• Skip to primary navigation
  • Skip to main content
  • Skip to primary sidebar

রূপকথন

Healthier Lifestyljhhe Choices

  • Facebook
  • Home
  • Shop
  • Blog
    • মেকআপ
      • ব্রাইডাল মেকআপ
      • সেলিব্রিটি মেকআপ
      • চোখের সাজসজ্জা
      • মুখের রূপসজ্জা
      • লিপ মেকআপ
      • মেকআপের ধারণা
      • মেহেদী ডিজাইন
      • নখের ডিজাইন
    • চুলের যত্ন
    • ত্বকের যত্ন
    • চুল স্টাইল
    • স্বাস্থ্য ও সুখ
      • ফিটনেস
      • স্বাস্থ্যকর খাবার
      • ওজন বৃদ্ধি
      • ওজন কমানো
      • যোগ ব্যায়াম
      • ডায়েট টিপস
      • আয়ুর্বেদ
  • Contact Us
Home » ভিটামিন সি এর ২৫ টি অসাধারণ গুণ যা আমাদের চুল, স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য খুব উপকারি

ভিটামিন সি এর ২৫ টি অসাধারণ গুণ যা আমাদের চুল, স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য খুব উপকারি

by Mohona

ভিটামিন সি – হ্যা, আপনার খুব ভালো করেই জানেন এর কথা। এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা এই ভিটামিন সম্পর্কে জানে না। এবং এই ভিটামিন এত বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় যে এর ঘাটতি হওয়ার তেমন কোনো সম্ভবনাই নেই। কারণ, প্রায় বেশির ভাগ ফলেই রয়েছে ভিটামিন সি। বিশেষ করে টক জাতীয় ফলে এই ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। আর টক ফল খেতে কে না ভালোবাসে।

কিন্তু আমারা অনেকেই জানি না যে এই ভিটামিন আমাদের কতটা উপকার করতে পারে এবং কি কি দিতে পারে! সেজন্যই আজকে আমাদের এই পোস্ট।

আজ আমরা জানবোঃ

  • ভিটামিন সি কি এবং কি কাজ করে?
  • ভিটামিন সি এর ঘাটতি কি এবং এর লক্ষণগুলো কি কি?
  • ভিটামিন সি এর স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো কি কি?
  • ত্বকের জন্য ভিটামিন সি এর উপকারিতা কি?
  • ভিটামিন সি চুলের কি কি উপকার করে?
  • কোন কোন ফলে বা খাবার থেকে কি পরিমাণ ভিটামিন সি পাবেন?
  • ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্টস কি?
  • কিভাবে ভিটামিন সি খাবেন?
  • প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ ভিটামিন সি খাবেন?
  • ভিটামিন সি খাবার সময় কি কোন সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?
  • কোনো ঔষধের সাথে কিভিটামিন সি এর সম্ভাব্য পাশ্য প্রক্রিয়া আছে?

ভিটামিন সি কি এবং কি কি কাজ করে?

ভিটামিন সি এল-অ্যাসকরবিক অ্যাসিড হিসেবেও পরিচিত, ভিটামিন সি একটি জল-দ্রবণীয় ভিটামিন যা কিছু খাবারে প্রাকৃতিকভাবেই মিশ্রিত থাকে এবং কিছু খাবারে যোগ করা হয়। এবং অন্যান্য প্রাণীর মত, মানুষ এই ভিটামিন পরিহার করতে পারে না – আর তাই এটি একটি অপরিহার্য খাদ্য উপাদান।

ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা দেহের অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। এটি দেহে নন-হিম আয়রন শোসন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংযোজক টিস্যু তৈরিতে ও ক্ষত নিরাময়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ভিটামিন সি ত্বক ও দেহে ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখে।

দিনে ৩০ থেকে ৪০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করুন, এতে ভিটামিনের ৭০ থেকে ৯০% শোষিত হয়। যদি ভিটামিন গ্রহণের পরিমাণ দিনে ১ গ্রাম ছাড়িয়ে যায়, তাহলে ৫০% এর নিচে নেমে আসে। আর আপনি যদি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেন তাহলে দৈনিক 500 মিলিগ্রাম গ্রহণ করা সর্বোত্তম।

