আপনি হয়ত খুব ভালো করে জানেন বীটরুট কতটা উপকারী সবজি!
কিন্তু আপনি কি কখনো কল্পনা করেছেন যে এই বীটরুট ফেইস প্যাক হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে?
যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে এখনি জেনে নিন! কারণ, একটি বীটরুটের ফেইস প্যাক আপনার ত্বকের খুব ভালো উপকার করতে পারে!
বীটরুটের অনেক স্বাস্থ্য সম্মত উপকারীতা আছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে কাঁচা বীটরুট ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
কাঁচা বীটরুট ব্যায়ামের জন্য খুব ভালো সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কাজ করে। তারা পেশীতে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করে, অতি মাত্রার ব্যায়ামের তীব্রতা সহ্য করতে সাহায্য করে।
বীটরুটে শক্তিশালী এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এ্যান্টি-ইনফ্লেমেটোরি এবং ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তারা গেঁটো বাত এবং গাল ব্লেডারের চিকিৎসার জন্য পরিচিত। এতে হোমোসিটেইনি (Homocycteine) রয়েছে, এটি একটি যৌগ যা পাকস্থলির অ্যাসিড পুনরুৎপাদন করে এবং কোলেস্টেরল হ্রাস করে।
বীটরুট চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। অনেক সংস্কৃতিতে এটি ফেইস মাস্ক হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি আপনার ত্বকে গোলাপী আভা সৃষ্টি করে। যদিও উজ্জ্বল ত্বকের মানুষের গায়ে ফলাফল বেশি দৃশ্যমান হয়, প্রতিদিন বীটরুটের মাস্ক ব্যবহারে এটি আপনাকে মুখের দাগ এবং গর্ত কমিয়ে নিখুঁত ত্বক দিতে সাহায্য করে।
তাই, এই লিখাটি পরার পর আপনি বীটরুটের ফেইস প্যাক ব্যবহার করা থেকে নিজেকে আটকাতে পারবেন না। তাই এখনি পড়ুন!!!
কিভাবে ঘরেই বীটরুটের ফেইস প্যাক বানাবেন?
ঘরেই বীটরুটের ফেইস প্যাক বানানোর জন্য এই ২ টি পদ্ধতির যে কোন একটি অনুসরণ করুন।
১. গরম পানি দিয়ে বীটরুট ফেইস প্যাক
উপকরণ
- বীটরুটের রস (৫-৬ চা চামচ)
- গরম পানি
- তুলা
- গামছা অথবা ন্যাপকিন
- সুতির তোয়ালে
প্রক্রিয়া
- গরম পানি দিয়ে পুরো মুখ ধুয়ে নিন এবং শুকাতে দিন। গরম পানি মুখের ময়লা ও ধুলাবালি মুছে যেতে সাহায্য করবে।
- কিছু বীটরুট কেটে জুস করে নিন এবং একটি তুলার বল জুসে ডুবিয়ে নিন।
- বীটরুটের রসে ভিজানো তুলার বলটি আপনার মুখে লাগান। আপনার চোখে এবং মুখের ভিতর যাতে না লাগে সেই দিকে সতর্ক থাকবেন, কারণ আপনি নিশ্চই গোলাপি দাঁত চাইবেন না। সাবধানে প্রয়োজনমত আপনার ত্বক ভিজাবেন, কিন্তু আপনার মুখ থেকে এর রস যাতে গড়িয়ে না পরে সেই দিকে লক্ষ্য রাখবেন।
- তুলো দিয়ে আবার আরেক পড়ত রস মুখে লাগানোর আগে প্রথমবার লাগানো রস শুকাতে দিন। দ্বিতীয় স্তর নিশ্চিত করে যে আপনি পুরো মুখ বীটরুট রস দিয়ে ঢেকে ফেলেছেন।
- ১৫-২০ মিনিট শুকাতে দিন।
- মুখে হাত দিবেন না কারণ এতে লাগানো রস মুছে যাবে এবং এমনকি আপনার হাতেও দাগ লেগে যাবে। ২০ মিনিট পরেই এটা ধুয়ে ফেলতে ভুলবেন না কারণ এটা দাগ ছড়াতে পারে।
- একটি গামছা বা ন্যাপকিন গরম পানিতে ডুবিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। ভিজানো গামছাটি দিয়ে বৃত্তাকারভাবে রসগুলো মুছে ফেলুন।
- একটি তোয়ালে দিয়ে আপনার মুখ মুছে নিন।
- আপনি আপনার মুখে তাৎক্ষণিক একটি গোলাপী আভা লক্ষ্য করবেন। সুন্দর ত্বক পাওয়ার জন্য এই ফেইস প্যাকটি মাসে ২ বার ব্যবহার করুন।
২. দই এবং লেবু দিয়ে বীটরুট ফেইস প্যাক
উপকরণ
- বীটরুট রস (২ চা চামচ)
- দই (১ চা চামচ)
- লেবু (১ চা চামচ)
- মুলতানি মাটি/বেসন (২ টেবিল চামচ)
প্রক্রিয়া
- একটি ছোট পাত্রে কাঁটা বীটরুট থেকে রস চিপে বের করে নিন।
- একটি পাত্রে বীটরুটের রসের সাথে ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি/বেসন, দই, লেবুর রস যোগ করুন।
- উপকরণগুলো একসাথে মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন।
- আপনার মুখে সমানভাবে পেস্টটি লাগান এবং ১৫ মিনিট রেখে দিন।
- কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- আপনার মুখ মুছে ফেলুন। আপনি লক্ষ্য করবেন আপনার মুখে তাত্ক্ষণিক গোলাপী আভা ছড়িয়েছে এবং আপনার ত্বক উজ্জ্বল হয়েছে। নিখুঁত ত্বক পাওয়ার জন্য ৫-৭ বার এই ফেইস প্যাকটি ব্যবহার করুন।
তাহলে আর দেরি কেন? উজ্জ্বল গোলাপী আভাযুক্ত নিখুঁত ত্বক পাওয়ার জন্য আজকে থেকেই বীটরুটের এই ফেইস প্যাকগুলো ব্যবহার শুরু করুন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.