• Skip to primary navigation
  • Skip to main content
  • Skip to primary sidebar

রূপকথন

Healthier Lifestyljhhe Choices

  • Facebook
  • Home
  • Shop
  • Blog
    • মেকআপ
      • ব্রাইডাল মেকআপ
      • সেলিব্রিটি মেকআপ
      • চোখের সাজসজ্জা
      • মুখের রূপসজ্জা
      • লিপ মেকআপ
      • মেকআপের ধারণা
      • মেহেদী ডিজাইন
      • নখের ডিজাইন
    • চুলের যত্ন
    • ত্বকের যত্ন
    • চুল স্টাইল
    • স্বাস্থ্য ও সুখ
      • ফিটনেস
      • স্বাস্থ্যকর খাবার
      • ওজন বৃদ্ধি
      • ওজন কমানো
      • যোগ ব্যায়াম
      • ডায়েট টিপস
      • আয়ুর্বেদ
  • Contact Us

Mohona

ওজন বাড়ানোর জন্য ১০ টি সহজ ঘরোয়া উপায়

by Mohona Leave a Comment

যদি আপনি সেই সব সংখ্যালঘুদের দলে থাকেন যারা ওজন হ্রাসের পরিবর্তে ওজন বৃদ্ধি করতে বেশি আগ্রহী, তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে উত্তম পথটি হল ঘরে তৈরি প্রতিকার গুলো গ্রহন করা।

এগুলো তৈরি খুবই সহজ এবং এগুলো খুব কার্যকরী, এবং এগুলো ব্যবহারে কোন ক্ষতিকর দিক নেই। এগুলো গ্রহন করার সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো আপনি আপনার নিয়মিত জীবনধারায় এই প্রতিকার গুলোর কোন প্রকার পরিবর্তন না করেই বেশিরভাগই খুব কার্যকরভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন এবং খুব সহজেই ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। ওজন বাড়ানোর জন্য ঘরোয়া প্রতিকারই সবচেয়ে সহজ একটি পথ।

ওজন বাড়ানোর জন্য সেরা ১০ টি ঘরোয়া উপায় দেওয়া হল যেগুলো তেমন কোন কষ্ট ছাড়াই আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।

১. পরিশোধিত মাখন এবং চিনি

  • ১ টেবিল চামচ পরিশোধিত মাখন এবং তার সমপরিমান চিনি মিক্স করুন।
  • খাবার খাওয়ার আধা ঘন্টা আগে খালি পেটে এই মিশ্রনটি খাবেন।
  • শুধু ১ মাস এই মিশ্রনটি গ্রহন করলে আপনি চমকপ্রদ ফলাফল লক্ষ্য করবেন।

২. বিকালের ঘুম

  • বিকাল বেলা কমপক্ষে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
  • এটা শুধু আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে না, বরং এটা আপনাকে রাতের বেলা ভালোভাবে ঘুমাতেও সাহায্য করবে।

*দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য এটি আমাদের সবচেয়ে প্রিয় একটি ঘরোয়া প্রতিকার!

৩. আম এবং দুধ

  • দিনে ৩ বার ১ টি করে আম (পাকা) খাবেন।
  • আম খাওয়ার পর অবশ্যই এক গ্লাস গরম দুধ পান করবেন।
  • ১ মাস পর আপনি লক্ষ্যণীয় ফলাফল দেখতে পাবেন।

৪. ডুমুর ফল এবং কিশমিশ

  • শুকনো ডুমুর ফল এবং কিশমিশ প্রচুর ক্যালরিতে পরিপূর্ণ, তাই তারা ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • ৬ টি শুকনো ডুমুর এবং প্রায় ৩০ গ্রাম কিশমিশ সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
  • এরপরের দিন এগুলোকে ২ ভাগ করে সকালে এবং রাতে খেয়ে নিন।
  • বেশিরভাগ মানুষ প্রায় ২০-৩০ দিনের মধ্যে সুস্পষ্ট ফলাফল দেখতে পায়।

৫. পিনাট বাটার/বাদামের মাখন

বর্তমানে সবাই জানে যে পিনাট বাটারে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। তাই ওজন বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া প্রতিকার হলো পিনাট বাটার।

আপনার পাউরুটিতে বেশি করে পিনাট বাটার লাগান এবং দেখতে থাকুন আপনার ওজন কত দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।

৬. আলু

আলু কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ, তাই এখানে কোন সন্দেহ নেই যে প্রতিদিন আলু খেলে এটি আপনার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

আলুতে মাখন লাগিয়ে গ্রিল অথবা ওভেনে বেক করুন, অথবা আপনি যদি পছন্দ করেন তাহলে এক্সট্রা ভার্জিন অয়েল দিয়ে আলু গুলোকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই করুন, তবে সপ্তাহে ২ বারের বেশি আলু খাবেন না।

৭. বাদাম

বাদাম যেমন আমন্ড, আখরোট, সূর্যমুখী বীজ এবং শস্য বীজ এগুলোতে প্রচুর ক্যালোরি রয়েছে এবং দিনে ৩ বেলা আহার গ্রহন করার মাঝখানের বিরতি গুলোতে খাওয়ার জন্য সেরা হলো বাদাম।

এদের দারুণ স্বাদ উপভোগ করার জন্য, পুষ্টি পাওয়ার জন্য এবং অবশ্যই ওজন বাড়ানোর জন্য বেশি বেশি বাদাম খাবেন। বাদামে স্বাস্থ্যকর তেল রয়েছে এবং এটি আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য একটি স্বাস্থ্যকর উপায়।

৮. স্ট্রেস মুক্ত থাকা

ওজন কমে যাওয়ার একটি প্রধান কারন হলো স্ট্রেস বা চাপ। তাই আপনি যদি ঘরে বা কর্মক্ষেত্রে চাপগ্রস্থ পরিস্থিতির সম্মুখীন হন, তাহলে যোগ ব্যায়াম করুন অথবা শ্বাস নিয়ন্ত্রন করার কৌশল আয়ত্ত করার চেষ্টা করুন।

এই কৌশল গুলো আপনার শরীরকে চাপমুক্ত করতে সাহায্য করবে। যখন আপনি আপনার চাপ নিয়ন্ত্রন করা এবং নিজেকে চিন্তা মুক্ত করার কৌশল আয়ত্ত করে ফেলবেন, তখন দেখবেন ওজন বৃদ্ধি করা আপনার জন্য খুব সহজ হয়ে গিয়েছে।

৯. কলা এবং দুধ

আপনি হয়ত জানেন না যে কলা প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরিতে পরিপূর্ণ। এরা আপনাকে মুহূর্তের মধ্যে শক্তি সরবরাহ করতে পারে।

এর মাধ্যমেই বুঝা যায় কেন টেনিস খেলোয়াড়েরা প্রতি খেলার মাঝখানে প্রায়ই কলা খান। প্রতিদিন সকালে একটি করে কলা খাবেন এবং খাওয়ার পরেই এক গ্লাস গরম দুধে এক চা চামচ চিনি মিশিয়ে পান করবেন।

১০. বাদাম দুধ

কয়েক পাউন্ড ওজন বাড়ানোর জন্য বাদাম দুধ পান করাও একটি দুর্দান্ত উপায়। দুধের সাথে বাদাম, শুকনো ডুমুর ফল এবং খেজুর মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। ফুটানো হয়ে গেলে দুধ ছেঁকে নিন এবং এক মাস ধরে প্রতিদিন এই গরম দুধ পান করুন। সিদ্ধ বাদাম, ডুমুর এবং খেজুর গুলো ফেলে দিবেন না। সিদ্ধ করার পরেও এগুলোর ভিতরে অনেক পুষ্টি বিদ্যমান থাকে। তাই এগুলোও খেয়ে ফেলুন।

আপনি আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য নানা রকম ঘরোয়া প্রতিকার গুলোকে সমন্বয় করে নতুন খাবার বানাতে পারেন এবং আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ওজন পাওয়া পর্যন্ত এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো চালিয়ে যান।

যদি আপনি আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর, সহজ এবং জটিলতাবিহীন ঘরোয়া প্রতিকার চান তাহলে আমাদের দেওয়া এই ১০ টি খাদ্য অনুসরন করতে পারেন।

Filed Under: Weight Gain

দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য প্রোটিন পাউডার কিভাবে ব্যবহার করবেন?

by Mohona Leave a Comment

সারা বিশ্বে যখন প্রায় সবাই ওজন কমানোর মিশনে নেমেছে, তখন এমন কিছু মানুষ আছে যারা সামান্য কয়েক কিলো ওজন বাড়ানোর জন্য মরিয়াভাবে চেষ্টা করেই চলেছে!