ভিটামিন সি এর বিভিন্ন রূপ রয়েছে –

  1. অ্যাসকরবিক অ্যাসিড – ভিটামিন সি এর বিশুদ্ধতম রূপ।
  2. সোডিয়াম অ্যাসকরবেট – এই ভিটামিনের ১০০০ মিলিগ্রামে ১১১ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে।
  3. ক্যালসিয়াম অ্যাসকরবেট – এই ভিটামিনের ১০০০ মিলিগ্রামে ৯০ থেকে ১১০ গ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
  4. ম্যাগনেসিয়াম অ্যাসকরবেট – দৈনিক ৩৫০ মিলিগ্রামের বেশি ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করা যাবে না।
  5. পটাশিয়াম অ্যাসকরবেট – দৈনিক ১১ গ্রামের বেশি পটাশিয়াম গ্রহণ করা যাবে না।
  6. ম্যাংগানিজ অ্যাসকরবেট – দৈনিক ১১ মিলিগ্রামের বেশি ম্যাংগানিজ গ্রহণ করা যাবে না।
  7. জিংক অ্যাসকরবেট – দৈনিক ৪০ মিলিগ্রামের বেশি জিংক গ্রহণ যাবে না।
  8. মলিবডেনাম অ্যাসকরবেট – প্রতিদিন ২ গ্রামের বেশি মলিবডেনাম গ্রহণ করা যাবে না।
  9. ক্রোমিয়াম অ্যাসকরবেট – ক্রোমিয়াম প্রতিদিন সর্বাধিক কতটুকু পরিমাণে গ্রহণ করা যাবে তা এখনো জানা যায়নি। কিন্তু আর.ডি.এ. অনুসারে বয়স্ক এবং কিশোরদের ৫০ ও ২০০ মাইক্রোগ্রামের মধ্যে গ্রহণ করা উচিত।

সোডিয়াম অ্যাসকরব্যাট এবং ক্যালসিয়াম অ্যাসকরব্যাট ব্যতীত, ভিটামিন সি এর অন্য সকল রূপগুলি অন্যান্য খনিজ অ্যাসকরবেট অথবা অন্য খনিজের সাথে মিশ্রিত অবস্থায় পাওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।

এখন আমরা কথা বলব ভিটামিন সি এর ঘাটতি সম্পর্কে –

ভিটামিন সি এর ঘাটতি কি এবং এর লক্ষণগুলো কি কি?

যেমনটি সুস্পষ্ট ভাবে বলা যায় যে, ভিটামিন সি এর অভাব তখনি ঘটে, যখন ভিটামিন সি দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হয় না। আর দেহে ভিটামিন সি এর অপর্যাপ্ততার লক্ষণগুলো হলোঃ

  • মাড়ি ফোলা বা রক্তপাত হওয়া
  • মাড়িতে ব্যাথা অনুভব হওয়া (জিংজিভাইটিসও বলা হয়)
  • যেকোন ক্ষত নিরাময়ে সময় লাগা
  • শুষ্ক ও আগা ফাটা চুল
  • রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বক
  • নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ
  • দূর্বল ইমিউনিটি
  • হাড়ের সংযোগ স্থানে ফুলে যাওয়া এবং ব্যাথা করা।
  • ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা

পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি এর গ্রহণ করা কেবলমাত্র এই লক্ষণগুলি প্রতিরোধ করে না, পাশাপাশি অন্যান্য আরো অনেক সুবিধাও প্রদান করে – যা আমরা এখন দেখতে পাবো – ভিটামিন সি এর অনেকগুলো কার্যকারিতা।

ভিটামিন সি এর স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো কি কি?

১. হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করে

আমেরিকার এক গবেষণা অনুসারে, ভিটামিন সি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা পালন করে। একাধিক অধ্যয়নগুলি প্রমাণ করেছে যে, রক্তে উচ্চ হারে ভিটামিন সি হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাসের সাথে সংযুক্ত।

আরো গবেষণায় বলা হয়েছে যে ভিটামিন সি আপনার হার্টের জন্য ব্যায়ামের মতই অনেক ভালো। ভিটামিন সি এর নিয়মিত ডোজ এন্ডোথিলিন-১ নামক প্রোটিনের ক্রিয়াকলাপে বাঁধা দিতে পারে, যেই প্রোটিন ছোট রক্তনালীগুলোকে সংকুচিত করে ফেলে – এবং এটি শেষ পর্যন্ত হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়। এই ভিটামিন আপনার রক্তচাপকে কমাতে পারে এবং আপনার ধমনীগুলোকে ফ্লেকজিবল রাখে।

স্ট্রেস এর কারণে ধমণীর বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যাও ভিটামিন সি সমাধান করে এমনটি খুঁজে পাওয়া গেছে – এটি রক্তের প্রবাহ বাড়ায় এবং, যার ফলে রক্তে অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ নিরামিষ খাবার রক্তের কোলেস্টেরলকে ১% কমাতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ২% কমিয়ে দেয়।

ভিটামিন সি এর সাপ্লিমেন্টও সিরামের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এমনটি জানা গেছে, এবং এটি করোনারি হার্ট ডিজিজ এড়াতে সহায়তা করতে পারে।

২. রক্তচাপের স্তর নিয়ন্ত্রণ করে

জনস হপকিন্স মেডিসিনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভিটামিন সি এর অনেক বেশি ডোজ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি মূত্রবর্ধক হিসাবে কাজ করে এবং এর ফলে কিডনিগুলো শরীর থেকে আরো বেশি সোডিয়াম ও পানি বের করে দেয় – এটি রক্তনালীর দেয়ালগুলোকে চাপমুক্ত করে দেয়।

