সারা বিশ্বে যখন প্রায় সবাই ওজন কমানোর মিশনে নেমেছে, তখন এমন কিছু মানুষ আছে যারা সামান্য কয়েক কিলো ওজন বাড়ানোর জন্য মরিয়াভাবে চেষ্টা করেই চলেছে!
যারা অত্যাধিক মাত্রায় চর্মসার বা চিকন তাদের কাছে এই স্বাস্থ্য একদিকে যেমন বিষণ্ণতার কারন হয় তেমনি এই স্বাস্থ্য তাদের জন্য অনেক প্রতিকুলতা সৃষ্টি করে।
একজন ব্যক্তির অতি মাত্রায় পাতলা হওয়ার বিভিন্ন কারন থাকতে পারে। অনেক গুলো কারনের মধ্যে কিছু কারন হলো বিপাক, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, থাইরয়েড এবং নিম্নমানের খাদ্যাভাস ইত্যাদি।
আপনি যদি পাতলা থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে যান এবং আপনার ওজন কিছুটা হলেও বাড়াতে চান তাহলে প্রোটিন পাউডার আপনার জন্য খুব ভালো একটি বিকল্প হতে পারে, যেটি আপনার দেহে কিছু অতিরিক্ত ওজন বা পাউন্ড বাড়াতে সাহায্য করবে।
কিন্তু ওজন বাড়ানোর জন্য কিভাবে প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করতে হবে তা এই আর্টিকেল পড়ে জানার আগে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে প্রোটিন পাউডার জিনিষটা কি।
প্রোটিন পাউডার কি? [What is Protein Powder]
প্রোটিন পাউডার হলো একটি “বডি বিল্ডিং সাপ্লিমেন্ট” যা অন্যান্য খাবারের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে, দেহের পেশী বর্ধিত করে অথবা ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
তিন ধরনের প্রোটিন পাউডার রয়েছেঃ-
- হোয়ে (Whey): এই পাউডারে ২৫% থেকে ৮৯% প্রোটিন থাকে বাকিটা ল্যাকটোজ, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে। ভালো মানের প্রতি ৩০ গ্রাম হোয়ে প্রোটিন কনসেনট্রেটে ২৪ গ্রাম প্রোটিন (এর মধ্যে ৫.৪ গ্রাম ব্রাঞ্চ-চেইন অ্যামিনো এসিড থাকে), ২.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১.৫ গ্রাম ফ্যাট এবং ১১৯ Kcal ক্যালোরি থাকে।
- সয় (Soy): সয়া প্রোটিন হল একটি প্রোটিন যা সয়াবিন থেকে বিচ্ছিন্ন। এটি সয়াবিন খাবার থেকে তৈরি করা হয় যা অবমূল্যায়িত এবং বিকৃত করা হয়েছে।
- কেইসিন (Casein): ক্যাসিন হলো আরেকটি দুধ ভিত্তিক প্রোটিন। গরুর দুধে প্রায় ৮০% কেসিন প্রোটিন থাকে।
এই পাউডার গুলো বাজারে বিভিন্ন দামে পাওয়া যায়। আপনি আপনার কাছাকাছি কোন ঔষধের দোকান থেকে এগুলো কিনতে পারেন।
ওজন বৃদ্ধিতে প্রোটিন পাউডারঃ
- ওজন বাড়ানোর জন্য আপনাকে আপনার খাদ্যতালিকাতে হোয়ে প্রোটিন (Whey Protein) অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রোটিন আপনার দেহের পেশী বাড়াতে এবং এদের ঠিক করতে সাহায্য করে। আপনাকে অবশ্যই দিনে অন্তত ১০০-২০০ ক্যালোরি প্রোটিন গ্রহন করতে হবে। এটি আপনাকে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই পাউন্ড ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। সপ্তাহে এক থেকে দুই পাউন্ড ওজন বাড়ানো শরীরের জন্য খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।
- আপনি যদি প্রোটিন পাউডার খাওয়া শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই “বায়্যোলোজিকাল ভ্যালু স্কেল” (বিভি) সম্পর্কে পরিচিত হতে হবে। এটি একটি স্কেল যেটি আপনার শরীরে প্রোটিনের পরিমান পরিমাপ করতে সাহায্য করে এবং বাইরে থেকে গৃহীত প্রোটিন শরীর কতটুকু ব্যবহার করবে তাও পরিমাপ করে। বায়্যোলোজিকাল ভ্যালু স্কেলে ডিমের হার ১০০%, গরুর মাংসের হার ৭৫% এবং হোয়ের (Whey) হার ১০৪%। কিন্তু হোয়ে (Whey) এর বিশুদ্ধ রূপ হচ্ছে আইসোলেটস হোয়ে (Isolates Whey) এবং এর হার প্রায় ১৭০%।
- যদি আপনি ওজন বাড়ানোর সাথে সাথে আপনার পেশীও সুগঠিত করতে চান তাহলে আপনাকে প্রোটিন পাউডার গুলোর মধ্যে আরো ভালো সংস্করণটি বেছে নিতে হবে। টাকাও একটি বড় ব্যাপার কিন্তু যখন আপনি আপনার খাদ্যাভাস পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করেন এবং একটি নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকার উপর মনোনিবেশ করেন তখন আপনাকে একটু অর্থ ব্যয় করতেই হবে। বাজারে সহজলভ্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রোটিন পাউডারটি হলো “আইসোলেটেড হোয়ে” (Isolated Whey) এবং ওজন বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে সেরা পছন্দ এটি।
সুতরাং এখন আপনি জানেন কিভাবে প্রোটিনের সাহায্যে আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন।
আপনাদের মধ্যে যারা খুব ব্যস্ত থাকেন তারা উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারও গ্রহন করতে পারেন যেমন প্রোটিন বার (এতে প্রচুর পরিমানে শর্করার এবং কার্বোহাইড্রেট আছে), গ্রিল করা মরগি, ডিম এবং দুধ। আপনি চাইলে প্রোটিন শেইক ও খেতে পারেন।
আপনি এখন পাতলা হওয়া নিয়ে চিন্তা করা এবং সবার থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করা বন্ধ করেতে পারেন।
কারণ, একটি সুন্দর এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারা পালন করার পথ আপনি সবসময়ই কোনো না কোনো ভাবে খুঁজে পাবেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.