যারা অত্যাধিক মাত্রায় চর্মসার বা চিকন তাদের কাছে এই স্বাস্থ্য একদিকে যেমন বিষণ্ণতার কারন হয় তেমনি এই স্বাস্থ্য তাদের জন্য অনেক প্রতিকুলতা সৃষ্টি করে।

একজন ব্যক্তির অতি মাত্রায় পাতলা হওয়ার বিভিন্ন কারন থাকতে পারে। অনেক গুলো কারনের মধ্যে কিছু কারন হলো বিপাক, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, থাইরয়েড এবং নিম্নমানের খাদ্যাভাস ইত্যাদি।

আপনি যদি পাতলা থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে যান এবং আপনার ওজন কিছুটা হলেও বাড়াতে চান তাহলে প্রোটিন পাউডার আপনার জন্য খুব ভালো একটি বিকল্প হতে পারে, যেটি আপনার দেহে কিছু অতিরিক্ত ওজন বা পাউন্ড বাড়াতে সাহায্য করবে।

কিন্তু ওজন বাড়ানোর জন্য কিভাবে প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করতে হবে তা এই আর্টিকেল পড়ে জানার আগে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে প্রোটিন পাউডার জিনিষটা কি।

প্রোটিন পাউডার কি? [What is Protein Powder]

প্রোটিন পাউডার হলো একটি “বডি বিল্ডিং সাপ্লিমেন্ট” যা অন্যান্য খাবারের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে, দেহের পেশী বর্ধিত করে অথবা ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

তিন ধরনের প্রোটিন পাউডার রয়েছেঃ-

  • হোয়ে (Whey): এই পাউডারে ২৫% থেকে ৮৯% প্রোটিন থাকে বাকিটা ল্যাকটোজ, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে। ভালো মানের প্রতি ৩০ গ্রাম হোয়ে প্রোটিন কনসেনট্রেটে ২৪ গ্রাম প্রোটিন (এর মধ্যে ৫.৪ গ্রাম ব্রাঞ্চ-চেইন অ্যামিনো এসিড থাকে), ২.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১.৫ গ্রাম ফ্যাট এবং ১১৯ Kcal ক্যালোরি থাকে।
  • সয় (Soy): সয়া প্রোটিন হল একটি প্রোটিন যা সয়াবিন থেকে বিচ্ছিন্ন। এটি সয়াবিন খাবার থেকে তৈরি করা হয় যা অবমূল্যায়িত এবং বিকৃত করা হয়েছে।
  • কেইসিন (Casein): ক্যাসিন হলো আরেকটি দুধ ভিত্তিক প্রোটিন। গরুর দুধে প্রায় ৮০% কেসিন প্রোটিন থাকে।

এই পাউডার গুলো বাজারে বিভিন্ন দামে পাওয়া যায়। আপনি আপনার কাছাকাছি কোন ঔষধের দোকান থেকে এগুলো কিনতে পারেন।

ওজন বৃদ্ধিতে প্রোটিন পাউডারঃ

  • ওজন বাড়ানোর জন্য আপনাকে আপনার খাদ্যতালিকাতে হোয়ে প্রোটিন (Whey Protein)  অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রোটিন আপনার দেহের পেশী বাড়াতে এবং এদের ঠিক করতে সাহায্য করে। আপনাকে অবশ্যই দিনে অন্তত ১০০-২০০ ক্যালোরি প্রোটিন গ্রহন করতে হবে। এটি আপনাকে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই পাউন্ড ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। সপ্তাহে এক থেকে দুই পাউন্ড ওজন বাড়ানো শরীরের জন্য খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার।
  • আপনি যদি প্রোটিন পাউডার খাওয়া শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই “বায়্যোলোজিকাল ভ্যালু স্কেল” (বিভি) সম্পর্কে পরিচিত হতে হবে। এটি একটি স্কেল যেটি আপনার শরীরে প্রোটিনের পরিমান পরিমাপ করতে সাহায্য করে এবং বাইরে থেকে গৃহীত প্রোটিন শরীর কতটুকু ব্যবহার করবে তাও পরিমাপ করে। বায়্যোলোজিকাল ভ্যালু স্কেলে ডিমের হার ১০০%, গরুর মাংসের হার ৭৫% এবং হোয়ের (Whey) হার ১০৪%। কিন্তু হোয়ে (Whey) এর বিশুদ্ধ রূপ হচ্ছে আইসোলেটস হোয়ে (Isolates Whey) এবং এর হার প্রায় ১৭০%।
  • যদি আপনি ওজন বাড়ানোর সাথে সাথে আপনার পেশীও সুগঠিত করতে চান তাহলে আপনাকে প্রোটিন পাউডার গুলোর মধ্যে আরো ভালো সংস্করণটি বেছে নিতে হবে। টাকাও একটি বড় ব্যাপার কিন্তু যখন আপনি আপনার খাদ্যাভাস পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করেন এবং একটি নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকার উপর মনোনিবেশ করেন তখন আপনাকে একটু অর্থ ব্যয় করতেই হবে। বাজারে সহজলভ্য সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রোটিন পাউডারটি হলো “আইসোলেটেড হোয়ে” (Isolated Whey) এবং ওজন বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে সেরা পছন্দ এটি।

সুতরাং এখন আপনি জানেন কিভাবে প্রোটিনের সাহায্যে আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন।

আপনাদের মধ্যে যারা খুব ব্যস্ত থাকেন তারা উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারও গ্রহন করতে পারেন যেমন প্রোটিন বার (এতে প্রচুর পরিমানে শর্করার এবং কার্বোহাইড্রেট আছে), গ্রিল করা মরগি, ডিম এবং দুধ। আপনি চাইলে প্রোটিন শেইক ও খেতে পারেন।

আপনি এখন পাতলা হওয়া নিয়ে চিন্তা করা এবং সবার থেকে বিচ্ছিন্ন অনুভব করা বন্ধ করেতে পারেন।

কারণ, একটি সুন্দর এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনধারা পালন করার পথ আপনি সবসময়ই কোনো না কোনো ভাবে খুঁজে পাবেন।

Filed Under: Weight Gain

ওজন বাড়ানোর জন্য শেরা ১০ উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাদ্য

by Mohona Leave a Comment

বর্তমান বিশ্বে সবাই শীর্ণ দেহের অধিকারী হওয়ার জন্য অস্থির থাকে। রোগা হওয়ার জন্য মানুষ কি না করে। অন্যদিকে আবার ওজন বাড়াতে ইচ্ছুক এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর।

কিন্তু, অবশ্যই এমন কিছু মানুষ আছে যারা খুবই পাতলা/রোগা এবং তাই তারা নিজেদের ওজন আরো বাড়াতে চান যাতে তাদের শরীর অন্যদের মত আকর্ষণীয় দেখায়।

ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করার জন্য কিছু উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার আছে। চলুন এসকল খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাকঃ

১. সিরিয়াল (Cereals)

প্রতিদিন সকালের নাস্তায় আপনি যে পরিমান সিরিয়াল খান তার থেকে আরো ১০-২০ গ্রাম বেশি খেলে আপনি খুব দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। বেশির ভাগ সিরিয়াল গুলোতে প্রচুর পরিমানে ক্যলোরি থাকে এবং আপনি যদি এই ক্যালোরি অতিরিক্ত গ্রহন করে ফেলেন, তাহলে আপনি সারাদিন ধরে কাজ করে এই অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন।

২. পাস্তা এবং স্প্যাগেটি (Pasta and Spaghetti)

এটি খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার এবং উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার গুলোর মধ্যে এটি একটি। যখন ২ আউন্স পাস্তাতে কেবলমাত্র ৭৫ ক্যালোরি থাকে, তখন এর সাথে প্রচুর পরিমানে পনির এবং মিটবল মিশালে ক্যালোরির মাত্রা আকাশ ছুঁবে। ওজন বাড়ানোর জন্য এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে!

৩. বাদামের মাখন (Peanut Butter)

এই মাখনের মধ্যে অবশ্যই সল্টেড মাখনটি ব্যবহার করবেন। ২ টেবিল চামচ পিনাট মাখনে ১৯২ ক্যালোরি থাকে। তাই এটি আপনি শুধু পাউরুটির উপরেই লাগিয়ে খাবেন না, আরো বেশি ক্যালোরি পাওয়ার জন্য এই মাখন দিয়ে স্মুদি (Smoothies) এবং মিল্ক শেইক বানিয়েও খেতে পারেন।

৪. চকলেট নাট স্প্রেড (Chocolate Nut Spread)

চকলেট নাট স্প্রেড প্রায় নিউটেলার (Nutella) মত, কেবল্মাত্র ১০০ গ্রাম চকলেট নাট স্প্রেডে ৫৪১ ক্যালোরি থাকে। যদি আপনি ওজন বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন তাহলে প্রতিদিন উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ সুস্বাদু এই চকলেটি নাট স্প্রেডটি উপভোগ করতে থাকুন, যতক্ষন না পর্যন্ত আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ওজন লাভ করেন।

৫. পনির (Cheese)

আপনি যখন চেডার পনির (cheddar cheese) খাবেন, তখন এই পনির থেকে আপনি ৬৯ ক্যালোরি পাবেন। এছাড়াও আরো নানা রকম পনির আছে যেগুলোতে আরো বেশি ক্যলোরি আছে। পনিরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো বিকল্পটি হলো ব্রি (brie), কারন এটিতে যেমন প্রচুর চর্বি আছে তেমনই এটি খুব সুসাদু।

৬. সালাদ ড্রেসিং (Salad Dressings)