৩. ইমিউনিটি বাড়ায়

ভিটামিন সি এর অভাব হলে দেহে নির্দিষ্ট জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়। একটি গবেষণা অনুসারে, ভিটামিন সি জীবের শক্তি ও সুরক্ষা বাড়িয়ে দিয়ে ইমিউনিটি সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে।

ইমিউনিটি সিস্টেম রক্ষা করার পাশাপাশি, ভিটামিন সি বিভিন্ন এ্লার্জির তীব্রতা হ্রাস করে এবং ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আরো জানা গেছে ক্ষততে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভিটামিন সি এর উচ্চ মাত্রার ডোজ নিয়ে দ্রুত ক্ষত সারাতে পারে।

এবং সাধারণ সর্দি-কাশির বেলায় যদিও আরো গবেষণা করা প্রয়োজন, তারপরেও জানা গেছে ভিটামিন সি ঠান্ডার সময়কাল কমাতে সাহায্য করে। আমরা এখনো জানি না যে এই ভিটামিন সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করতে পারে কিনা – কিন্তু এটি নিশ্চিতভাবে সর্দি-কাশির সময়কাল কমায়। ভিটামিন সি এজমা রোগের সম্ভাবনামূলক চিকিৎসা হতে পারে। তবে এই বিষয়ে আরও গবেষণা করা দরকার।

৪. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে

অসংখ্য ল্যাবরেটরির গবেষণায় দেখা গেছে যে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি মূত্রথলী, যকৃৎ, মলাশয় এবং অন্যান্য নানা ধরণের ক্যান্সারের কোষগুলির বৃদ্ধি হতে দেয় না। উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি ক্যান্সারের চিকিৎসা করতেও সহায়তা করে।

অস্ত্রোপচারের উপযোগী নয় এমন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর দেহের শিরা দিয়ে প্রবেশ করানো যায় এমন ধরণের ভিটামিন সি দেওয়ার ফলে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই টিউমারের আকার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা যায়। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভিটামিন সি আক্রমণাত্মক কোলোরেক্টাল ক্যান্সারকে দমিয়ে রাখে।

৫. হাড়ের বাতের চিকিতসায় সহায়তা করে

আর্থ্রাইটিস ফাউন্ডেশনের মতে ভিটামিন সি কিছু ধরণের বাত প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। কিন্তু এর বেশি প্রয়োগ অনেক সময় আরো খারাপ রূপ নিতে পারে – আর তাই ভিটামিন সি প্রয়োগে ভারসাম্য রাখতে হবে। ভিটামিন সি এর সঠিক ডোজ প্রদাহ হয় এমন বাত প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং হাড়ের বাত সারিয়ে হাড়ের জয়েন্টগুলো স্বাস্থ্যকর রাখে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে যাদের দেহে ভিটামিন সি এর মাত্রা অনেক কম তাদের প্রদাহজনিত বাত হওয়ার সম্ভাবনা তিনগুণ বেশি। তবে যেমনটি আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি, ডোজ সঠিক হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেহে ভিটামিন সি এর ডোজ বেশি হলে বাতের ব্যাথা আরো ভয়াবহ হতে পারে।

৬. চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করে

বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণ আরো বলেছে যে ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে চোখের ছানি পরার ঝুঁকি কমে যায়। এই ভিটামিন অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির সঙ্গে গ্রহণ করলে বয়স সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয় ও দৃষ্টিশক্তির কমে যাওয়া রোধ করতে পারে। এমনকি যারা উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি গ্রহণ করে তাদের চোখে ছানি পরার ঝুঁকি ২০% কম। ভিটামিন সি আপনার রেটিনার কোষগুলোর সঠিক কার্যকারিতা বাড়াতে পারে। এই ভিটামিন আপনার চোখের রক্তনালী গুলির স্বাস্থ্য ঠিক রাখে।

ভিটামিন সি চোখের ভিটামিন ই পুনরায় ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে, যা চোখের স্বাস্থ্য আরো উন্নত করে। নিয়মিত ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে ইউভাইটিসের (চোখের মাঝের স্তরে প্রদাহ, যাকে ইউভিয়াও বলা হয়) চিকিৎসায় সহায়তা করতে পারে।

৭. স্বাস্থ্যকর মাড়ি বজায় রাখে

ভিটামিন সি এর ঘাটতির ফলে পিরিয়ডোন্টাল রোগ হতে পারে, যা জিঞ্জিভাইটিসের মারাত্মক রূপ (মাড়ির রোগ)। এর কারণ হলো ভিটামিন সি এর অভাব সংযোজক টিস্যুগুলো দূর্বল করে দিতে পারে এবং কৈশিক নাড়ীগুলো সহজে ভেঙ্গে ফেলতে পারে। আসলে, ভিটামিন সি এর অভাবের প্রাথমিক লক্ষণ হলো মাড়ির রক্তপাত। এবং এই এবং ভিটামিন দাঁত এবং মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি।

