আমাদের দেওয়া এই ১০ টি খাদ্য অনুসরন করতে পারেন।