আপনার সালাদটি আরো আকর্ষণীয়, আরো সুস্বাদু এবং আপনার ওজন আরো বাড়ানোর জন্য সালাদ ড্রেসিং খুবই কার্যকরী একটি উপায়। এখানে বিভিন্ন রকম ক্রিমি (Creamy) এবং জিভে জল আনা সালাদ ড্রেসিং আছে যেগুলো আপনার সালাদের স্বাদ আরো বাড়িয়ে তুল্বে এবং আপনি এই সালাদ থেকে অতিরিক্ত ক্যালোরি গুলোও পাবেন। ১ টেবিল চামচ সালাদ ড্রেসিং এ প্রায় ৫০-৮৫ ক্যালোরি থাকে। তবে এই ক্যালোরির পরিমান কি ধরনের সালাদ ড্রেসিং বানানো হবে তার উপর নির্ভর করে।

৭. মাখন

৫ গ্রাম সল্টেড মাখনে ৩৬ ক্যালোরি থাকে। তাই, আপনি কতটুকু ক্যালোরি গ্রহন করবেন তা আপনার টোস্টে লাগানো মাখনের উপর নির্ভর করে, আপনি চাইলে এই ক্যলোরির পরিমান বাড়াতে অথবা কমাতে পারবেন। খাবার রান্না করতেও আপনি মাখন ব্যবহার করতে পারেন এবং আপনার রোস্ট করা মুরগিতে অসাধারন স্বাদ দিতে পারেন।

৮. চকলেট

আপনি নিজেকে সবসময় যেরকম মোটা দেখতে চান তা পাওয়ার জন্য ক্যান্ডি বার এবং মিনি চকলেট খেতে পারেন। মিষ্টিজাতীয় খাবারের সবসময়ের একঘেয়েমি স্বাদ দূর করার জন্য এর উপর একটি চেরি ফল এবং চকলেট আর আইসিং চিনি দিয়ে পরিবেশন করুন এবং তা খেয়ে উপভোগ করুন। চকলেট দ্রুত ওজন বাড়ানোর জন্য উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ শীর্ষস্থানীয় খাবারগুলোর মধ্যে একটি।

৯. গমের পাউরুটি (Whole Wheat Bread)

গমের পাউরুটি শুধু স্বাস্থ্যকরই নয়, এতে প্রচুর পরিমানে ক্যালোরি রয়েছে। এক টুকরো বাদামী পাউরুটিতে ৬৯ ক্যালোরি থাকে। তাই এখানে কোনো সন্দেহ নেই যে গমের পাউরুটি আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য প্রচুর ক্যালোরি সরবরাহ করবে এবং আপনাকে আরো আকর্ষণীয় এবং সুন্দর করে তুলবে।

১০. গুয়াকামোলে (Guacamole)

যদি আপনি ম্যাক্সিকান খাবার পছন্দ করেন তাহলে ওজন বৃদ্ধি করার জন্য আপনার দৈনন্দিন খাদ্যের মধ্যে গুয়াকামোলে অন্তর্ভুক্ত করা একটি ভাল উপায়। আপনি জেনে বিস্মিত হবেন যে, আপনি গুয়াকামোলে খাওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে কয়েক পাউন্ড ওজন বাড়াতে পারবেন। আপনি যদি ২৬১ গ্রাম গুয়াকামোলে খান, তাহলে আপনি ৩৬০ ক্যালোরি পাবেন। ওজন বৃদ্ধি ছাড়াও গুয়াকামোলের ভিতর থাকা অ্যাভাকাডো আপনার ত্বক এবং চুল কোমল ও মসৃণ করে তুলবে।

এগুলোই ওজন বাড়ানোর জন্য উচ্চ ক্যালোরি সমৃদ্ধ ১০ টি খাবার। আশা করি, এর মাধ্যমে আপনি কোনো সময় নষ্ট না করে খুব সহজেই দ্রুত আপনার আকর্ষণীয় শরীরটি পাবেন। তাই, আপনার দৈনন্দিন খাদ্যের মধ্যে এই খাবারগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন এবং পরিবর্তনগুলি লক্ষ্য করুন।

Filed Under: Weight Gain

১০ টি হরমোন নারীদের ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী

by Mohona Leave a Comment

ওজন কমানো শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর খাওয়ার সাথে সম্পর্কিত নয়, এটি আপনার শরীরের হরমোনের অবস্থা সাথেও সম্পর্কিত। ওজন কমানো সহজ কাজ নয়।

কিন্তু, আপনি কি জানেন আপনার শরীরের হরমোন গুলোর ভারসাম্য যদি ঠিক না থাকে তাহলে আপনার দেহের মাত্রাতিরিক্ত মেদ ঝরানো যে অনেক কঠিন হয়ে পড়ে?

হরমোন আপনার দেহের সংকটপূর্ণ প্রতিক্রিয়া এবং ক্রিয়াকলাপ গুলো যেমন বিপাক, প্রদাহ, মেনোপোজ, গ্লুকোজের উঠা-নামা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।

হরমোন ভারসাম্য বিপর্যয়ের প্রধান কারণগুলো হলো দুশ্চিন্তা, বয়স, জিন এবং নিম্ন জীবনধারা যেটা নিষ্ক্রিয় বিপাক, বদহজম, অনিয়ন্ত্রিত ক্ষুধার দিকে ধাবিত করে — এসব কারন আপনাকে ওজন বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায়।

যদিও নারীরা অতিমাত্রায় হরমোন নিঃসরণে অভ্যস্ত, কিন্তু হমোনের দীর্ঘকালস্থায়ী ভারসাম্যহীনতা আপনাকে মেদবৃদ্ধিজনিত রোগে আক্রান্ত করে দিতে পারে।

সুতরাং, চলুন দেখে নেই আপনার ওজন বৃদ্ধির জন্য কোন হরমোনটি দায়ী এবং এ বিষয়ে আপনি কি করতে পারেন।

১. থাইরয়েড (Thyroid)

থাইরয়েড গ্রন্থি, এটি আপনার গলার তলদেশে অবস্থিত এবং এই গ্রন্থি তিনটি হরমোন উৎপাদন করে — টি৩ (T3), টি৪ (T4) এবং ক্যালসিটোনিন (Calcitonin)। এই হরমোনগুলো বিপাক, ঘুম, হৃদ কম্পন, শরীরের বিকাশ, মস্তিষ্কের বিকাশ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রন করে। মাঝে মাঝে থাইরয়েড গ্রন্থি থাইরয়েড হরমোন কম উৎপাদন করে যার ফলে হাইপোথাইরয়েডিজম হয়।

হাইপোথাইরয়েডিজম প্রায়ই ওজন বৃদ্ধি, বিষণ্নতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্লান্তি, উচ্চ রক্তচাপ, ধীর হৃদ স্পন্দন ইত্যাদির সাথে যুক্ত থাকে। হাইপোথাইরয়েডিজম অনেক কারণে হতে পারে যেমন গ্লুটেনের অসহিষ্ণুতা, অপুষ্টি, দূষিত পরিবেশ ইত্যাদি। এমনকি থাইরয়েডের কারনে আপনি শুধু মোটা হবেন না, আপনার শরীরে পানিও চলে আসবে। শুধুমাত্র থাইরয়েডের ভারসাম্যহীনতার কারনে আপনার ওজন ৫-১০ পাউন্ড বেড়ে যেতে পারে।

কিভাবে থাইরয়েডের ভারসাম্যহীনতার চিকিৎসা করবেন?

  • টি৩ (T3) এবং টি৪ (T4) এর পাশাপাশি থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (টিএসএইচ) এরও পরীক্ষা করান। একজন ডাক্তার দ্বারা রিপোর্ট গুলো পর্যবেক্ষণ করান।
  • কাঁচা শাকসবজি খাওয়া এড়িয়ে চলুন। ভালোভাবে রান্না করা খাবার খান।
  • আয়োডিনযুক্ত লবন খান।
  • জিংক যুক্ত খাবার যেমন অয়েস্টার এবং কুমড়োর বীজ খান।
  • মাছের তেল এবং ভিটামিন ডি এর সাপ্লিমেন্ট খান।
  • যদি আপনার ডাক্তার নির্দেশনা দেন তবে থাইরয়েডের ঔষধ খান।

২. ইনসুলিন (Insulin)

ইনসুলিন হল একটি হরমোন যা অগ্ন্যাশয় দ্বারা নিঃসরিত হয়, যা গ্লুকোজকে কোষের ভিতর বহন করতে সাহায্য করে যা শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয় অথবা চর্বি হিসেবে দেহে জমা থাকে।

এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় মাত্রাতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল, কৃত্রিম চিনিযুক্ত পানীয় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করা (অথবা অনেক সময় অতিরিক্ত ফল খাওয়া) ইনসুলিন প্রতিরোধ করতে পারে।

এক্ষেত্রে, পেশীর কোষগুলো গ্লুকোজযুক্ত ইনসুলিন গুলো চিনতে পারে না, এবং যার কারণে গ্লুকোজ গুলো রক্তের মধ্যে থেকে যায় ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। পরিশেষে এটি ওজন বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায় এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস হয়।

কিভাবে ইনসুলিনের চিকিৎসা করবেন?

  • আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করুন এবং আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • সপ্তাহে ৪ ঘন্টা ব্যায়াম করুন।
  • প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল, গভীর রাতে খাওয়া, বায়ু ভর্তি এবং কৃত্রিম চিনিযুক্ত পানীয় ইত্যাদি পরিহার করুন।
  • সবুজ পাতাযুক্ত সবজি, মৌসুমি সবজি (দিনে ৪-৫ বার) এবং মৌসুমি ফল (দিনে ৩ বার) গ্রহন করুন।
  • আপনার দেহে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা উন্নত করতে চর্বিযুক্ত মাছ, বাদাম, অলিভ অয়েল ইত্যাদি গ্রহন করুন।
  • কম ক্যালোরিযুক্ত (২০০০-২২০০ ক্যালোরি) কিন্তু অধিক মাত্রায় পুষ্টিকর খাদ্য খান।
  • প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করুন।

৩. লেপটিন (Leptin)

সাধারন অবস্থায় থাকাকালীন, খাওয়ার সময় আপনার পেট ভরে গেলে হরমোন লেপটিন আপনাকে পেট ভরার সংকেত দিবে এবং আপনাকে খাওয়া বন্ধ করতে বলবে। কিন্তু যে সকল খাবারে উচ্চমাত্রায় চিনি থাকে যেমন ক্যান্ডি, চকোলেট, ফল (সেই সকল ফলে প্রচুর ফ্রুক্টোজ থাকে) এবং প্রক্রিয়াজাত ফল, এসব খাবার মাত্রাতিরিক্ত গ্রহন করলে, এসব খাবারে থাকা অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ চর্বিতে রুপান্তরিত হয় যা লিভার, পেট এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে জমা হয়।

এখন, এই চর্বির কোষগুলো লেপটিন নিঃসরণ করে। আপনি যত বেশি ফ্রুক্টোজ যুক্ত খাবার গ্রহন করবেন, তত বেশি লেপটিন নিঃসরিত হবে। এর ফলে শরীর থেকে লেপটিন উধাও হয়ে যায় এবং মস্তিষ্ক অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করার সংকেত নেওয়া বন্ধ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত এটি আপনাকে ওজন বৃদ্ধির দিকে ধাবিত করে।

কিভাবে লেপটিন স্তর নিম্নমুখী রাখবেন?

  • আপনাকে সঠিক বিশ্রাম নিতে হবে। গবেষনায় দেখা গেছে, কম ঘুমালে দেহে লেপটিনের মাত্রা কমে যায় এবং মস্তিষ্ক খাবার খাওয়া বন্ধ করার সংকেত নেওয়া বন্ধ করে দেয়। তাই, আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
  • ২ ঘন্টা পর পর খান।
  • চিনিযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বর্জন করুন, দিনে ৩ বার ফল খান, গাড়ো সবুজ পাতাযুক্ত সবজি খান এবং স্বাস্থ্যকর নাস্তা গ্রহন করুন।
  • নিজেকে হাইড্রেটেড রাখুন কারন ডিহাইড্রেশনও আপনার ক্ষুধা বাড়িয়ে দিবে।

৪. ঘ্রেলিন (Ghrelin)

ঘ্রেলিনকে সবাই “ক্ষুধার হরমোন” হিসেবে চিনে, এটি ক্ষুধা বাড়াতে এবং দেহে চর্বি জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এটি প্রধানত পাকস্থলী থেকে নিঃসরিত হয়। সামান্য পরিমান ঘ্রেলিন ছোট অন্ত্র, মস্তিষ্ক, এবং অগ্ন্যাশয় থেকেও নিঃসরিত হয়। রক্তে উচ্চ মাত্রায় ঘ্রেলিনের উপস্থিতি দেহের ওজন বাড়িয়ে দেয় এবং এই হরমোন মোটা মানুষের জন্য আরো বেশি ক্ষতিকর। এমনকি যখন কেউ খাবার খুব কম খায় অথবা উপবাস বা রোজা রাখলে তখন ঘ্রেলিনের মাত্রা আরো বেশি বেড়ে যায়।

কিভাবে ঘ্রেলিনের মাত্রা কমাবেন?

  • ২-৩ ঘন্টা পর পর খান।
  • দিনে ৬ বার খাবার খান।
  • তাজা ফল, শাক-সবজি, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, আঁশযুক্ত খাবার এবং স্বাস্থ্যকর তেল জাতীয় খাবার গ্রহন করুন।
  • খাবার খাওয়ার ২০ মিনিট আগে ১ কাপ পানি পান করবেন।
  • যদি সমস্যা না যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • নিজেকে কর্মক্ষম রাখুন।

৫. ইস্ট্রোজেন (Estrogen)

উচ্চ এবং নিম্ন মাত্রার ইস্ট্রোজেন দুটিই ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। প্রথমত, আমি আপনাকে জানাতে চাই কিভাবে উচ্চমাত্রার ইস্ট্রোজেন আপনার ওজন বাড়াতে পারে। সাধারনত দেহে উচ্চমাত্রার ইস্ট্রোজেন ডিম্বাশয়ে এই হরমোন অত্যাধিক মাত্রায় উত্পাদনের কারনে হয় অথবা ইস্ট্রোজেন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের কারণেও হয়। বর্তমানে, যখন আপনি সুস্থ থাকেন তখন আপনার দেহ যথেষ্ট পরিমাণ ইন্সুলিন উৎপাদন করতে পারে এবং আপনার রক্তে শর্করার মাত্রাও ঠিক থাকে।

কিন্তু, যখন আপনার দেহে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন ইন্সুলিন উৎপাদনের কোষগুলিতে চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে, এটি আপনার দেহে ইন্সুলিনের উৎপাদন প্রতিরোধ করে এবং আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে ওজন বৃদ্ধি করে দেয়।

দ্বিতীয়ত, প্রি-মেনোপোজাল নারীদের দেহে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কম থাকে, যেটি একজন নারীর গর্ভবতী হওয়ার ক্ষমতা কেড়ে নেয়। ডিম্বাশয়ের কোষগুলো ইস্ট্রোজেন উত্পাদন করার ফলে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা আরো হ্রাস পায়। এখন যথেষ্ট পরিমাণ ইস্ট্রোজেনের সরবরাহ পেতে দেহ অন্যান্য কোষ খোঁজা শুরু করে যেগুলো ইস্টোজেন উৎপাদন করে। এবং এরকম একটি উত্স হচ্ছে চর্বির কোষ। যখন ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায়, শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য দেহ তার সকল শক্তির উৎসকে চর্বিতে রুপান্তর করে। পরবর্তীতে এটি দেহের নিচের অংশের ওজন বৃদ্ধি করে দেয়।

কিভাবে শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা ঠিক রাখবেন?

  • প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া এড়িয়ে চলুন। স্থানীয় বাজার থেকে মাংস কিনুন।
  • অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
  • প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। আপনি মেনোপোজের স্বীকার হয়ে থাকলে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার জন্য যোগ ব্যায়াম করুন।
  • শস্যজাতীয় খাবার, সতেজ সবজি এবং ফল খান।
  • আপনার দেহের ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বজায় রাখার জন্য আপনার জীবনধারাতে আনা পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে আপনার ডাক্তারকে অবগত করুন।

৬. কর্টিসোল (Cortisol)

কর্টিসোল একটি স্টেরয়েড হরমোন যা অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি দ্বারা উৎপন্ন হয়। যখন আপনি মানুষিক চাপ, বিষণ্ণ, চিন্তিত, উদ্বিগ্ন, রাগান্বিত, শারীরিকভাবে আহত ইত্যাদি থাকেন তখন এই হরমোনটি নিঃসরিত হয়। কর্টিসোলের দুটি প্রধান ফাংশন হল শক্তি নিয়ন্ত্রণ করা এবং শক্তির যোগান দেওয়া।

আমি আপনাকে বিস্তারিত জানাচ্ছি।

কর্টিসোল দেহের একটি নির্দিষ্ট কাজ পরিচালনা করতে কোন ধরনের শক্তি (শর্করা, প্রোটিন অথবা চর্বি) প্রয়োজন তা প্রথমে স্থির করে শক্তি নিয়ন্ত্রন করে। কর্টিসোল সংরক্ষিত চর্বি থেকে তেল “ক্ষুধার্ত কোষ” অথবা কর্মঠ পেশীগুলোতে পরিবহনের মাধ্যমে শক্তি জোগাতে সহায়তা করে। মূলত, কর্টিসোল স্বল্পমেয়াদী চাপের (মানসিক, শারীরিক, বাস্তব বা কল্পিত) প্রতিক্রিয়া সামলাতে প্রয়োজন হয়।

কিন্তু নিম্নমানের জীবনধারা নির্বাচন এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার বদঅভ্যাসের কারনে, আপনার শরীরে প্রতিনিয়ত চাপের সৃষ্টি হতে পারে। যেটি আপনার কর্টিসোল নিঃসরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা দেহকে হাইপারিনসুলিনেমিক (Hyperinsulinemic) করে তুলে, অন্ত্রের অভ্যন্তরে চর্বি বৃদ্ধি করে এবং চর্বি কোষকে আরো পরিপক্ক করে তুলে।

কিভাবে কর্টিসোলের মাত্রা কমাবেন?