৮. এলার্জির চিকিৎসা করতে সহায়তা করে

এটি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে যখন আপনার শরীর হিস্টামিন নিঃসরণ করে, এটি একটি বায়োকেমিক্যাল। ভিটামিন সি হিস্টামিনের নিঃসরণ কমিয়ে ফেলে, এতে এলার্জি প্রতিরোধ হয়।

আরেকটি জাপানি গবেষণা অনুসারে, অটোইমিউন রোগ এবং এই সম্পর্কিত এলার্জিগুলি ভিটামিন সি দ্বারাও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। খড় জ্বর (এলার্জি রাইনাইটিস নামেও পরিচিত) নিরাময়ে ভিটামিন সি ও সহায়তা করতে পারে।

৯. শুকনো মুখ থেকে মুক্তি দেয়

কিছু উৎস বলে যে, ভিটামিন সি শুষ্কতা প্রতিরোধ এবং শুষ্কতা দূরও করতে পারে। যদিও, এই বিষয়ে সীমিত প্রমাণ রয়েছে।

১০. ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে

প্রতিদিন সাপ্লিমেন্টারি ভিটামিন সি (১০০০ মিগ্রা) গ্রহণ করলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে ভালো ফল পাওয়া যায়। ভিটামিন সি আপনার রক্তনালীগুলির ডায়াবেটিসজনিত ক্ষতিও রোধ করতে পারে।

জাপানের আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে ভিটামিন সি গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কারণ, এই ভিটামিন দেহে ইনসুলিন প্রক্রিয়া জাগিয়ে তুলতে পারে, যার ফলে ডায়াবেটিস চিকিৎসায় সুবিধা হয়। ভিটামিন সি কে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতেও দেখা গেছে।

১১. ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা করে

এলার্জির চিকিৎসায় উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি খুবই কার্যকরী। অতীতে এই ভিটামিন সি হাম, চুলকানী, মাম এবং ভাইরাসঘটিত নিউমোনিয়ার চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হত। এখানে অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে ভিটামিন সি এর কার্যকারিতা দেখা যায়। এছাড়াও, যেহেতু ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, তাই এটি ক্ষতিকারক ফ্রি র‍্যাডিকালগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসায় সহায়তা করে।

মনোনিউক্লিওসিসের চিকিৎসা (অস্বাভাবিক অনুপাতে সাদা রক্তকণিকা, যা গ্রন্থিময় জ্বর সৃষ্টি করে) করতে উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি এর ডোজ কার্যকরী বলে পাওয়া গিয়েছে। এটি ফ্রি র‍্যাডিকালগুলোর বিরুদ্ধেও লড়াই করে (যা ইতিমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে) যা মনোনিউক্লিওসিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

১২. স্কারভি প্রতিরোধ করে

যদিও এই রোগটি এখন বিশ্বে বিরল, স্কার্ভি এমন লোকগুলোকে আক্রমণ করে যারা পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করে না। এবং এই ভিটামিন উচ্চ মাত্রায় খাওয়ার পরেও এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিরল।

ভিটামিন সি ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার হয়ে আসছে। দীর্ঘ যাত্রায় ভ্রমণরত নাবিকরা তাদের ভোজন সামগ্রীতে লেবুর রস রাখত শুধুমাত্র স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করার জন্য। দৈনিক ১০ গ্রাম ভিটামিন সি দিয়ে স্কার্ভি প্রতিরোধ করা যায়।

১৩. স্ট্রোকে বাঁধা দেয়

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে পারে, বিশেষ করে হেমোরাজিক স্ট্রোক। ভিটামিন সি রক্তচাপ হ্রাস করে স্ট্রোকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। দেহে ভিটামিন সি এর স্বল্পমাত্রার কারণে স্বাভাবিক মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ভিটামিন সি আয়রনের সাথে যুক্ত হয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়াও, একটি সমীক্ষা অনুসারে, রক্তে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি থাকা লোকেরা তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি ৪২% হ্রাস করতে পারে।

১৪. আপনার মন–মেজাজ ঠিক করে

হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের উপর একটি গবেষণা করে প্রমাণিত হয়েছে যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করা মেজাজকে উন্নত করতে পারে। ভিটামিন সি এর মন মেজাজ উন্নত করার ক্ষমতা রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ কমাতে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট ভালো কাজ করে।

১৫. ওজন কমাতে সাহায্য করে

পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন সি এর গ্রহণ ব্যায়ামের সময় শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। সুতরাং, ভিটামিন সি এর অভাব ওজন ও মেদ হ্রাসে বাঁধা দিতে পারে। ভিটামিন সি বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি করে, ফলে ওজন হ্রাসে সহায়তা করতে পারে।

১৬. শক্তি বাড়ায়

ভিটামিন সি আপনাকে ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে এবং ক্লান্তি দূর করে। সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ভিটামিন সি গ্রহণ স্কুল ফুটবলারদের প্রশিক্ষণও প্রায় ১০% সহজ করে দিয়েছে এবং ৫৫% ক্লান্তি হ্রাস করেছে।

আরেকটি কোরিয়ান গবেষনায় জানা যায়, ভিটামিন স্বাস্থ্যকর কর্মীদের মধ্যে কাজ সম্পর্কিত ক্লান্তি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে।

ত্বকের জন্য ভিটামিন সি এর উপকারিতা কি?

ভিটামিন সি এর উপকারিতা আমাদের ত্বকের জন্যও কার্যকর। উদাহরণস্বরূপ, ভিটামিন সি খাওয়ার পাশাপাশি আপনি এটি ত্বকেও ব্যবহার করতে পারেন (সিরামের মত) এবং উপকারিতা নিতে পারেন। সিরাম কোলাজেনকে উদ্দীপিত করে এবং ত্বককে অন্যান্য ক্ষতিকর কারণ যেমন দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে।

১৭. জ্বালা–পোড়া ও ক্ষত নিরাময় করে

ভিটামিন সি ক্ষত নিরাময়ে ভালো কাজ করে এবং গুরুতর পোড়া রোগীদের ভেন্টিলেশনের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করতে পারে। ভিটামিন সি তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পোড়া ক্ষতগুলি নিরাময়ে সহায়তা করে।

উচ্চ মাত্রার ভিটামিন সি পুড়ে যাওয়ার পরেও কৈশিক ফুটো কমাতে সাহায্য করে। এবং যেহেতু ভিটামিন সি নতুন টিস্যু বৃদ্ধি এবং নতুন ত্বক হতে সাহায্য করে, এটি পোড়া ও ক্ষত নিরাময়ে চমৎকারভাবে ভালো কাজ করে।

১৮. রোদে পোড়া থেকে বাঁচায়

ভিটামিন সি এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্যগুলি কোলাজেন সংশ্লেষণে ভূমিকা রাখে এবং সানবার্ন নিরাময়ে সহায়তা করে। ভিটামিন সি গ্রহণ করা অথবা সাময়িক ভিটামিন সি তেলের প্রয়োগ করে এই পরিস্থিতি উন্নত করতে পারে। তবে এটি জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, ভিটামিন সি কেবলমাত্র সান্সক্রিনের সাথে একসাথে বা পাশাপাশি ব্যবহার করা যেতে পারে, সান্সক্রিন বাদ দিয়ে ব্যবহার করা যাবে না। ভিটামিন সি ইউভিবি-প্রেরিত এরিথিমা (ত্বকের উপরিভাগে লালচেভাব) এর প্রভাব হ্রাস করতে দেখা গেছে।

১৯. একজিমার চিকিৎসায় সহায়তা করে

একজিমা সারানোর একটি ভালো উপায় হলো ভিটামিন সি ও জিংকের সংমিশ্রণ – প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১০০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং ১৫ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ একজিমার সম্ভাব্য নিরাময় হিসেবে কাজ করে।

২০. কোলাজেন উৎপাদন

হাইড্রোক্সিপ্রোলাইন ও হাইড্রোক্সিলিসিন উৎপাদনের জন্য ভিটামিন সি একটি প্রয়োজনীয় উপাদান, উভয়ই কোলাজেন দ্বারা উৎপাদিত মলিকিউলস গুলো একত্রিত বা আবদ্ধ করতে প্রয়োজনীয়। আর এগুলো আপনার ত্বককে সঠিকভাবে গড়ে তুলে ও ত্বকের টোন ঠিক রাখে। কোলাজেন ত্বকের গভীর থেকে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে তুলে এবং বলিরেখা ও বার্ধক্যের লক্ষণগুলো হ্রাস করে।

২১. ত্বকের বিবর্ণতা থেকে রক্ষা করে

ভিটামিন সি ডিএনএ কে ফোটোকেমিক্যালের বিক্রিয়া থেকে রক্ষা করে যা টিউমার, ত্বকের বিবর্ণতা এবং বিভিন্ন ধরণের ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এটি পাইরাইমিডিন ডাইমারস উৎপাদনে বাঁধা দেয় যেগুলো মানুষের মেলানোমাস হওয়ার প্রাথমিক কারণ। এটি ত্বকের গাঢ়ো বিবর্ণতা যেমন ত্বকের ছোট দাগ ও বয়সের ছাপ দূর করে ত্বককে আরো যৌবন এবং আরো মসৃণ করে তুলে।

২২. ত্বকের গঠন ঠিক রাখে

কোলাজেন দেহে রক্তনালীগুলির গঠন করতে সাহায্য করে। ত্বকের নিচের স্তরে থাকা ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলি অক্সিজেন ও অন্যান্য পুষ্টি বহন করে যা ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখে। পর্যাপ্ত পুষ্টিবিহীন ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে উঠে। ভিটামিন সি যুক্ত ক্রিমগুলো বাহ্যিক ত্বকের উপস্থিতি ও গঠন উন্নত করে।

ভিটামিন সি ইলাস্টিনের গঠন বাড়ায় যা ত্বকের সেলগুলোকে পুরু করে, নিরাময় করে ও প্রতিরক্ষা করে। ত্বকের পুরু প্রভাবটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে, ত্বককে আরো উজ্জ্বল ও কোমল করে তুলে।

ভিটামিন সি চুলের কি কি উপকার করে?