  • কি কি করতে হবে তার একটি তালিকা তৈরি করুন এবং যেই কাজগুলো সম্পূর্ণ করেছেন তাতে টিক চিহ্ন দিন। এটি শুধুমাত্র আপনার কাজ গুলো স্মরণ করিয়ে দিবে না বরং আপনাকে ভালো অনুভব করাবে।
  • চাপ কমানোর সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নিজের জন্য সময় বের করা। আপনি সবসময় করতে চেয়ে ছিলেন এমন একটি শখ পুরন করুন, নতুন কিছু শিখুন, বই পড়ুন, আপনার পছন্দের চলচ্চিত্র দেখুন এবং আরো অনেক কিছু করতে পারেন।
  • পরিবার অথবা বন্ধুদের সাথে সময় কাটান। যদি আপনাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য সঠিক কেউ থাকে তাহলে এর থেকে ভালো আর কিছুই হতে পারেনা। বিশেষ করে যারা আপনার সমালোচনা করেন না এবং আপনার অনেক ভালো চান।
  • আপনার প্রতিদিনের জীবনযাত্রা থেকে কয়েকদিনের জন্য ছুটি নিন এবং এমন কিছু করুন যা আপনি আগে কখনো করেননি।
  • লোকেরা আপনার সম্পর্কে কি ভাবছে তা নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করুন।
  • দেহ এবং মনের চাপ কমানোর জন্য প্রতিদিন এক ঘন্টা গভীরভাবে শ্বাস নিন, যোগব্যায়াম করুন এবং ধ্যান করুন।
  • প্রতি রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান।
  • মদ, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবো তেলে ভাজা খাবার পরিহার করুন।

৭. টেস্টোস্টেরোন (Testosterone)

মহিলাদের দেহে অল্প মাত্রার টেস্টোস্টেরোন উৎপন্ন হয়। টেস্টোস্টেরোন মেদ ঝরাতে সাহায্য করে, হাড় ও মাংসপেশী আরো মজবুত করে এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নারীদের মধ্যে, ডিম্বাশয়ে টেস্টোস্টেরোন উৎপন্ন হয়। বয়সের বৃদ্ধি এবং চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে নারীদের মধ্যে টেসটোসটের মাত্রা কমাতে পারে। এবং কম মাত্রার টেস্টোস্টেরোন হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস, পেশীর ভরের ক্ষতি, স্থুলতা বৃদ্ধি, বিষন্নতার কারনের সাথে সম্পর্কিত। এটি দেহে চাপ ও প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে যেটি দেহে মেদ আরো বাড়াতে সাহায্য করে।

কিভাবে দেহে টেস্টোস্টেরোনের মাত্রা বাড়াবেন?

  • ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে আপনার টেস্টোস্টেরোন মাত্রা পরীক্ষা করুন।
  • ওজন হ্রাসের জন্য আপনার খাদ্যে আঁশযুক্ত খাবার যেমন ফ্লাক্স সীডস (Flaxseeds), আলুবোখারা, কুমড়োর বীজ, আস্ত শস্যদানা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করুন।
  • টেস্টোস্টেরোনের মাত্রা আরো উন্নত করতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন আপনার বিপাক বৃদ্ধি করুন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করার জন্য ভিটামিন সি, প্রোবায়োটিক্স এবং ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নিন।
  • মদ পান থেকে বিরত থাকুন কারন এটি লিভার এবং কিডনি ক্ষতি করতে পারে।
  • টেস্টোস্টেরোনের মাত্রা বাড়াতে জিংক এবং প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহন করুন।

৮. প্রজেস্টেরন (Progesterone)

দেহের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ঠিক রাখতে প্রজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোন অবশ্যই সঠিক ভারসাম্যে থাকতে হবে। মেনোপোজ, চাপ, গর্ভনিরোধক ঔষধ সেবন অথবা এন্টিবায়োটিক আছে এমন সব খাবার খাওয়ার কারনে এবং এমন সব হরমোন যেগুলো দেহে ইস্ট্রোজেনে রূপান্তরিত হয় এ সকল কারনে প্রজেস্টেরনের মাত্রা নিচে নেমে যেতে পারে। এটি ধীরে ধীরে ওজন বৃদ্ধি এবং বিষন্নতা সৃষ্টি করতে পারে।

কিভাবে দেহে প্রজেস্টেরনের মাত্রা বাড়াবেন?

  • কোন জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি আপনার জন্য ভালো হবে তা জানার জন্য আপনার স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।
  • প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া বন্ধ করুন।
  • প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।
  • গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার অনুশীলন করুন।
  • শারীরিক ও মানুষিক চাপ এড়িয়ে চলুন।

৯. ম্যালাটনিন (Melatonin)

ম্যালোটনিন পাইনেল গ্রান্ড দ্বারা নিঃসরিত হয় যেটি ঘুমানো এবং ঘুম থেকে উঠার সময় সার্কাডিয়ানের (Circadian) উঠা-নামার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ম্যালোটনিনের মাত্রা সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাড়তে থাকে এবং খুব ভোরে কমে যায়। তাই, আপনি যদি একটি অন্ধকার রুমে ঘুমান, তাহলে ম্যালোটনিনের মাত্রা বেড়ে যাবে এবং আপনার দেহের তাপমাত্রা কমে যাবে।

বৃদ্ধিজনিত হরমোন তখন মুক্তি পায়, যেটি শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, শারীরিক গঠন উন্নত করে, মেদবিহীন পেশী তৈরিতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। কিন্তু সার্কাডিয়ানের (Circadian) উঠা-নামা ব্যাহত হওয়ার কারনে আপনাদের মধ্যে অনেকেরই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হয় না অথবা শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অন্ধকার পান না। এটি চাপ বৃদ্ধি করে যেটি আপনার দেহে প্রদাহ বৃদ্ধি করে এবং ওজন ও বৃদ্ধি করে।

কিভাবে ম্যালোটনিন স্তর বাড়াবেন?

  • প্রএকটি অন্ধকার রুমে ঘুমান।
  • তিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান।
  • রাতে অনেক দেরি করে খাবেন না।
  • ঘুমোতে যাওয়ার আগে আপনার সমস্ত গ্যাজেট বন্ধ করুন।
  • বাদাম। চেরী, এলাচ, ধনে পাতা এবং সূর্যমুখী ফুলের বীজ খান কারন এরা সকলে ম্যালোটনিন সরবরাহ করে।

১০. গ্লুকোকোরটিকয়েডস (Glucocorticoids)

প্রদাহ থেকে আরোগ্য লাভের প্রাথমিক পদক্ষেপ। দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফলের কারণ হতে পারে। এবং তাদের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি একটি। গ্লুকোকোরটিকয়েডস প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। গ্লুকোকোরটিকয়েডস দেহে চিনি, চর্বি এবং প্রোটিনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে। এবং গবেষনায় খুঁজে পাওয়া গেছে গ্লুকোকোরটিকয়েডস চর্বির ভাঙ্গন এবং প্রোটিনের ভাঙ্গন বৃদ্ধি করে এবং শক্তির উৎস হিসেবে গ্লুকোজ অথবা চিনির ব্যবহার হ্রাস করে।

সুতরাং, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে দেহ ইন্সুলিন প্রতিরোধক হয়ে যায়। আর দেহে ইন্সুলিন না থাকলে পরবর্তীতে দেহ মোটা হতে থাকে এবং দেহে ইন্সুলিন না থাকলে ডায়াবেটিস ও বেড়ে যেতে থাকে।

কিভাবে গ্লুকোকোরটিকয়েডসের মাত্রা কমাবেন?

  • শরীরের মধ্যে প্রদাহ কমাতে শারীরিক এবং মানসিক চাপ হ্রাস করুন।
  • প্রদাহ কমানোর জন্য তাজা শাকসবজি, ফল, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর তেল জাতীয় খাদ্য যেমন বাদাম, বীজ, জলপাইয়ের তেল, মাছের তেল ইত্যাদি খান।
  • ৭-৮ ঘন্টা ঘুমান।
  • প্রতিদিন ৩-৪ লিটার পানি পান করুন।
  • নিজেকে শারীরিক ও মানুষিকভাবে কর্মক্ষম রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটুন।
  • আপনার কাছের মানুষগুলোর সাথে সময় কাটান এবং নিজের জন্যও কিছু সময় রাখুন।
  • আপনি যদি বিষণ্নতা, উদ্বেগ, PTSD ইত্যাদিতে ভুগতে থাকেন তাহলে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
  • কোন কঠোর খাদ্যতালিকা অনুসরন করবেন না কারণ এরা আপনার দেহে প্রদাহ বৃদ্ধি করে।

হরমোনের কারনে ওজন বৃদ্ধি অনেক জটিল হতে পারে, এবং তাই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সঙ্গে মোকাবিলা করার সময় আপনাকে খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

নিচে একটি তালিকা দেওয়া হলো যেগুলো আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবেঃ

সতর্কতাঃ

  • কখনো নিজে নিজে ঔষধ সেবন করবেন না কারন ওজন বৃদ্ধি বিভিন্ন কারনে হতে পারে এবং আপনাকে এমন একটি ওজন কমানোর উপায় খুঁজে নিতে হবে যেটি আপনার স্বাস্থ্যর কোন ক্ষতি করবে না।
  • আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন এবং আপনার ওজন হরমোনের কারনে বৃদ্ধি পাচ্ছে কিনা তা জানতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান।
  • যদি হ্যাঁ হয়, তবে একটি হরমোনই ওজন বৃদ্ধির কারন নাকি অন্যান্য হরমোন ও ওজন বৃদ্ধির কারন তা খুঁজে বের করতে হবে।