অবাক করা হলেও সত্যি যে, আপনার চুলের জন্যও ভিটামিন সি এর অনেক উপকারিতা রয়েছে।

২৩. চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়

আমাদের চুলের বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলে এমন সব চুলের সমস্যাগুলির বেশিরভাগ কারণ হয়ত ভিটামিন সি কম গ্রহণ করার ফলে হয়। ভিটামিন সি এর অভাব চুল শুষ্ক করে ও চুলের আগা ফেঁটে যায়। চুলের নিয়মিত বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি এর অভাব মোটেও অনুকূল না বরং এর ফলে আস্তে আস্তে আপনি আপনার চুল হারাতে শুরু করবেন।

আমরা যে খাদ্য গ্রহণ করি তখন আমাদের শরীর শক্তি উৎপাদনের জন্য ওই খাদ্য গ্লুকোজে পরিণত করে, আর তখন ফ্রি র‍্যাডিকালগুলো প্রাকৃতিকভাবেই গঠিত হয়। এই ফ্রি র‍্যাডিকালগুলো আমাদের চুলকে দুর্বল, ভঙ্গুর এবং পাতলা করে ক্ষতি করে যা চুলের বৃদ্ধিতে বাঁধা দেয়।

ভিটামিন সি এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ফ্রি র‍্যাডিকালগুলোর গঠন হ্রাস করে এবং আমাদের দেহের উপর এগুলোর প্রভাব হ্রাস করে। ফ্রি র‍্যাডিকালের বিরুদ্ধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সুরক্ষা পেতে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রাখা অপরিহার্য। যারা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করে তারা স্বাস্থ্যকর, মজবুত ও ঘন চুলের অধিকারী হয়।

২৪. খুশকি ধ্বংস করে

আমাদের চুলের ফলিকলগুলি খুশকি, শুষ্ক ও আঁশ উঠা ত্বকের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এটি চুলের ফলিকলগুলির ক্ষতি করতে পারে এবং তাছাড়াও চুলের বৃদ্ধিতে বাঁধা দেয়। ভিটামিন সি মাথার ত্বকের ব্যাক্টেরিয়ার সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি খুশকি দূর করে, মৃত ফলিকলগুলো থেকে মুক্তি দেয় এবং নতুন চুলের বৃদ্ধিতে উৎসাহ দেয়। এর অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি নিরাময় করতে সহায়তা করে।

২৫. চুলের অকালে পেঁকে যাওয়া প্রতিরোধ করে

ভিটামিন সি শুধুমাত্র চুল ঝরে পড়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে না, চুলের অসময়ে পেঁকে যাওয়া প্রতিরোধ করে চুলের প্রাকৃতিক রঙ ধরে রাখতেও সহায়তা করে। তবে, এই নিয়ে খুব কম গবেষণা পাওয়া গিয়েছে।

ভিটামিন সি এর উপকারিতা সীমাহীন, তাই নয় কি? তবে এই ভিটামিন পাওয়ার উৎসই যদি না জানেন তাহলে কিভাবে হবে?

কোন কোন ফলে বা খাবার থেকে কি পরিমাণ ভিটামিন সি পাবেন?

আপনার রান্নাঘরেই এমন অনেক খাদ্যসামগ্রী রয়েছে যা ভিটামিন সি এর খুব ভালো উৎস। স্বল্প বাজেটের মধ্যেই এইসব খাবার আপনার হাতের নাগালে পেয়ে যাবেন, আর এগুলো প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এগুলোর মধ্যে কিছু উদাহরণ হলো

মরিচ (১ কাপ মরিচে ১০৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি),

বেল পেপার (১২০ থেকে ১৯০ মিলিগ্রাম),

ব্রোকলি (১৩২ মিলিগ্রাম),

পেঁপে (৮৮.৩ মিলিগ্রাম),

স্ট্রবেরী (৮৪.৭ মিলিগ্রাম),

ফুলকপি (১২৭.৭ মিলিগ্রাম),

আম (১২২.৩ মিলিগ্রাম),

আনারস (৭৮.৯ মিলিগ্রাম),

লেবু (১১২.৪ মিলিগ্রাম),

কমলা (৯৫.৮ মিলিগ্রাম)

ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্টস কি?