সুতরাং, এই ১০ টি হরমোন আপনার ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী হতে পারে। যদিও এটি শুনতে জটিল মনে হবে, কিন্তু এর মাধ্যমেই আপনি আপনার ওজন হ্রাস করতে না পারার কারন জানতে পারবেন এবং অনেক বড় চিন্তা থকে মুক্তি পাবেন। এবং এর থেকে বড় মুক্তি আর কোন কিছুতেই হতে পারে না।

এই অনুচ্ছেদটি অনুসরণ করুন এবং নিশ্চিতভাবে আপনি খুব দ্রুত ওজন কমাতে সক্ষম হবেন।

Filed Under: Weight Gain

৩০ দিনে ওজন কমানোর কার্যকরী উপায়

by Mohona Leave a Comment

মাত্রাতিরিক্ত ওজন একজন মানুষকে দুর্দশাগ্রস্ত করে তুলে। মিডিয়া এবং সমাজ থেকে আমাদের প্রতিনিয়ত একটা কথাই শুনতে হয় তা হল “অস্থুল বা পাতলা ধরনের হওয়াই সুন্দর”। কিন্তু মূল কথা হল সকল স্বাস্থ্য গড়নই সুন্দর। অতিরিক্ত ওজনে আপনাকে দেখতে কেমন দেখাবে সেটা মূল সমস্যা না, মূল সমস্যা হল আপনার স্বাস্থ্য। কিন্তু শুধু অনুশীলন করা এবং অতিরিক্ত ওজন নিয়ে সবসময় চিন্তা-ভাবনা আপনাকে তেমন কোন ভালো ফল দিবে না।

ওজন কমানোর জন্য আপনাকে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

প্রথমত: আপনাকে মেনে নিতে হবে যে আপনার ওজন স্বাভাবিক নয় এবং মানুষের গড় ওজন থেকে অনেক উপরে।

দ্বিতীয়ত: অতিরিক্ত ওজন কমানর জন্য নিজেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করা এবং শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাওয়া যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করেন।

যদি কেউ এই পদক্ষেপ গুলো গ্রহন করেন এবং সঠিকভাবে চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গিকার করেন তাহলে ৩০ দিনে ওজন কমানোর জন্য একটি খাদ্য পরিকল্পনা আছে যা আপনাকে সত্যিই ৩০ দিনে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

কিভাবে আপনি ৩০ দিনে ওজন কমাবেন?

৩০ দিনে ওজন কমানোর কার্যকরী উপায়

ওজন কমানোর জন্য সবসময় একটি স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি থাকে। খুব দ্রুত বা কঠোরভাবে ওজন কমানো এবং বাড়ানো একজন ব্যক্তির জন্য এবং তার শরীরের জন্য বিপদজনক। এরকম ওজনে উঠা-নামা করা দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং খনিজ সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং ব্যক্তিকে আরো অসুস্থ এবং রোগাক্রান্ত করে দিতে পারে। এখানে ওজন কমানোর জন্য একটি পরিকল্পিত এবং পূরনাঙ্গ পথ আছে যার মাধ্যমে আপনি কি খাচ্ছেন এবং কখন খাচ্ছেন তা লক্ষ্য রাখতে পারবেন।

৩০ দিনে ওজন কমানর একটি সহজ খাদ্যপরিকল্পনা নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

১. সত্য স্বীকার করার মানুষিকতা

এক মাসে ওজন কমানোর জন্য আপনার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল আপনাকে সত্যটা স্বীকার করতে হবে যে আপনি আপনার ওজন বাড়িয়ে ফেলেছেন এবং আপনার ওজন স্বাভাবিকের থেকে বেশি। হয়তো ইতিমধ্যে আপনি অতিরিক্ত স্বাস্থ্যের অধিকারী এবং বর্তমানে কলেজ বা কর্মক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

পরিস্থিতি যেরকমই হোক না কেন, সবসময় মনে রাখবেন যে যখন থেকে আপনি পরিস্থিতি স্বীকার করার মানুষিকতা দেখানো শুরু করবেন ঠিক তখনি আপনি নিজেকে এবং নিজের সব কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন। সুতরাং, নিজেকে প্রশ্ন করার মাধ্যমে পরিবর্তন শুরু করুন।

নিজেকে প্রশ্ন করুন এই মুহূর্তে আপনার ওজন কতটুকু এবং একটি লক্ষ্য আছে যেটি এই এক মাসে আপনাকে পুরন করতেই হবে। এটির জন্য আপনার নিজেকে ঘৃণা করতে হবে না। অতীতে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। অতীত পরিবর্তন করার জন্য আপনি কিছুই করতে পারবেন না, কিন্তু ঠিক এই মুহূর্তে আপনি আপনার জীবনধারা পরিবর্তন করে ফেলতে পারেন এবং নিজেকে সারাজীবনের জন্য পুরোপুরি বদলে ফেলতে পারেন।

২. লক্ষ্য স্থির করুন

দ্বিতীয় যে জিনিষটি আপনাকে করতে হবে তা হল কিছু লক্ষ্য স্থির করতে হবে যা বাস্তববাদী বা গ্রহনযোগ্য।

আমি জানি এখানে এমন কিছু কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত অদ্ভুত খাদ্যপরিকল্পনা আছে যা আপনাকে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ওজন কমানোর নিশ্চয়তা দেয়। এটি সত্যিই খুব হাস্যকর।

যদি একটি খাদ্যপরিকল্পনা আপনাকে ৭ দিনে ৭ পাউন্ড কমাতে সাহায্য করে তাহলে এটি অবশ্যই আপনার স্বাস্থের জন্য ভালো না। আসলে, এটি একটি অস্থায়ী পরিকল্পনা এবং এটি একটা সময়ের পরে আপনাকে অসুস্থ করে ফেলতে পারে।

আপনার অবশ্যই ধৈর্য্য থাকতে হবে এবং লক্ষ্যগুলো স্থির করতে হবে যা বাস্তবসম্মত। একটি মোটামোটি সহজ লক্ষ্য হল এক মাসে ২-৩ কেজি ওজন কমানো এবং এই লক্ষ্যটি যথাসময়ে পুরন করা সম্ভব এবং এর লক্ষণ আপনার শরীরেও দেখাবে। একটি চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করার আগে এভাবেই চিন্তা করুন।

৩. কার্ডিও (Cardio) করার চেষ্টা করুন

তৃতীয় পদক্ষেপটি হল আপনার দৈনন্দিন কর্মসূচিতে কার্ডিও অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। নতুনদের জন্য সপ্তাহে ৫ বার ৩০ মিনিট ব্যায়াম করাই যথেষ্ট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনি ৪০ মিনিট বা তার থেকেও বেশি সময় ব্যায়াম করতে পারবেন। এটা সবসময় আপনার সাচ্ছন্দ্যতার স্তরের উপর নির্ভর করে।

মনে রাখবেন, আপনি যেই ব্যায়াম রুটিন অনুশীলন করেন সেই ব্যায়াম রুটিনই সবসময় অনুশীলন করবেন। আপনার ব্যায়াম করার দিন গুলো থেকে একটি দিনও ছুটি নিবেন না। সবসময় মনে রাখবেন যখন আপনি ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তখন প্রতি ক্যালোরি গণনা করা হচ্ছে। আপনি দুই মিনিট শরীর গরম করার মাধ্যমে শুরু করতে পারেন এবং শরীর কিছুক্ষণ প্রসারণের মাধ্যমে শেষ করতে পারেন।

যদি আপনি কিভাবে কার্ডিও ব্যায়াম অনুশীলন করতে হবে তা বুঝতে না পারেন তাহলে ইউটিউবে ভিডিও দেখার মাধ্যমে চেষ্টা করতে পারেন।

৪. সঠিক সময়ে খাবার গ্রহন করুন

সঠিক খাবার খাওয়া যতটা গুরুত্বপূর্ণ, সঠিক সময়ে খাবার খাওয়াও ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। রাত ৮ টার পর রাতের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং রাতের খাবার খাওয়ার পর ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই কিছুক্ষণ কাজ করে নিবেন।

৫. নাস্তা গ্রহণে সতর্ক থাকুন

বেশিরভাগ ওজন বাড়ার প্রধান কারন হচ্ছে অতিমাত্রায় ভারী নাস্তা গ্রহণ করা! প্রতিটা আহারের মাঝখানে আমরা নিজেরাই নিজেদের যেকোন কিছু এবং সবকিছু খাওয়ার স্বাধীনতা দেই। জলখাবার বা নাস্তা খাওয়া খারাপ নয়, কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। বিস্কুটের বদলে রোস্টেড বাদাম অথবা সালাদ খান। যতটা সম্ভব ক্যাফেইন গ্রহণ করা হ্রাস করুন।

৬. নিজের বল প্রশিক্ষণ

বল প্রশিক্ষণ এমন একটি জিনিষ যা আপনি অনুশীলনের সময় কখনই হাত ছাড়া করতে চাইবেন না। কার্ডিও প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর ১০ মিনিট সময় বল প্রশিক্ষণে ব্যয় করুন। এক্ষেত্রে ডাম্ববেলস খুব ভালো একটি বিকল্প, কিন্তু যদি আপনার ঘরে ডাম্ববেলস না থাকে তাহলে এটির পরিবর্তে ভারী পানির বোতল ব্যবহার করতে পারেন। কিছু সংখ্যক মহিলা বালু ভরতি বোতলও পছন্দ করেন। এই প্রশিক্ষণ আপনার অনুশীলনকে আরো কার্যকরী করে তুলবে। এতে নিশ্চিতভাবে আপনার শরীরকে একটি সুন্দর আকৃতি দিবে এবং আপনার বাহু, অ্যাবস এবং নিতম্বকে দৃঢ় করবে।

৭. হাঁটুন

কার্ডিও এর পরিবর্তে হাঁটাকে আপনি বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন না। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই হাঁটা এবং কার্ডিও দু’টিই সমন্বয় করে করতে হবে।

আপনি কি জানেন এটা আপনার জন্য কতটা কার্যকর?