ভিটামিন সি এর সাপ্লিমেন্টগুলোতে সাধারণত এই ভিটামিন অ্যাসকরবিক এসিড আকারে থাকে। কয়েকটি জনপ্রিয় ভিটামিন সি ক্যাপসুল বা ট্যাবলেটগুলির মধ্যে পোটেন সি (Poten Cee), সিশাইন (Cshine), ভিসিএনই (Vcne), রিডক্সোন (Redoxon) এবং সেলিন ৫০০ (Celin 500) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সাপ্লিমেন্টগুলো ত্বকের (বিশেষ করে মুখের জন্য) জন্য এবং পুরো শরীরের জন্যই উপকারী। এমনকি একটি ভিটামিন সি ইনজেকশন (তরল ভিটামিন সি) বা অন্যভাবে বললে, শিরা দ্বারা প্রবেশ করানো তরল ভিটামিন সি একই রকম উপকারিতা দিতে পারে। খাদ্য হিসেবে ভিটামিন সি থেকেও ইনজেকশন দিয়ে দেহে প্রবেশ করানো ভিটামিন সি এর ডোজ অনেক বেশি এবং এটি ত্বক, ইমিউনি সিস্টেম ও ক্যান্সার রোগীদের জন্য পরিপূরক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ভিটামিন সি এর আরো রূপ রয়েছে যেমন ভিটামিন সি ড্রপ, ক্রিস্টালস অথবা পাউডার (মুখের জন্য)। এমনকি এখন অনেকে ত্বকের জন্য ভিটামিন সি ক্রিম ব্যবহার করেন।

অনেক কিছুই তো বলা হলো। কিন্তু, ভিটামিন সি কিভাবে গ্রহণ করতে হয় তাও আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।

কিভাবে ভিটামিন সি খাবেন?

ভিটামিন সি গ্রহণের সর্বোত্তম উপায় হলো আপনার ডায়েটে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা। বেশিরভাগ ফল ও শাক-সবজিতে এই ভিটামিন রয়েছে – সুতরাং আপনি নিয়মিত ফল ও সবজির সালাদ খেতে পারেন এবং নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। এমনকি এক গ্লাস জুস বা স্মুদিও এই ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করবে।

কিন্তু সালাদ তৈরি করার জন্য আপনার হাতে যদি যথেষ্ট সময় না থাকে তাহলে আপনি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। ডোজের উপর নির্ভর করে আপনি আপনার খাবারের সাথে দিনে দুই থেকে তিন বার ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন। আপনি এটি খালি পেটেও গ্রহণ করতে পারেন, কারণ কিছু গবেষণা বলে খালি পেতে ভিটামিন সি আরো ভালো শোষিত হয় এবং ভালো কাজ করে। আপনার জন্য সঠিক ডোজ নির্ধারণ করতে আপনার ডাক্তার অথবা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করে নিন।

ওষুধের ক্ষেত্রে নিয়মিত উদ্ভাবনকে আমরা এখন লিপোসোমাল ভিটামিন সি বলে থাকি। লিপোসোমাল প্রযুক্তি পুষ্টিগুলির শোষণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। লিপোসোমাল ভিটামিন সি ওটিসি (OTC) সাপ্লিমেন্টের তুলনায় অধিক বায়োঅ্যাবিলিটির সুবিধা দেয়। পেটে ফসফোলিপিডগুলো পানির সাথে মিশ্রিত হওয়ার সময় লাইপোজোম রূপ ধারণ করে। এই লাইপোজোমগুলো শোষণের হার বাড়ায়। এবং বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতে এটি ভিটামিন সি এর সেরা রুপ।

প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ ভিটামিন সি খাবেন?

১৮ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের জন্য প্রতিদিন ভিটামিন সি গ্রহণের পরিমাণ ৯০ মিলিগ্রাম। ১৮ বছরের বেশি বয়সের মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি ৭৫ মিলিগ্রাম। এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ানো মহিলাদের জন্য এটি যথাক্রমে ৮৫ মিলিগ্রাম এবং ১২০ মিলিগ্রাম। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, যারা ধূমপান করে তাদের নিয়মিত খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত আরো ৩৫ মিলিগ্রাম যুক্ত করতে হবে।

শিশুদের জন্য (০ থেকে ১২ মাস বয়স), মায়ের বুকের দুধে যে পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে তাতেই হবে। ১ থেকে ৩ বছর বয়সী বাচ্চাদের জন্য, ভিটামিন সি গ্রহণের পরিমাণ ১৫ মিলিগ্রাম; ৪ থেকে ৮ বছর বয়স ২৫ মিলিগ্রাম; ৯ থেকে ১৩ বছর বয়স ৪৫ মিলিগ্রাম।

কিশোর-কিশোরীদের জন্য (১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী), ছেলেদের জন্য ৭৫ মিলিগ্রাম এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ৬০ মিলিগ্রাম।

যদিও এই পরিমাণগুলো আরডিএ এর মত অনুসারে, কিন্তু ডাক্তার আপনার চিকিৎসার জন্য আরো বেশি পরিমাণের ডোজ দিতে পারে।

সবকিছু যদি ভালোও হয়, তারপরও যেকোন কিছুতেই সতর্কতা অবলম্বন করা ভালো। সুতরাং, ভিটামিন সি এর ক্ষেত্রেও একই।

ভিটামিন সি খাবার সময় কি কোন সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?