সকালে ৪৫ মিনিটের জন্য হাঁটা আপনার শরীরের ১৬০ ক্যালোরি পর্যন্ত খরচ করতে পারে। যদি আপনি আরো দ্রুত হাঁটতে পারেন তাহলে এটি অবশ্যই আপনাকে আরো বেশি ক্যালোরি খরচ করতে সাহায্য করবে। এটি মেটাবলিজম (metabolism) বৃদ্ধি করে এবং আরো দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।

যদি আপনার কাছে হাঁটা কিছুটা বিরক্তিকর মনে হয় তাহলে আপনার সকল পছন্দের গান গুলো নিয়ে একটি প্লেলিস্ট তৈরি করুন, আপনার মুঠোফোনে ডাউনলোড করুন এবং যখন হাঁটবেন তখন শুনতে থাকুন। এটা অবশ্যই আপনাকে ব্যায়াম করতে উৎসাহ জোগাবে।

৮. সিঁড়ি আরোহণ

বেশ কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, যারা নিয়মিত সিঁড়ি আরোহণ করেন তারা অন্যদের তুলনায় দ্রুত ওজন কমাতে সক্ষম। যদি আপনি দিনে ৫ মিনিট শুধু সিঁড়ি আরোহণে ব্যয় করতে পারেন, তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে কিছু অতিরিক্ত ক্যালোরি খরচ করতে পারবেন। উপরের দিকের সিঁড়িতে উঠার উপকারিতা হচ্ছে এটি আপনার হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেবে এবং আপনাকে মুহূর্তের মধ্যে ঘামিয়ে দিবে। আপনি দিনে ৩ বার এই অনুশীলনটি করতে পারেন এবং মাসের শেষে আপনার শরীরে একটি পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

৯. টিভি দেখার সময় প্রশিক্ষণ

এখন, আপনাদের মধ্যে কতজন আসলেই এটি সম্পর্কে শুনেছেন? অনেকেই বলে টিভি দেখার সময় ব্যায়াম করা নিজেকে অলসতা এবং শ্রমবিমুখতা থেকে দূরে রাখার একটি দুর্দান্ত উপায়। সারাদিন হাঁটা এবং ব্যায়ামের পর টিভি দেখার সময় বিজ্ঞাপন বিরতিতে আপনি যদি কিছুক্ষণ লাফাতে থাকেন, বুকডাউন এবং শরীর প্রসারণ করতে থাকেন তাহলে এটি আপনার কোন ক্ষতি করবে না। বরং এটি আপনি যা খেয়েছেন তা হজম করতে সাহায্য করবে! এই কৌশলটি আপনার ওজন এক মাসের মধ্যে ৩ কেজি কমাতে অবশ্যই সাহায্য করবে।

১০. প্রোটিন

ওজন হ্রাস করা সবসময়ই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার সাথে সম্পর্কিত। অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে আপনি ওজন হ্রাস করতে পারবেন না। যদি আপনি আপনার শরীরে কোন পরিবর্তন দেখতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার খাদ্যাভাস এবং জীবনধারা পরিবর্তন করতে হবে।

আপনার সম্পূর্ণ খাদ্যতালিকাটি এমন সব খাবার দিয়ে সাজান যেগুলোতে অনেক প্রোটিন আছে। অর্থাৎ, আপনার খাদ্যতালিকাতে ফল, শাক-সবজি, ডাল, ডিম এবং চর্বিহীন মাংস এগুলো রাখতে পারেন। ফলের তালিকা থেকে আম এবং কলা দূরে রাখুন কারন এগুলো সামান্য হলেও ওজন বাড়িয়ে দেয়। আপনি দিনে একটির বেশি কলা কখনই খাবেন না।

আলু অথবা মিষ্টি আলু খাবেন না কারন এরাও আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। দিনে একটির বেশি ডিম খাবেন না এবং গরুর মাংস এবং ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এগুলোর থেকে মুরগির মাংস অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যকর। আপনার খাদ্য তালিকাতে ডালও খুব ভালো সংযোজন হতে পারে।

১১. অস্বাস্থ্যকর খাবার নয়

পরবর্তী যে জিনিষটি আপনাকে করতে হবে তা হল আপনার তালিকা থেকে অস্বাস্থ্যকর/ভাজা-পোড়া খাবার বাদ দিতে হবে। আপনাকে সাদা খাবার থকে দূরে থাকতে হবে, যেমন নুডলস, পাস্তা এবং সাদা পাউরুটি। এগুলোর পরিবর্তে আপনি বাদামি পাউরুটি বা মাল্টি-গ্রেইন পাউরুটি খেতে পারেন। মাঝে মাঝে গমের পাস্তা খাওয়াও ভালো। রাস্তার খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারন এগুলো নিম্ন মানের তেল দিয়ে রান্না করা হয়।

১২. চিনিকে না বলুন

ওজন কমানোর জন্য আপনাকে আরেকটি জিনিষ অবশ্যই করতে হবে আর তা হল চিনি থেকে দূরে থাকতে হবে। এটি সম্পূর্ণভাবে না তো না-ই। কেক থেকে শুরু করে মাফিন, বিস্কুট এবং আইস্ক্রিম, এদের সব গুলোই আপনার শত্রু। এই খাবার গুলো আপনার মেটাবলিজম কমিয়ে ফেলে এবং আপনার ওজন হ্রাস করা বন্ধ করে দেয়। যেহেতু তারা প্রচুর ক্যালোরিপূর্ণ, তাই এরা কিছুদিনের মধ্যেই আপনাকে অলস এবং মোটা বানিয়ে দিবে। বেশিরভাগ গবেষক বলেছেন, ডায়েট থেকে বিরত থাকার দিনেও মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকাই ভালো। যতদিন পর্যন্ত আপনি ওজন হ্রাস করার পরিকল্পনা করবেন, মনে রাখবেন আপনার খাদ্য তালিকা থেকে অবশ্যই মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে!

১৩. গ্রিন টি

গবেষকদের মতে, গ্রিন টি পান করা ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে। যদি আপনি দিনে ৩-৪ কাপ গ্রিন টি পান করেন, তাহলে আপনি আপনার মেটাবলিজম বৃদ্ধি  করতে পারবেন এবং অতিরিক্ত ওজন গুলো দ্রুত ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন। ব্যায়াম করার সময় এটা আপনাকে আরো ক্যালোরি ঝরাতে সাহায্য করবে। এবং আপনাকে এই পানীয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে না কারন এর কোন ক্যালোরি নেই। এটি পানির মতই নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। সকালে এক কাপ, সন্ধ্যায় হালকা নাস্তার সাথে আরেক কাপ এবং সবশেষে রাতের খাবারের পর আরেক কাপ পান করুন।

১৪. পানি পান করুন

যদি আপনি এক মাসের মধ্যে আপনার ওজন দ্রুত কমাতে চান তাহলে প্রতিদিন ২ লিটার পানি পান করুন। এটি আপনার শরীর থেকে সকল দূষিত পদার্থ বের করে দিবে এবং আপনার শরীর সবসময় বিশুদ্ধ রাখবে। এমনকি যখনই আপনি খেতে বসবেন প্রতিবারই ছোট বোতলের এক বোতল পানি পান করবেন। এটি আসলে আপনাকে কম খেতে সাহায্য করবে। খাওয়া শেষে আরো এক গ্লাস পানি পান করুন। এইভাবে আপনি খাবার থেকে অনেক কম কম ক্যালোরি গ্রহন করবেন এবং অবশেষে আপনার ওজন আরো কমতে থাকবে।

১৫. সুষম খাবার

কোন খাবার খেলে আপনি এক মাসের মধ্যে ওজন কমাতে পারবেন, এই ব্যাপারটি নিয়ে আপনি কি খুব বেশি চিন্তিত? আমি আপনাকে একটি ছোট পরামর্শ দিচ্ছিঃ

প্রাতরাশঃ এক কাপ দুধ, ফল, দুইটি রুটির সাথে ডিম এবং গ্রিন টি।

মধ্যাহ্নভোজঃ ভাত, দুই পিস মাংস/মাছ, এক বাটি সবজি।

সান্ধ্যভোজনঃ ঘরে তৈরি মুরগির স্যুপ/ভাতের সাথে মুরগি/ভাতের সাথে সবজি এবং ডাল।

নাস্তাঃ চিনি মুক্ত বিস্কুট/টোস্ট।

১৬. টিভি দেখার সময় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন

টিভি দেখার সময় যতটা সম্ভব চেষ্টা করবেন না খেতে। কারন এই সময় আপনি যতটুকু খেতে পারেন তার থেকেও বেশি খেয়ে ফেলেবেন। এমনকি যখন আপনি খাবেন তখন খাওয়ার দিকেই মনোযোগ দিন এবং আস্তে আস্তে খান। খাবারের প্রতিটি গ্রাস উপভোগ করুন। এটি প্রকৃতপক্ষে আপনাকে ঠিকমত খেতে সাহায্য করবে এবং ওজন কমানোর জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু খেতে সাহায্য করবে।

১৭. সপ্তাহে একবার ডায়েট থেকে বিরত থাকুন

আপনি সপ্তাহে একবার ডায়েট করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। আর এটি শুক্রবার করার চেষ্টা করুন। এই দিনে আপনি যে খাবারটি খেতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন তা খেতে পারবেন। যাই হোক, অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা থেকে বিরত থাকবেন অথবা সারাদিন ধরে খেয়ে যাওয়া থেকে দূরে থাকবেন। এর জন্য একবারের ভোজই যথেষ্ট।

১৮. ব্যায়াম করার আগে কফি পান করুন

ব্যায়াম করার ১ ঘন্টা আগে আপনি এক কাপ গরম কফি পান করতে পারেন। অবশ্যই এটি চিনিবিহীন হতে হবে। যে সকল মানুষ এই কৌশলটি অনুসরণ করেছে তারা সকলেই এক মাসের মধ্যে নিজেদের শরীরে অনেক গুলো পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে।

১৯. আরো একটু বেশি ঘুমান

ওজন কমানোর সবচেয়ে বড় গোপন বিষয়টি হল ভালো ঘুম। আপনি যদি প্রতিদিন ৮ ঘন্টার মত ঘুমান তাহলে আবশ্যই আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরানোর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। কারন শরীর তখনি খুব ভালো কাজ করে যখন বিশ্রামে থাকে। যদি আপনি নিয়মমাফিক বিশ্রাম নেন তাহলে ওজন হ্রাস করা আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসবে।

২০. কোন প্রকার কঠোর খাদ্যতালিকা অনুসরণ করবেন না

ওজন কমানোর সময় কখনোই কোন কঠোর খাদ্যতালিকা অনুসরণ করবেন না। সবসময় মনে রাখবেন, আপনাকে সুস্থ থাকতে হবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার জন্য শরীর সুরক্ষিত রাখতে হবে। যদি আপনি এই কথাটি মনে রাখেন তাহলে আপনি এত দ্রুত আপনার লক্ষ্য গুলো অর্জন করতে পারবেন যা আপনার কল্পনার বাহিরে।

২১. নিজেকে দৃঢ়বদ্ধ এবং অনুপ্রাণিত রাখুন

ওজন কমানোর সর্বশেষ এবং গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হলো অনুপ্রেরণা এবং দৃঢ়তা। আপনি যদি উপরের পরামর্শগুলো অনুসরণ করতে পারেন এবং আপনার লক্ষ্যে মনোযোগী হতে পারেন, তাহলে কেউ আপনাকে ওজন কমানো থেকে দূরে সরাতে পারবে না।

২২. সপ্তাহে একবার নিজের ইচ্ছামত খান

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার মানে এই না যে আপনি নিজেকে সুস্বাদু খাবার থেকে বঞ্চিত করবেন। আপনার সকল ইচ্ছাপূরণে নিজেকে নিজে বাধা দিবেন না। সপ্তাহে একবার আপনার পছন্দের খাবার গুলো খান যেগুল আপনি খুব উপভোগ করেন। কিন্তু যতটুকু খাবার আপনার পেট গ্রহন করতে পারে ঠিক ততটুকুই খাবেন। অতিরিক্ত খাওয়া বর্জন করুন এবং আপনার শরীর সক্রিয়, স্বাস্থ্যকর এবং মেটাবলিজম স্তর উন্নত রাখতে আপনি প্রতিদিন ৪৫ মিনিট শারিরিক পরিশ্রম করছেন তা নিশ্চিত করুন।

সত্যিকার অর্থে আপনার কতটুকু খাওয়া উচিত?


আমাদের ওজন তখনি বৃদ্ধি পায় যখন আমরা আমাদের দেহের প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাই। আপনার প্রতিদিন কতটুকু ক্যালোরি লাগবে তা জানতে আপনাকে একজন ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে। ডাক্তার আপনার দৈনিক রুটিন, কাজের ধরণ, দৈনন্দিন জীবনধারা অভ্যাস, খাদ্য অভ্যাস, ভ্রমণ অবস্থা এবং শারিরিক কার্যকলাপ দেখে আপনার প্রতিদিনের ক্যালোরির চাহিদাগুলির মূল্যায়ন করতে সহায়তা করবে। আপনার কতটুকু ক্যালোরি লাগবে তা জানার পর দ্বিতীয় ধাপ হল- আপনি কি খাবেন তা পরিকল্পনা করা।

আপনি যদি আপনার ক্যালোরির সীমা অতিক্রম করতে না চান তাহলে আপনাকে যতটা সম্ভব ঘরের খাবার খেতে হবে। সকল প্রকার প্যাকেটজাত খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং ফাস্ট ফুড পরিত্যাগ করতে হবে। বাহিরে খাওয়া এবং বাহিরের প্যাকেটজাত খাবার খাওয়াকে একেবারেই না! বলতে হবে। এছাড়াও, যখন ঘরে রান্না করবেন তখন কম তেল ব্যবহার করবেন।

আপনার ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য নিম্নে একটি তালিকা দেওয়া হলো যা আপনাকে অনুসরন করতে হবেঃ

১. ওজন কমানোর  জন্য কাঁচা শাক-সবজি, ফল এবং সালাদ খাওয়া সবচেয়ে ভাল।

২. অলিভ অয়েল এবং সয়াবিন তেল রান্না করার জন্য খুব ভাল।

৩. চর্বি অপসারণের জন্য দুধ দুইবার জ্বাল দিবে্ন।

৪. মিষ্টি খাওয়া পরিহার করুন, ঘরে বানালেও তা পরিহার করুন।

৫. নাস্তা খাওয়ার সময় হারবাল চা মধু দিয়ে পান করুন।

সবশেষে, সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন কিন্তু পাতলা নয়। আপনার গড়ন যেমনই হক না কেন আপনি সুন্দর। যখন আপনি ভিতর থেকে সুস্থ অনুভব করা শুরু করবেন, তখনই অল্প একটু মেদ আপনাকে প্রভাবিত করবে না। এবং যদি আপনি আপনার দেহ আরো সুগঠিত করতে চান তাহলে আপনি এগিয়ে যান এবং অনুশীলন শুরু করুন।

Filed Under: Weight Loss (ওয়েট লস)

  • « Go to Previous Page
  • Page 1
  • Interim pages omitted …
  • Page 6
  • Page 7
  • Page 8

Primary Sidebar

সাম্প্রতিক লেখা

১৬টি সেরা খাবার সকালবেলার দৌড়ের পর খাওয়ার জন্য – পোস্ট-রান রিকভারি পুষ্টি

ওজন কমাতে সেরা ২০টি ডিটক্স স্মুদি: উপাদান, প্রস্তুতি ও উপকারিতা

সহজে হজম হয় এমন ১৬টি হালকা খাবারের রেসিপি

Low FODMAP Diet: ৩ ধাপের পরিকল্পনা ও কোন খাবার খাবেন, কোনটা এড়িয়ে চলবেন

প্যালিও ডায়েট: উপকারিতা, ঝুঁকি ও ৭ দিনের খাবার পরিকল্পনা

বিভাগ সমূহ

  • Fashion
  • HAIR CARE (চুলের যত্ন)
    • Basic Hair Care (বেসিক হেয়ার কেয়ার)
    • Dandruff (খুশকি)
    • Dry Hair Care (শুকনো হেয়ার কেয়ার)
    • Hair Care Ideas
    • Hair Fall ( চুল পড়া)
    • Hair Growth ( চুল বৃদ্ধি)
    • Hair Treatment (চুল চিকিৎসা)
    • Oily Hair Care ( তৈলাক্ত চুলের যত্ন)
  • HEALTH & WELLNESS (স্বাস্থ্য ও সুস্থতা)
    • Diet Tips
    • Fitness
    • Healthy Food
    • Home Remedies
    • Ingredients and Uses
    • Nutrition (পুষ্টি)
    • Weight Gain
    • Weight Loss (ওয়েট লস)
  • Lifestyle (জীবনযাপন )
  • MAKEUP (মেকআপ)
    • Bridal Makeup (ব্রাইডাল মেকআপ)
    • Eye Makeup (চোখের সাজসজ্জা)
    • Lip Make up (লিপ আপ করুন)
  • SKIN CARE (ত্বকের যত্ন)
    • Acne
    • Anti Ageing
    • Beauty Secrets
    • Dry Skin
    • Face Care Tips
    • Face Packs and Masks
    • Glowing skin
    • Homemade Tips
    • Oily Skin
    • Skin Care Ideas
    • Skin Care Problems
    • Sunscreen
  • Top 10's

Copyright © 2025 · RUP KOTHON · All rights reserved ®