ভিটামিন সি এর কারণে পেটে ব্যাথা, দাঁতের ক্ষয়, বুকের ব্যাথা, অজ্ঞান হওয়া, ডায়রিয়া, অনিদ্রা, মাথা ব্যাথা, বুক জ্বালা-পোড়া করা, বমি বমি ভাব এবং খাদ্যনালী ফুলে যেতে পারে। এরকম কোনো লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে এটি গ্রহণ বন্ধ করে দিন এবং আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি এর গ্রহণে বিষক্রিয়া হতে পারে, রক্ত জমাট বাঁধা, কিডনিতে পাথর এবং পাচনতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, G6PD ঘাটতি আছে এমন লোকদের জন্য এই সমস্যা পুরোপুরি সত্য, এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ এবং সংক্রমণের প্রতিক্রিয়াতে লোহিত রক্তকণিকা ভেঙ্গে যায়।

গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় ভিটামিন সি স্বাভাবিক পরিমাণে নিরাপদ হিসাবে বিবেচিত হয় – কিন্তু প্রস্তাবিত ডোজের চেয়ে বেশি ব্যবহার করার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করুন।

এছাড়াও…

কোনো ঔষধের সাথে কি ভিটামিন সি এর সম্ভাব্য পাশ্য প্রক্রিয়া আছে?

নিম্নলিখিত কিছু ঔষধের তালিকা রয়েছে যা ভিটামিন সি (সাপ্লিমেন্ট) এর সাথে বিক্রিয়া করতে পারে –

  • অ্যাসপিরিন (Aspirin)
  • এ্যাসিটামিনোফেন (Acetaminophen)
  • বারবিটুরেটস (Barbiturates)
  • কেমোথেরাপির ঔষধ (Chemotherapy drugs)
  • ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভস (Oral contraceptives)
  • প্রোটিজ ইনহিবিটরস (Protease inhibitors)
  • ওয়ারফারিন (Warfarin)
  • অ্যান্টাসিডস (Antacids)
  • কিছু অ্যান্টি-সাইকোটিক ড্রাগ, যেমন ফ্লাফিনাজিন (Fluphenazine)

যদিও ভিটামিন সি এর ঘাটতি বিরল, তার অর্থ এই নয় যে আপনি এটিকে অবহেলা করবেন। আপনি কেবলমাত্র এর উপকারিতা গুলোই দেখেছেন, তাই নয় কি? সুতরাং, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করুন। সুস্থ থাকুন, সতেজ থাকুন এবং ভালো থাকুন।

Facebook Comments

Filed Under: Nutrition (পুষ্টি)

About Mohona

পড়তে ও লিখতে ভালবাসি, নিজে জেনে অন্যকে জানাতে ভালোবাসি।

Primary Sidebar

সাম্প্রতিক লেখা

১৬টি সেরা খাবার সকালবেলার দৌড়ের পর খাওয়ার জন্য – পোস্ট-রান রিকভারি পুষ্টি

ওজন কমাতে সেরা ২০টি ডিটক্স স্মুদি: উপাদান, প্রস্তুতি ও উপকারিতা

সহজে হজম হয় এমন ১৬টি হালকা খাবারের রেসিপি

Low FODMAP Diet: ৩ ধাপের পরিকল্পনা ও কোন খাবার খাবেন, কোনটা এড়িয়ে চলবেন

প্যালিও ডায়েট: উপকারিতা, ঝুঁকি ও ৭ দিনের খাবার পরিকল্পনা

বিভাগ সমূহ

  • Fashion
  • HAIR CARE (চুলের যত্ন)
    • Basic Hair Care (বেসিক হেয়ার কেয়ার)
    • Dandruff (খুশকি)
    • Dry Hair Care (শুকনো হেয়ার কেয়ার)
    • Hair Care Ideas
    • Hair Fall ( চুল পড়া)
    • Hair Growth ( চুল বৃদ্ধি)
    • Hair Treatment (চুল চিকিৎসা)
    • Oily Hair Care ( তৈলাক্ত চুলের যত্ন)
  • HEALTH & WELLNESS (স্বাস্থ্য ও সুস্থতা)
    • Diet Tips
    • Fitness
    • Healthy Food
    • Home Remedies
    • Ingredients and Uses
    • Nutrition (পুষ্টি)
    • Weight Gain
    • Weight Loss (ওয়েট লস)
  • Lifestyle (জীবনযাপন )
  • MAKEUP (মেকআপ)
    • Bridal Makeup (ব্রাইডাল মেকআপ)
    • Eye Makeup (চোখের সাজসজ্জা)
    • Lip Make up (লিপ আপ করুন)
  • SKIN CARE (ত্বকের যত্ন)
    • Acne
    • Anti Ageing
    • Beauty Secrets
    • Dry Skin
    • Face Care Tips
    • Face Packs and Masks
    • Glowing skin
    • Homemade Tips
    • Oily Skin
    • Skin Care Ideas
    • Skin Care Problems
    • Sunscreen
  • Top 10's

Copyright © 2025 · RUP KOTHON · All rights reserved ®